ঘুমালে কি ওজন কমে?

মডেল: নিল
ছবি: প্রথম আলো

রাতে ঘুমের আগে ওজন মাপলেন। ঠিকঠাক ঘুমিয়ে উঠলেন সকালে। এবার দেখা গেল ওজন সামান্য কমে গিয়েছে। দারুণ এক ঘুমের পর এমন ঘটনায় মনটা আরও ফুরফুরে হয়ে যাবে নিশ্চয়ই? এমনটা হওয়া কিন্তু অস্বাভাবিক নয় মোটেও, বরং এটাই স্বাভাবিক। এর পেছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটি জেনে নেওয়া যাক আজ।

কী ঘটে ঘুমের সময়?

স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় ঘুমের সময় কিছুটা পানি বেরিয়ে যায় শরীর থেকে। ঘাম ও নিশ্বাসের মাধ্যমে বের হয় এই পানি। তবে ঘুমের সময়কার শরীর থেকে কতটা পানি বেরোবে এই দুই প্রক্রিয়ায়, তা নির্ভর করে তার বিপাকক্রিয়ার হার কেমন, সেটার ওপর। ঘুমালে শ্বাসপ্রশ্বাস ভারী হয়ে আসে, তবে সবার শ্বাসপ্রশ্বাস যে একইভাবে চলে না, এ তো আমরা প্রত্যেকেই অনুভব করতে পারি। ঘাম হওয়ার বিষয়টাও তাই ব্যক্তিভেদে ভিন্ন। অবশ্য কেবল ঘুমের সময়কার এই সামান্য পরিবর্তনই নয়, ওজন নিয়ন্ত্রণে সামগ্রিকভাবেই এক বিরাট প্রভাব ফেলে ঘুম।

কেন প্রয়োজন ভালো ঘুম?

ঘুম ঠিকঠাক না হলে খাদ্যাভ্যাস বদলে যায়। ঘুম কম হলে মনমেজাজ বিগড়ে থাকে। ফুরফুরে হওয়ার জন্য খেয়াল খুশিমতো খাবার খেতে দেখা যায় অনেককেই। সেই খাবার থেকে যোগ হতে থাকে বাড়তি ক্যালরি। তাই ওজনও কমে না। অন্যদিকে ঘুম ভালো হলে মন ভালো করার জন্য আর খাওয়াদাওয়ায় বদল আনতে হয় না। ফলে বাড়তি ক্যালরি গ্রহণের ঝুঁকিও কমে। গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, যাঁদের ঘুমের সময় শ্বাসের ব্যাঘাতজনিত সমস্যা হয়, তাঁরা এই সমস্যাটি কাটিয়ে উঠতে পারলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে সাফল্য পান।

কতটা ঘুমাবেন?

রোজ সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। দুপুরে ছোটখাটো ঘুম বা ন্যাপ নেওয়ার অভ্যাস খারাপ নয়। তবে ঘুমের মূল সময় হওয়া উচিত রাত। সারা দিনে শারীরিক পরিশ্রমও চাই ঠিকঠাক। তাহলে একদিকে যেমন ক্যালরি পোড়ানো হবে, অন্যদিকে শরীর ক্লান্তও হবে। ফলে ভালো ঘুমও হবে। কতটা ঘুমাচ্ছেন, এটা যেমন জরুরি, তেমনি ঘুমের গুণগত মান ভালো হচ্ছে কি না, সেটা নিশ্চিত করাও জরুরি।

আরও পড়ুন

ঠিকঠাক ঘুমের জন্য চাই সুঅভ্যাস

ঘুমের জন্য চাই সঠিক পরিবেশ। ঘরের আলো নিভিয়ে দিন। টেলিভিশন, কম্পিউটার, রেডিও ও শব্দের অন্যান্য উৎস বন্ধ রাখুন। বিছানায় খাওয়াদাওয়া করবেন না। ঘুমের সময় এবং ঘুমের আগে মুঠোফোন ও অন্যান্য গ্যাজেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। সম্ভব হলে এসব গ্যাজেট হাতের কাছে রাখবেন না। ঘুমের সময় অন্তত ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা ভালো। অ্যালার্ম দিতে হলে কাজে লাগান অ্যালার্ম ঘড়ি।

রোজ একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার ও ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করুন।

সন্ধ্যার পর ভারী খাবার না খাওয়াই ভালো। চা-কফির পাট চুকিয়ে ফেলুন বিকেলের মধ্যেই।

সূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে