যে ১০ কাজ অফিসে করবেন না
২০১২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে চাকরি করছেন মাইকেল রিচিনিক। প্রায় ১২ বছর চাকরির পর নিজের ক্যাম্পাস নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে একটি নিবন্ধ লেখেন। যেখানে একজন চাকরিজীবীর কী কী করা উচিত নয়, সে বিষয়ে চমৎকারভাবে বর্ণনা করেছেন। তাঁর আলোচিত বিষয়গুলোই নিচে তুলে ধরা হলো।
১. বিশেষ দরকার ছাড়া ই–মেইলে ‘রিপ্লাই অল’ বাটন ব্যবহার করবেন না। অনেক সময় অফিসের অনেক বার্তা একসঙ্গে অনেক কর্মীর মেইলে আসে। সেটার উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে ভেবে দেখুন সবাইকে রিপ্লাই দিতে হবে কি না। ভুল করে ‘রিপ্লাই অল’ দিলে অনেকে বিরক্ত হতে পারেন। এমনকি গোপন কথাও ছড়িয়ে যেতে পারে।
২. নিজের ডেস্কে বসে ব্যক্তিগত ফোনালাপ করবেন না। ব্যক্তিগত কথা বলার দরকার হলে কনফারেন্স রুম ব্যবহার করুন বা বাইরে যান। আপনার ব্যক্তিগত আলাপ আশপাশের সহকর্মীদের বিরক্তির কারণ হতে পারে।
৩. ব্যক্তিগত আবেগ অফিসে দেখাবেন না। ব্যক্তিগত সমস্যা অফিসের বাইরে রাখার চেষ্টা করুন। খুবই জরুরি হলে কিছু সময়ের জন্য ছুটি নেওয়া ভালো।
৪. প্রশ্ন করতে ভয় পাওয়া যাবে না। কোনো বিষয় না বুঝলে অবশ্যই প্রশ্ন করুন। মুখ বুজে ভুলভাবে পুরো কাজ শেষ করে ফেললে আবার সেটা করতে হবে, বাড়তি সময়ের দরকার হবে। এই সময়ক্ষেপণের কারণে আপনার পেশাদারত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে।
৫. অফিসে গসিপ করবেন না। অফিসে গুজব রটানো বা কারও সম্পর্কে খারাপ কথা বলা খুবই খারাপ অভ্যাস। সেসব বারবার মিথ্যা প্রমাণিত হলে সহকর্মীদের কাছে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা কমে যাবে।
৬. অফিশিয়াল ই–মেইলে ইমোজি বা অনেক বেশি বিস্ময়বোধক চিহ্ন ব্যবহার করবেন না। অনেক অফিসে (বিশেষ করে সৃজনশীল কাজে) ই–মেইলকে হালকাভাবে নেওয়ার পরিবেশ থাকতে পারে। তবে সব অফিস এমন হবে না। তাই পেশাদার ভঙ্গিতে ই–মেইল করাই ভালো। অযাচিতভাবে ইমোজি বা বিস্ময়বোধক চিহ্নের ব্যবহার আপনার ই–মেইলকে খেলো করে দিতে পারে।
৭. বসকে তাচ্ছিল্য করে কথা বলবেন না। মতভেদ থাকলেও ভদ্রভাবে বলুন। অপমানজনক কথা বা শক্ত মুখভঙ্গি এড়িয়ে চলুন। বসকে তাচ্ছিল্য করলে, সেটা অফিসের মধ্যে আপনার ইমেজকে খারাপভাবে উপস্থাপন করতে পারে।
৮. অফিসের কোনো আয়োজনে বা পার্টিতে গেলেও মনে রাখবেন, আপনি কর্মস্থলে আছেন। সেখানে আনুষ্ঠানিকতায় কিছুটা ভিন্নতা থাকতে পারে, তবে পেশাদার আচরণ বজায় রাখা জরুরি।
৯. আত্মবিশ্বাসী থাকুন, কিন্তু সীমা অতিক্রম করবেন না। নিজেকে উপস্থাপন করতে গিয়ে এমন কোনো কাজ বা কথা বলবেন না, যাতে আপনাকে অহংকারী মনে হয়। অফিসে ভারসাম্য বজায় রাখা শিখতে হবে।
১০. ছাতা আনতে ভুলবেন না। হ্যাঁ, এটা অদ্ভুত শোনাতে পারে, কিন্তু কাজের পরিবেশে ছোট ছোট প্রস্তুতিও বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। রোদ–বৃষ্টির দিনে অফিস যাতায়াতে ছাতা সঙ্গে রাখার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া ডেস্কে একটি অতিরিক্ত শার্ট, ব্যাগ, টুথপিক বা জুতা রাখলে অনেক অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি সামলানো সহজ হবে।
মনে রাখবেন, আপনার আচরণ, পোশাক, মুখ ও শরীরীভাষার সবটা মিলিয়েই আপনি। তাই এ বিষয়গুলো আপনি কীভাবে উপস্থাপন করছেন, সেটাই আপনার প্রফেশনাল ইমেজ গড়ে তোলে।