আইইউবিতে চাকরির মেলা

মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেছেন শিক্ষার্থীরা
ছবি: আইইউবির ফেসবুক থেকে নেওয়া

বর্তমান ও স্নাতকোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ক্যারিয়ার অ্যান্ড নেটওয়ার্কিং ডে ২০২৪’ শীর্ষক চাকরির মেলা আয়োজন করেছিল ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ (আইইউবি)। শিক্ষাজীবন থেকে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের পথটা মসৃণ করতেই এমন উদ্যোগ। ১২ জুন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকার বসুন্ধরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা।

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড, বসুন্ধরা গ্রুপ, ব্র্যাক, হা–মীম গ্রুপ, নিটোল নিলয় গ্রুপ, প্রথম আলোসহ ১০০–র বেশি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেয়। সব স্টলেই ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য নানা সুযোগ ও চাকরির খোঁজখবর। কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের স্টলও চোখে পড়ল, যেখানে ভিড় করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। বন্ধু, সহপাঠীরা মিলে, কেউবা একাই স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেছেন, চাকরিদাতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সিভিও জমা দিয়েছেন অনেকে।

মেলাতেই সদ্য স্নাতক সৌমিক আদ্রিবের সঙ্গে কথা হলো। নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে লেখাপড়া শেষ করা এই তরুণের প্রত্যাশা, মেলা থেকেই হয়তো মিলবে তাঁর কাঙ্ক্ষিত চাকরি। বলছিলেন, ‘প্রতিবছর হলেও এবারই প্রথম সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছি। যেহেতু স্নাতক শেষ, আপাতত চাকরি না পেলেও ইন্টার্নশিপ বেশি দরকার। সেটার ওপরই তাই জোর দিচ্ছি বেশি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টলে সিভি জমা দিয়েছি৷ আশা করি, ডাক পাব।’ তিনি মনে করেন, মেলায় সিভি জমা দেওয়া ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীই কাজের সুযোগ পেয়ে যান।

স্টল ঘুরে দেখা গেল কম্পিউটারবিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসনসংক্রান্ত চাকরির চাহিদা তুলনামূলক বেশি। কেউ প্রযুক্তি খাতে কাজ করতে চান, কেউ চান হিসাবরক্ষণ বা মার্কেটিংয়ের চাকরি। অনেক শিক্ষার্থী লেখাপড়া শেষের আগেই টাকা উপার্জন করে নিজের খরচ চালাতে উন্মুখ। খণ্ডকালীন চাকরির দিকে ছিল তাঁদের চোখ। নির্দিষ্ট ক্রেডিট সম্পন্ন করা অনেকে ইন্টার্নশিপও খুঁজছিলেন।

এ মেলা নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাতেমা জাহান, ‘আমার তো এখনো স্নাতক শেষ হয়নি, তাই মেলায় খুব বেশি সুযোগ আমার জন্য নেই। তবে এত কোম্পানির অংশগ্রহণ দেখে ভালো লাগছে। স্টল ঘুরে ওদের সম্পর্কে জানলাম। পরে যখন চাকরির আবেদন করব, একটা ভালো ধারণা থাকবে যে কোথায় কোন ধরনের চাকরির সুযোগ থাকে। আমার পরিচিত কিছু সহপাঠী অবশ্য পার্টটাইম চাকরির জন্য সিভি জমা দিয়েছে।’

আরও পড়ুন

মেলায় প্রথম আলোরও ছিল সরব উপস্থিতি। অনেকে প্রদায়ক হওয়ার জন্য ফরম পূরণ করেছেন। প্রথম আলোয় চাকরির আবেদনের উপায়ও জেনে নিয়েছেন কেউ কেউ।

অ্যালামনাইদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা ছাড়াও শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার নিয়ে কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অফিস অব ক্যারিয়ার গাইডেন্স, প্লেসমেন্ট ও অ্যালামনাই রিলেশনস’ (সিজিপিওএআর) বিভাগ। অফিসের সহকারী পরিচালক ফারজানা হাফিজের সঙ্গে মেলার নানা দিক নিয়ে কথা হলো। তাঁর বক্তব্য, ‘স্নাতকদের কর্মসংস্থান নিয়ে আমাদের ভাবতেই হয়। সেটা মাথায় রেখেই এই বার্ষিক আয়োজন। তার চেয়ে বড় কথা, এতগুলো কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা একটা বড় ব্যাপার। শতাধিক কোম্পানিকে একই প্ল্যাটফর্মে আনার ফলে আমাদের প্লেসমেন্ট অফিসের সঙ্গে সবার যোগাযোগটা সহজ হয়ে যায়। এ ছাড়া আমাদের বর্তমান শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ পাওয়া, স্নাতকদের চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে এই মেলা। আগের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ইন্টার্নশিপ বা চাকরি, উভয় ক্ষেত্রেই এ মেলা থেকে আইইউবির অনেক শিক্ষার্থীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়।’ সব বিভাগের শিক্ষার্থীরাই যাতে সমানভাবে উপকৃত হয়, সে জন্য বিভিন্ন খাতের নামী প্রতিষ্ঠানগুলোকে মেলায় আনার চেষ্টা করা হয় বলে জানান তিনি।