আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে সেরে উঠুন এই ৭ ধাপে

অতীতের ট্রমা, আবেগগত ক্ষত বা হুট করে রেগে যাওয়া, রাগের বশে আবেগের নিয়ন্ত্রণ হারানোর মতো মানসিক সমস্যা কমবেশি সবারই আছে। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে সেরে ওঠা গভীরভাবে ব্যক্তিগত একটা যাত্রা। চলুন জেনে নেওয়া যাক, যে ৭ ধাপে আপনি সেরে উঠবেন আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে।

আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে সেরে ওঠা গভীরভাবে ব্যক্তিগত একটা যাত্রাছবি: প্রথম আলো

১. নিজেকে জানুন

সময় নিয়ে ভাবুন তো, কোন কোন বিষয় আপনার মানসিক শান্তি বা স্থিতি নষ্ট করছে। কোন কোন বিষয় নিয়ে আপনি অতিরিক্ত চিন্তা করছেন। কেন আপনার ‘মুড অফ’ হয়ে যাচ্ছে? আপনার ‘ট্রিগার পয়েন্ট’গুলো খুঁজে বের করুন। কেননা কোনো সমস্যা সমাধানের প্রথম ও প্রধান ধাপ হলো সমস্যাগুলোকে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা।

২. আপনি যেমন, নিজেকে তেমনভাবেই গ্রহণ করুন

আপনার সঙ্গে যা ঘটে গেছে, সেসব বদলে ফেলার সুযোগ নেই। বরং সেখান থেকে শিক্ষা ও শক্তি নিয়ে সামনে এগোতে পারেন। আপনার অতীতকে আপনার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নষ্ট করার অধিকার দেওয়া কি ঠিক হবে? নিজের অতীত মেনে নিন। সেটা কেবলই একটা অতীত। আপনি মানুষ হিসেবে যেমন, ঠিক তেমনভাবেই নিজেকে গ্রহণ করুন। এখানে কোনো হীনম্মন্যতা বা অপরাধবোধে ভুগবেন না। নিজেকে ভালোবাসুন।

৩. নিজের নেতিবাচক অভ্যাস বা অনুভূতির ওপর কাজ করুন

কোনো বদভ্যাসের কারণে আপনার দৈনন্দিন জীবনযাপনে অ্যাংজাইটি বা উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে কি? মনে করুন, আপনি ঘুম থেকে দেরি করে ওঠেন। এ কারণে অফিসে যেতে দেরি হচ্ছে। বস বা ম্যানেজারের দুটো কড়া কথা শুনে দিন শুরু করতে হচ্ছে, দিনটাই খারাপ যাচ্ছে। এখন নিজেকে প্রশ্ন করুন, কেন ঘুম থেকে উঠতে দেরি হচ্ছে? কেন রাতে ঘুমাতে দেরি হচ্ছে? কী কী সমস্যার কারণে আপনি আগে আগে বা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে পারছেন না? কীভাবে সেসব সমাধান করা যায়? রাগ আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করার আগে রাগকে নিয়ন্ত্রণ করুন। প্রয়োজনে পেশাদারের সাহায্য নিন।

আরও পড়ুন

৪. ক্ষমা করুন

সবার আগে নিজেকে ক্ষমা করুন। সবাই ভুল করে। নিজের অতীতকে ক্ষমা করুন। মা–বাবাকে ক্ষমা করুন। যাঁরা আপনার সঙ্গে ঠিক আচরণ করেননি, তাঁদের সবাইকে ক্ষমা করুন। হালকা, ভারমুক্ত হোন।

৫. নিজেকে প্রকাশ করুন

ভেতরে বয়ে বেড়ানো ক্ষত, কথা, অতীত অনুভূতি কাউকে না কাউকে খুলে বলুন বা লিখুন অথবা সেই অনুভূতি থেকে আঁকুন। নিজের না–বলা অনুভব, মানবিক সংকট বা অনুভূতি নিয়ে সৃজনশীল কিছু একটা তৈরি করুন। কোনো না কোনোভাবে নিজের না–বলা কথা বা ব্যথাগুলো প্রকাশ করুন। কেননা যা প্রকাশ করা হয়নি, তা আপনার ভেতরেই থেকে যায়। আপনাকে ছেড়ে যায় না। আপনাকে মুক্ত হতে দেয় না।

আরও পড়ুন

৬. নিজের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন

আমরা অনেক সময় অন্যের প্রতি যতটা সহানুভূতিশীল হই, নিজের প্রতি ততটা হই না। সেরে ওঠার প্রক্রিয়া সবার জন্য একই রকম নয়। সেই প্রক্রিয়া আপনার যদি মনে হয় খুবই কঠিন হয়ে পড়ছে, আর পারছি না…একটু থামুন, বিরতি নিন। আপনাকে যা যা খুশি করে, সেসব করুন। আবার শক্তি সঞ্চয় করে গোড়া থেকে শুরু করুন।

৭. আপনি সেই মানুষটা আর নেই

আবেগ বা অনুভূতিগতভাবে সেরে ওঠার পর আপনি বদলে গেছেন। এখন আপনি নতুন মানুষ, নিজের ‘বেটার ভার্সন’। কেননা আপনি এখন নিজের সবকিছুর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে যেতে পেরেছেন। আপনি নিজেকে আগের চেয়ে ভালো জানেন। আপনি আগের চেয়ে আত্মবিশাসী, শক্তিশালী, নির্ভার, নির্দিষ্ট বিষয়ে গভীর মনোযোগী। আত্মতৃপ্তি, সুখ ও সাফল্যের দিকে আপনার পথচলা এখন আগের চেয়ে অনেকটাই মসৃণ।

সূত্র: ভেরি ওয়েল মাইন্ড

আরও পড়ুন