বুয়েটের ছাত্রীরা যেখানে সেরা

সব কটি দলকে পেছনে ফেলে সেরাদের সেরা হয়েছেন বুয়েটের নোশিন নাওয়াল, রাবেয়া হোসেইন ও ফারিয়া বিনতে আউয়াল
ছবি: সংগৃহীত

দেশের নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলো এই নিয়ে ষষ্ঠবার। গত বছরের মতো এবারও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্রীদের একটি দল। নাম—বুয়েট পাইরেটস।

জাতীয় গার্লস প্রোগ্রামিং কনটেস্টের দুটি অংশ—প্রাথমিক ও মূল পর্ব। প্রাথমিক পর্বে সারা দেশের চার শতাধিক দল অংশ নিয়েছিল। সেখান থেকে মূল পর্বে জায়গা করে নেয় ৭০টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসা ১০৪টি দল। শেষ পর্বে সব কটি দলকে পেছনে ফেলে সেরাদের সেরা হয়েছেন বুয়েটের নোশিন নাওয়াল, রাবেয়া হোসেইন ও ফারিয়া বিনতে আউয়াল। তিনজনই বুয়েটের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

প্রযুক্তিক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রোগ্রামিং সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে মেয়েদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দেওয়াই ছিল এ প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য। সেই লক্ষ্যে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বসে প্রতিযোগিতার মূল আসর। জটিল সব প্রোগ্রামিং সমস্যার মুখোমুখি হন প্রতিযোগীরা। ডাইনামিক প্রোগ্রামিং, গ্রিডি, অ্যাডহক, বাইনারি সার্চ, ডেটা স্ট্রাকচার, বিট মাস্কিং—এসব বিষয়ের ওপর মোট ১০টি সমস্যা সমাধানের জন্য সময় বরাদ্দ ছিল ৫ ঘণ্টা। বুয়েট পাইরেটসের সদস্যরা আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই সাতটি সমস্যা সমাধান করে ফেলেন। অনেক চেষ্টার পর আরও একটি সমস্যা সমাধানের খুব কাছাকাছি পৌঁছালেও শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেননি তাঁরা।

আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আদলে নিয়মগুলো আগে থেকেই নির্ধারণ করা ছিল। মূল প্রতিযোগিতায় বাস্তব জীবনসংশ্লিষ্ট কিছু সমস্যা সমাধান করতে দেওয়া হয়। ‘সত্যি বলতে প্রতিযোগিতার জন্য আলাদাভাবে কোনো প্রস্তুতিই নেওয়া হয়নি,’ বলছিলেন বুয়েট পাইরেটসের সদস্য ফারিয়া বিনতে আউয়াল। তিনি বলেন, ‘বুয়েটে ৩-১ (তৃতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টার) ও ৩-২ টার্ম (তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার) দুটোতে তুলনামূলকভাবে পড়ালেখার চাপ থাকে খুব বেশি। টার্মের শেষ সপ্তাহে ল্যাব কুইজ, ক্লাস টেস্ট, প্রজেক্টের ফাইনাল ইভাল্যুয়েশন—এত কিছুর মধ্যে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারাটাই অনেক চ্যালেঞ্জের।’ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার পুরস্কার অবশ্য হাতেনাতেই পেয়েছেন ফারিয়ারা। চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে তাঁদের দেওয়া হয়েছে নগদ টাকা, মেডেল, ট্রফি ও সনদ। তবে প্রতিযোগীদের কাছে পুরস্কারের চেয়েও বড় পাওয়া—নতুন কিছু শেখার সুযোগ, নতুন সমস্যা সমাধানের রোমাঞ্চ। যেকোনো সমস্যাই তাঁরা আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছেন। এভাবে দলের মধ্যে ভালো একটা বোঝাপড়াও হয়ে গেছে। এই বোঝাপড়া কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে সমস্যা সমাধানে (প্রবলেম সলভিং) আরও পারদর্শী হতে চান এই তরুণ প্রোগ্রামাররা।