‘খেলাটা আম্মু পছন্দ করত না’

ডব্লিউবিসি এশিয়ান সিলভার টাইটেল চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন তিনি
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর বরেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী উৎসব আহমেদ। পারিবারিকভাবেই বক্সিংয়ের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ। খালাতো ভাই ও মামারা বক্সার ছিলেন। মূলত তাঁদের মাধ্যমেই বক্সিংয়ে আগ্রহ। তবে বড় অনুপ্রেরণাটা এসেছে মামা জুয়েল আহমেদকে দেখে। উৎসব বলেন, ‘২০১০ সালের সাফ গেমসে স্বর্ণপদক জেতে মামা। তখন দেখেছি, মামাকে নিয়ে সবার কত উন্মাদনা। সবাই তাকে বরণ করে, সম্মান করে, ফুলের তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জানায়। তখন থেকেই মনের মধ্যে ইচ্ছা, বক্সার হব, মামার মতো নাম করব।’ উৎসবের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়েছে। মাত্র ২০ বছর বয়সে ডব্লিউবিসি এশিয়ান সিলভার টাইটেল চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন তিনি।

পথচলাটা সহজ ছিল না। শুরুতেই মায়ের নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হয়েছে। উৎসব বলেন, ‘এই খেলাটা আম্মু পছন্দ করত না। মারামারি সে একদমই পছন্দ করে না। তাই ছোটবেলায় বাসা থেকে সমর্থন পাইনি। পরে যখন দেখল আমার প্রবল আগ্রহ, যখন একটা ভালো পর্যায়ে গেলাম, আর কোনো বাধা আসেনি।’

মা–ও এখন ছেলের সমর্থক
ছবি: সংগৃহীত

সাত বছর বয়স থেকে বক্সিংয়ের সঙ্গে আছেন এই শিক্ষার্থী। ইতিমধ্যে সাফল্যের খাতায় যুক্ত হয়েছে অনেক অর্জন। ২০২২ সালের বঙ্গবন্ধু বিজয় দিবস বক্সিং প্রতিযোগিতা, প্রথম বঙ্গবন্ধু কাপ বক্সিং প্রতিযোগিতা ও ৫৪তম স্বাধীনতা দিবস বক্সিং প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক পেয়েছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ জুডো গেমস, বাংলাদেশ জাতীয় বক্সিং প্রতিযোগিতায় রৌপ্য জিতেছেন। উৎসব জানান, ২০২২ সাল থেকে তিনি পেশাদার ম্যাচে অংশ নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত আটটি ম্যাচ খেলেছেন, আটটিতেই জয়ী হয়েছেন।

সর্বশেষ গত ২৫ মে বেক্সিমকো এক্সেল ৩.০ বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপের ৫২ কেজি ওজন শ্রেণিতে অংশ নেন উৎসব। সেখানে ৩২ বছর বয়সী ভারতীয় খেলোয়াড় মাজাহার হোসেনকে হারিয়ে ডব্লিউবিসি এশিয়ান সিলভার টাইটেল জিতে নেন তিনি। এ সময় চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ডব্লিউবিসি এশিয়ান সিলভার টাইটেল চ্যাম্পিয়নশিপ বেল্ট ও এক লাখ টাকা পুরস্কার পান এই অ্যাথলেট।

এমন সাফল্যের পর উৎসব আহমেদ বলেন, ‘এর আগে বাংলাদেশের কেউ ডব্লিউবিসি এশিয়া সিলভার টাইটেল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেনি। সেখানে আমি প্রথমবার অংশ নিয়েই বেল্ট পেলাম। সেদিক থেকে অনেক খুশি লাগছে। এটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’