২৯ টাকার কার্ডে মিলবে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা

পোশাক শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে এমন কার্ড বাজারে এনেছে মনের বন্ধু
ছবি: সংগৃহীত

পোশাক শ্রমিকদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যসেবা আরও সাশ্রয়ী ও সুলভ করার লক্ষ্যে নতুন পরিষেবা ‘টপ-আপ কার্ড’ নিয়ে এসেছে মনের বন্ধু। ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্ডগুলো উন্মোচন করেন অতিথিরা। কম আয়ের, বিশেষ করে পোশাক শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে এই কার্ডগুলো বাজারে এনেছে মনের বন্ধু। নিজেকে সুস্থ রাখতে, মনের যত্ন নিতে কার্ড কিনে সহজেই কাউন্সেলরদের সেবা নিতে পারবেন তাঁরা। ২৯ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকার মধ্যেই কার্ডগুলোয় মিলবে নানা রকম সেবা। গ্রাহক তাঁর সুবিধামতো কার্ড কিনে সেবা নিতে পারবেন। কেউ চাইলে অন্য একজনের সঙ্গে শেয়ারেও কার্ডগুলো ব্যবহার করতে পারবেন।

টপ–আপ কার্ড সেবা চালুর অনুষ্ঠানে অতিথিরা
ছবি: সংগৃহীত

টপ–আপ কার্ড উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ভাইস চ্যান্সেলর ড. রুবানা হক। তিনি বক্তব্যের শুরুতেই লন্ডন শহরে দেখা এক ভয়াবহ ভাস্কর্যের কথা জানান। প্রজেক্ট ৮৪ নামের এ ভাস্কর্যটি আত্মহত্যা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক এক ভাস্কর্য। ভাস্কর্যটি দেখার পর নিজের ভেতর হাহাকার ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি আরও সচেতন হওয়ার যে তাড়না তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, সেটাও জানালেন। রুবানা হক বলেন, ‘নিজের অনুভূতির ব্যাপারে আমাদের আরও সচেতন হওয়া উচিত। কেননা, অনুভূতি লুকানোর প্রবণতা অনেক সময় পারিপার্শ্বিক আরও অনেক সমস্যাকে পুঞ্জীভূত করে ফেলে।’ বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্যখাতের উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান ও গবেষণার অপ্রতুলতা নিয়েও তিনি আক্ষেপ করেন।

৯৯ টাকা মূল্যের আরেকটি কার্ড
ছবি: সংগৃহীত

মনের বন্ধুর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদা শিরোপা বলেন, ‘পোশাক শ্রমিকদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে কাজ করছি। তাঁদের জন্য টপ-আপ কার্ড প্রবর্তনের মাধ্যমে একটি নতুন মাইলফলক অর্জন করল মনের বন্ধু। এই টপ-আপ কার্ড শ্রমিকদের আরও সহজে সেবা নিতে সাহায্য করবে বলে আশা করি। ভবিষ্যতে আমাদের ইচ্ছা আছে পুরো পরিষেবাটা আরও সহজলভ্য করার।’

চলতি বছরের শুরুর দিকে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষদের উন্নয়নে অবদান রাখার কারণে মনের বন্ধু মর্যাদাপূর্ণ টমি হিলফিগার ফ্যাশন ফ্রন্টিয়ার চ্যালেঞ্জ ২০২২ পুরস্কার জিতেছিল, যা সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে মনের বন্ধুকে নতুনভাবে উদ্দীপ্ত করে। এরই মধ্যে টপ-আপ কার্ডটি বিভিন্ন আরএমজি প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ শুরু করেছে। যেখান থেকে কর্মীরা চাইলে ইচ্ছেমতো সংগ্রহ করতে পারবেন।

একই অনুষ্ঠানে মনের বন্ধুর ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ‘নেক্সট মনের বন্ধু-আমিই সমাধান’ এর প্রথম ব্যাচের প্রতিনিধিদের সম্মাননাও প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ, জেটরো বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দো এবং এটুআই প্রজেক্টের সংস্কৃতি ও যোগাযোগ বিষয়ের প্রধান পূরবী মতিনসহ অনেকে।