মেট্রোরেলে চাকরি পেয়ে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন সেই ওসমান
ওসমান গনিকে নিয়ে প্রথম আলোয় খবরটি ছাপা হয়েছিল গত বছরের ২২ ডিসেম্বর।
মনে করিয়ে দিই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশ নেবেন বলে টাকা জমিয়েছিলেন পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র ওসমান গনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সমাবর্তনে অংশ নেওয়া নয়, বাবার স্বপ্ন পূরণ করাই তাঁর কাছে অগ্রাধিকার পেয়েছিল। ওসমানের দিনমজুর বাবা বুলু আকন্দ কোনো দিন ঢাকা দেখেননি। খুব ইচ্ছা ছিল, অনেক পরিশ্রম করে ছেলেকে যেই স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন, সেই ক্যাম্পাস একদিন ঘুরে দেখবেন।
জমানো টাকায় সমাবর্তনের ফি না দিয়ে শেষ পর্যন্ত বাবাকে বগুড়া থেকে ঢাকায় নিয়ে এসেছিলেন ওসমান। বন্ধুদের কাছ থেকে সমাবর্তনের গাউন ধার করে বাবার সঙ্গে ছবি তুলেছেন। আর বাপ-ছেলে মিলে ঘুরে দেখেছেন সংসদ ভবন, লালবাগ কেল্লা, চিড়িয়াখানা, বিমানবন্দর, বুয়েট ক্যাম্পাস, হাইকোর্ট ভবনসহ ঢাকার নানা দর্শনীয় স্থান।
‘ছেলের সঙ্গে বাবার প্রথম ঢাকা দেখা’ শিরোনামের লেখাটি প্রথম আলোর লাখো পাঠকের পাশাপাশি নাড়া দিয়েছিল তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদকেও। সে সময় প্রথম আলোর বগুড়া প্রতিনিধির মাধ্যমে তথ্যমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব ইমরান হোসাইন শরীফ যোগাযোগ করেন ওসমান গনির সঙ্গে। তাঁকে আমন্ত্রণ জানান মন্ত্রীর বাসভবনে। ওসমানের সঙ্গে দেখা করে সে সময় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ প্রায় আধা ঘণ্টা আলাপ করেছিলেন, অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন। উপহার ও আর্থিক অনুদানও তুলে দিয়েছিলেন তাঁর হাতে।
সম্প্রতি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের অধীনে ট্রেন অপারেটর পদে চাকরি পেয়েছেন ওসমান গনি। চাকরি পেয়ে আজ মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি।
ওসমান বলেন, ‘প্রথম আলোতে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সারা দেশ থেকেই ভীষণ সাড়া পেয়েছিলাম। মন্ত্রী মহোদয় যখন ডেকে কথা বললেন, তখন আরও অনুপ্রাণিত হয়েছি। গত মাসেই আমি বগুড়ার একটা কলেজে যোগ দিয়েছিলাম। তবে মেট্রোরেলে চাকরি পেয়ে স্বপ্ন পূরণ হলো। আমার মা-বাবাও ভীষণ খুশি হয়েছেন। মেট্রোরেল বাংলাদেশের মানুষের একটা স্বপ্নের প্রকল্প। এত বড় একটা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারাই বিরাট ব্যাপার। মন্ত্রী মহোদয় আমাকে সহায়তা করেছেন, তাই কৃতজ্ঞতা জানাতেই দেখা করতে এলাম।’
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ওসমানকে বলেন, ‘তুমি যে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছ, সে জন্য ধন্যবাদ। অনেকের পাশেই দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। কিন্তু সবাই মনে রাখে না।’