অবন্তী সিঁথির পূজার রান্না

সংগীতশিল্পী অবন্তী সিঁথির হাতে পূজার রান্না
ছবি: সুমন ইউসুফ

শারদীয় দুর্গাপূজা। এই কয় দিন সংগীতশিল্পী অবন্তী সিঁথি নিজেই রান্না করবেন। রান্নাঘরে মায়ের সঙ্গে রান্নার পাশাপাশি টুকটাক দেবেন রান্নাবিষয়ক নানা পরামর্শও।

অবন্তী সিঁথি খুব বেশি মিষ্টি খাবার খেতে পছন্দ করেন না। তবে পূজার দিনগুলোয় হালকা মিষ্টি দেওয়া তিলের নাড়ুতে না নেই অবন্তী সিঁথির। আর শারদীয় দুর্গোৎসবে বাড়িতে নাড়ু বানানো হচ্ছে। তার মানেই মনের মধ্যে একটা পুজো পুজো ব্যাপার চলে অবন্তী সিঁথির মধ্যে। ছোটবেলা থেকেই দেখেছেন পূজা এলেই বাড়ির উঠানে চলত সবাই মিলে নাড়ু বানানোর বিশাল আয়োজন।

অবন্তী বড় হয়েছেন জামালপুরে। পূজার সময়টা এখনো গ্রামেই কাটাতে ভালোবাসেন তিনি। স্মৃতিচারণা করে বললেন, ছোট থেকেই গানের আয়োজনে অংশ নিতেন। আর এখন বেড়েছে ভক্তের সংখ্যা। সম্প্রতি নেটওয়ার্কের বাইরে সিনেমায় ‘রূপকথার জগতে’ গানটি গেয়ে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। তাই পূজায় গানের আয়োজনে ভক্তদের এই গান শোনানোর ইচ্ছার কথাও জানালেন অবন্তী। এ ছাড়া পূজার জন্য মোট চারটি গান গেয়েছেন এই কণ্ঠশিল্পী। সব মিলিয়ে এবারের দুর্গোৎসব বেশ জমজমাট অবন্তী সিঁথির কাছে।

অবন্তী সিঁথি পছন্দ করেন, এমন কিছু খাবারের রেসিপি তিনি দিয়েছেন নকশার পাঠকদের জন্য।

ছবি: সুমন ইউসুফ

জিরা পোলাও

উপকরণ

বাসমতী চাল ৫০০ গ্রাম, জিরা ১ টেবিল চামচ, স্টার এলাচি ২টি, লবঙ্গ ৫টি, দারুচিনি ২টি, তেজপাতা ২টি, কাঁচা মরিচ ৪টি, কিশমিশ ও কাজুবাদাম পছন্দমতো, লবণ স্বাদমতো, চিনি ও ঘি সিকি চা–চামচ।

প্রণালি

প্রথমে চাল ধুয়ে ২০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবার চুলায় একটি পাত্রে প্রয়োজনমতো তেল ও ঘি গরম করে নিতে হবে। তেল ও ঘি গরম হয়ে এলে তেজপাতা, স্টার এলাচি, দারুচিনি ও লবঙ্গ দিয়ে ১ মিনিট নাড়াচাড়া করে নিন। এবার চাল দিয়ে পরিমাণমতো লবণ ও সিকি চা–চামচ চিনি দিয়ে দিন। এবার চালের দ্বিগুণ পানি দিয়ে ফোটাতে হবে। চাল ফুটলে কাঁচা মরিচ, কিশমিশ ও বাদাম দিয়ে কিছু সময় দমে রাখুন। চাল পুরোপুরি সেদ্ধ হয়ে এলে ঘি ছড়িয়ে দিন।

লাবড়া

উপকরণ

পেঁপে, আলু, শিম, ফুলকপি, মিষ্টিকুমড়া, মুলা, গাজর (২৫০ গ্রাম), পাঁচফোড়ন ১ চা–চামচ, তেজপাতা ২টি, শুকনা মরিচ ২টি, আদাবাটা ৩ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ২টি, ধনেপাতা পরিমাণমতো, লবণ পরিমাণমতো, চিনি সামান্য।

প্রণালি

প্রথমেই গরম তেলে তেজপাতা ও পাঁচফোড়ন দিয়ে ফোড়ন দিন। এবার এতে সব সবজি, আদাবাটা, হলুদগুঁড়া, লবণ ও একচিমটি চিনি দিয়ে কষান। এবার পরিমাণমতো পানি দিয়ে সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত ঢেকে রাখুন। শেষে কাঁচা মরিচ দিয়ে নামিয়ে ফেলুন।

