অন্দরে শীতল ছোঁয়া
রোদেলা প্রখরতায় আসি আসি করছে এবারের বৈশাখ। এই গরমে সবার চাই একটু শীতল পরশ। তা মিলবে খুব সহজেই। ঘরের কোণে কিংবা সবুজ উঠানে বিছানো মায়াবী শীতলপাটিতে।রেডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গুলশান নাসরীন চৌধুরী বলেন, ‘ঘরের সাজে শীতলপাটি যেমন যোগ করে ভিন্নমাত্রা, তেমনি এর মাধ্যমে ফুটে উঠবে দেশীয় আমেজও। নান্দনিকভাবে শীতলপাটিতে ঘর সাজানোর নানা পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।কার্পেটের বদলে এখন ব্যবহার করুন নকশাদার রঙিন একখানি শীতলপাটি। এর সঙ্গে রাখতে পারেন অল্প উচ্চতার বসার টুল কিংবা চেয়ার। বসার ঘরের যেকোনো এক পাশেও করতে পারেন এ আসন। সে ক্ষেত্রে যেকোনো একটি দেয়ালের পাশে হলে ভালো হয়। এর ওপর রঙিন কয়েকটি বড় ও ছোট কুশনের ব্যবস্থা করুন, যেগুলো হেলান দেওয়ার কাজে লাগবে। বসার ঘরে শীতলপাটিতে মোড়া আসনও রাখতে পারেন। কাঠের কাঠামোর তৈরি এ শীতলপাটির আসন খুঁজে পাবেন দেশি কোনো ফ্যাশন হাউসেই। শীতলপাটিতে সাধারণত সবুজ, লাল ও গোলাপি রঙের নকশার ব্যবহারও দেখা যায়। এ রংগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে কুশনের পাশাপাশি পর্দার ব্যবহারে ভিন্নতা আনতে পারেন। যখনই ঘর সাজাতে শীতলপাটি ব্যবহার করবেন, তখন ঘরের অন্যান্য সাজেও যেন দেশীয় আমেজ থাকে। পর্দা কিংবা সোফার কভারের কাপড়টি গ্রামীণ চেকের হলে দেখতে ভালো লাগবে। শোবার ঘরের বিছানায়ও বিছিয়ে দিতে পারেন শীতলপাটি। ওপরে পাখা আর নিচে পাটির শীতলতায় সুখনিদ্রা হবেই। শিশুর ঘরের এক পাশে করুন শীতলপাটির ব্যবহার। সে ক্ষেত্রে রঙিন পাটি ব্যবহার করুন। এর পাশে কম উচ্চতার একটি টেবিল দিয়ে দিতে পারেন। গরমের সময় পাটিতে বসে হাত-পা ছড়িয়ে শিশুর পড়াশোনা করাটা আনন্দময় হয়ে উঠবে। খাবারের ঘরে, বিশেষ করে খাবারের টেবিলে শীতলপাটি ব্যবহার করা যায়। পুরো টেবিলটা শীতলপাটিতে মুড়িয়ে দিতে পারেন, আবার শীতলপাটির তৈরি টেবিল ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন। খাবার টেবিলের থালা-বাটি-জগ পোড়ামাটির হলে দেখতে ভালো লাগবে। শীতলপাটির তৈরি মনোহারি ট্রেগুলোও খাবার টেবিলের শোভা বাড়াবে। বিকেলের চায়ের টেবিলটা বসার ঘর কিংবা খাবার ঘরে না হয়ে ছাদে কিংবা উঠানে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বসার জন্য ব্যবহার করতে পারেন শীতলপাটি। এর সঙ্গে ছোট ও হালকা একটা কাঠের টেবিল রাখতে পারেন। ফরমাশ দিয়ে নকশা করা শীতলপাটিতে ঘরের পুরো একটা দেয়ালও জড়িয়ে দিতে পারেন। অথবা ছবির ফ্রেমের মতো করে বাঁধাই করে ঝুলিয়েও দিতে পারেন। ঘরের মাঝখানের অযাচিত কোনো পিলারকেও ঢেকে দিতে পারেন শীতলপাটিতে। এর সঙ্গে যোগ করতে পারেন সবুজ কোনো গাছও। দরদামশীতলপাটি পেতে চলে আসতে পারেন ঢাকার নিউমার্কেট ও কারওয়ান বাজারে। নিউমার্কেটের ‘আমিন হস্তশিল্প’র শীতলপাটির বিক্রেতা জাহেদুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন ধরনের শীতলপাটি পাওয়া যায় বাজারে। বড় পাটি মিলবে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টকায়, মাঝারি আকৃতির ৫০০-৬০০, ছোট আকৃতির ২০০-৩০০ টাকায়। সিলেটের শীতলপাটি পাওয়া যাবে মাঝারি ও ছোট ৬০০-এক হাজার ২০০, বড় আকৃতির (চার হাত ও পাঁচ হাত) এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকায়। ফরমাশ দিলেও যেকোনো আকৃতির ও ডিজাইনের শীতলপাটি তৈরি করানো যাবে এখান থেকে।ফ্যাশন হাউস যাত্রায় বড় শীতলপাটি মিলবে তিন হাজার ৮৯৯ টাকায়, শীতলপাটির ঝুড়ি ৪৫০ টাকায়, ট্রে ৭৬-৯৯৯ টাকায়। শীতলপাটির তৈরি বসার আসন পাবেন আড়ংয়ে দুই হাজার ২২৫ টাকায়। আড়ংয়ে বেতের ও পাটির টেবিল কভার পাবেন ৬৫৫ টাকায়, টেবিল ম্যাট ৩২৫, বাতি পাবেন এক হাজার ১৩৭ টাকায়, ট্রে পাবেন ২০৩-৩৮৪ টাকায়।