সাবুদানার পাঁপড়

উপকরণ

সাবুদানা আধা কাপ, জিরা ১ চা–চামচ, লবণ পরিমাণমতো, জিরাগুঁড়া সামান্য, মরিচগুঁড়া প্রয়োজনমতো।

প্রণালি

সাবুদানা ভালো করে ধুয়ে সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে দেখুন ঠিকমতো নরম হয়েছে কি না। এবার চুলায় একটি পাত্রে ২ কাপ পানি দিয়ে তাতে ভিজিয়ে রাখা সাবুদানা, জিরা ও লবণ সেদ্ধ করুন। এরপর জিরাগুঁড়া, মরিচগুঁড়া দিয়ে বারবার নাড়তে থাকুন। যাতে পাত্রে কোনোভাবে লেগে না যায়। মিশ্রণটি ঘন না হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। এবার চুলা বন্ধ করে ওপরে সামান্য লেবুর রস ছড়িয়ে দিন। এখন ১ টেবিল চামচ করে সাবুদানা নিয়ে কাগজের ওপর হালকা করে পাঁপড়ের আকারে ছড়িয়ে দিন। প্রতিটি টেবিল চামচে একটি করে ছোট ছোট পাঁপড় হবে। গরম থাকা অবস্থাতেই করতে হবে। পাঁপড়গুলো ২–৩ দিন রোদে শুকাতে হবে। পুরোপুরিভাবে শুকিয়ে গেলে গরম তেলে ভেজে পরিবেশন করুন।

আলুঝুরি ভাজা

উপকরণ

আলু ২টি, হলুদগুঁড়া সামান্য, মরিচগুঁড়া, তেল ও লবণ পরিমাণমতো।

কই বড়ির ঝাল

উপকরণ

কই মাছ ৫টি, ডালের বড়ি পছন্দমতো, পেঁয়াজ সামান্য, গোটা জিরা সামান্য, টমেটো ১টি, হলুদের গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, লাল মরিচগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, জিরার গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ধনেগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, গরমমসলা ২ টেবিল চামচ, ধনেপাতা সামান্য ও লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি

কই মাছে লবণ, হলুদ ও মরিচের গুঁড়া মাখিয়ে রাখুন। এবার তেল গরম করে ডালের বড়ি ভেজে নিন। বড়ি ভাজা হয়ে এলে একই পাত্রে মাছ ভেজে নিন। অন্য একটি পাত্রে তেল গরম করে জিরার ফোড়ন দিয়ে অল্প পেঁয়াজ বাদামি করে ভেজে নিন। এবার সব মসলা আর লবণ দিয়ে কষাতে থাকুন। মসলা কষানো হলে ভাজা মাছ, বড়ি ও টমেটো দিয়ে সামান্য পানি দিয়ে দিন। ঝোল ঘন হয়ে এলে কাঁচামরিচ ও ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।

পঞ্চবটী ডাল

উপকরণ

মোটর ডাল ২৫০ গ্রাম, কিউব করে কাটা পেঁপে, মিষ্টিকুমড়া, কচুর মুখি, ফুলকপি, গাজর পরিমাণমতো, পাঁচফোড়ন ২ চা–চামচ, আদাবাটা সামান্য, শুকনা মরিচ ৩টি, তেজপাতা ২টি, কোরানো নারকেল পরিমাণমতো, কাঁচা মরিচ ১টি, হলুদগুঁড়া সিকি চা–চামচ, লবণ ও ঘি প্রয়োজনমতো।

প্রণালি

ডাল ও সব সবজি পানি দিয়ে সেদ্ধ করতে হবে। এরপর লবণ, আদাবাটা ও কাঁচা মরিচ দিতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে এতে নারকেল কোরানো দিতে হবে। এখন শুকনা মরিচের ফোড়ন দিয়ে ঘি ছড়িয়ে নামিয়ে ফেলুন।

আনন্দ নাড়ু

উপকরণ

নারকেল ১টি, দুধ ১ লিটার, এলাচিগুঁড়া আধা চা–চামচ, চিনি আধা কাপ।

প্রণালি

প্রথমেই পাত্রে ১ লিটার দুধ ঘন ক্ষীর করে নিন। এবার নারকেল মিহি করে বেটে নিন। এরপর ক্ষীর, এলাচি, চিনিবাটা নারকেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। নারকেলের এ মিশ্রণ মাঝারি আঁচে চুলায় ঘনঘন নাড়াচাড়া করতে হবে। মাখা মাখা হয়ে এলে হালকা গরম অবস্থায় গোল গোল করে নাড়ু বানিয়ে ফেলতে হবে।