আঙুলে অঙ্গুরি

এই গরমে এত এত গয়না পরে থাকাটা তো মোটেও কাজের কথা নয়। তবে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে অনুষঙ্গ তো পরাই চাই। হাতে বড় একটি আংটি পরে নজর কাড়তে পারেন এই সময়ে।গয়নার দোকান অ্যারাবিয়ানসের ব্যবস্থাপক সনৎ হাজরা বলেন, ‘সোনার দামটা এখন অনেকের নাগালের বাইরে। তাই বিকল্প হিসেবে বেছে নেওয়া যেতে পারে রুপা কিংবা ধাতুর ওপর সোনার প্রলেপ দেওয়া আংটি। তবে এটি যেন অবশ্যই আপনার ব্যক্তিত্ব, বয়স ও পরিবেশ-উপযোগী হয়। পাশাপাশি আংটিটি মানানসই হতে হবে আপনার হাতের গড়ন ও পোশাকের সঙ্গেও।’ফ্যাশন ডিজাইনার লিপি খন্দকার বলেন, ‘হাতের গড়ন অনুযায়ী আংটি পরলে ভালো দেখায়। হাতের ও আঙুলের গড়ন খাটো হলে স্কয়ার, গোলাকার অথবা এক ফুলবিশিষ্ট আংটি পরতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আংটিগুলোর নকশা কিছুটা সমতল হলে ভালো হয়। চিকন ও লম্বা গড়নের আঙুলে সব ধরনের আংটিই পরতে পারেন। বড় আংটি একটি আঙুলে একটিই মানায়।’ কোন আঙুলে কেমন আংটি মানায়, তা জানিয়েছেন লিপি খন্দকার। একসময় অনামিকাতেই আংটি বেশি পরতে দেখা যেত। তবে আজকাল সব আঙুলে এমনকি বৃদ্ধাঙ্গুলেও আংটি পরতে দেখা যায়। বৃদ্ধা ও কনিষ্ঠা আঙুলের আংটিগুলো কেনার সময় যথাসম্ভব সমতল নকশার আংটি নির্বাচন করুন।

আপনি চাইলে বৃদ্ধাঙ্গুলে জিগজ্যাগ, পেঁচানো নকশার কিংবা কয়েকটি সাদামাটা আংটি একসঙ্গে করে একটা বড় আংটির মতো করে পরতে পারেন। এর মাঝে একটি ছোট পাথরের আংটিও যোগ করা যেতে পারে। তর্জনী, মধ্যমা আর অনামিকায় পরতে পারেন যেকোনো নকশার আংটি। ফুল, তারা, প্রজাপতি—সবকিছুই চলতে পারে এ তিনে। আংটি থেকে ঝালরের মতো ঝুলতে পারে ঝুনঝুনি কিংবা চাবির গোছার মতো নকশাও। তবে ঝালরের মতো আংটিগুলো তরুণ বয়সীদের জন্যই অধিক মানানসই। ফতুয়া-জিনসের মতো পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গে এ আংটিগুলো একেবারে মিলে যাবে। পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গে নানান রঙের জিগজ্যাগ আংটিও বেশ মানিয়ে যায়। জমকালো দাওয়াত ও অনুষ্ঠানে সোনার প্রলেপ দেওয়া আংটি পরতে পারেন। এতে থাকতে পারে কুন্দন ও পাথরের কারুকাজ। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ উভয়ের সঙ্গেই মানিয়ে যায় এ আংটিগুলো। রঙিন মিনা করা আংটিও পরতে পারেন। এ সময়ে বেশ চলছে ডায়মন্ড কাটের আংটিগুলো। ফতুয়া, জিনসের সঙ্গে দেশি ঢঙের রঙিন পুঁতি, নারকেলের মালা, বোতামের একটি বড় আংটি বেশ ভালো লাগবে। শুধু একটি বড় পাথরের কিংবা একটি বোতামেরও সাদামাটা সুন্দর ও ছিমছাম হতে পারে আংটি। বড় আংটির সঙ্গে নিশ্চয়ই হাতভর্তি চুড়ি পরলে ভালো দেখাবে না। হাতটা বরং খালি হলেই সুন্দর দেখাবে।
সুন্দর একটি আংটির জন্য হাতটাকেও রাখতে হবে সুন্দর। মাসে অন্তত একবার হাতের মেনিকিউর করিয়ে নিতে হবে। পারলারে যাওয়া সম্ভব না হলে ঘরে বসে কুসুম গরম পানিতে শ্যাম্পু মিশিয়ে কিছুক্ষণ হাত ডুবিয়ে রেখে নখগুলো সুন্দর করে ফাইল করে কেটে নিতে হবে। আঙুলের ভাঁজের কালো দাগ দূর করতে লেবুর খোসা ঘষে নিতে পারেন। এরপর হাত ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। যে আংটিটি পরবেন তার সঙ্গে মিল রেখে নেইলপলিশও লাগিয়ে নিতে পারেন।
কোথায় পাবেন

নগরের বিভিন্ন শপিং মলের গয়নার দোকানে ঢুঁ মারলে নিশ্চিত পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের আংটি। আড়ং, যাত্রা, অঞ্জন’স, বিবিয়ানা, মায়াসির, মাদুলী ও বাংলার মেলায় পাবেন দেশি উপাদানে তৈরি বৈচিত্র্যময় নকশার আংটি।
আড়ংয়ে রুপা ও সোনার প্রলেপ দেওয়া আংটি পাবেন ৫০০ থেকে ৩০০০ টাকায়। পুঁতি ও বিভিন্ন ধাতুর তৈরি ফ্যাশনেবল আংটি পাবেন ১০০ থেকে ৫০০ টাকায়। অঞ্জন’স-এ পাবেন কুন্দন, মুক্তা ও পাথর বসানো নানান রঙের রুপা এবং গোল্ড প্লেটেড আংটি ৪৫০ থেকে ২৩৫৭ টাকায়। ডায়মন্ড কাটের বিদেশি আংটিগুলো পাবেন ৫০০-৩০০০ টাকায়। অ্যারাবিয়ানসে পাওয়া যাচ্ছে মিনা করা ও সোনার প্রলেপ দেওয়া আংটি। কুন্দন, রুবি ও পান্না বসানো আংটিও রয়েছে এখানে। চাইলে ফরমায়েশ দিয়েও বানানোর সুযোগ রয়েছে। রুপার ওপর সোনার প্রলেপ দেওয়া আংটি পাওয়া যাবে ১০০০-৮০,০০০ টাকায়। ফ্যাশন হাউস যাত্রায় পাবেন রুপা, তামা, পিতল, বিডস, সুতি ও কাঠের তৈরি আংটি। এ ছাড়া ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের শেল গ্যালারি ও স্টাইল পার্কে (বিডি) ঘুরে দেখতে পারেন। মায়াসিরে পাবেন বড় কাঠের ও রুপার আংটি। পিরান ও মাদুলীতে পাবেন ফিউশনধর্মী আংটি। ঢাকার মেট্রো শপিং মল, জেনেটিক প্লাজা, সীমান্ত স্কয়ার, পিংক সিটি ছাড়াও আর্চিজ ও হলমার্কের দোকানগুলোতে পেয়ে যেতে পারেন পছন্দের বড় আংটি। দেশীয় ঘরানার আংটি পেতে যেতে পারেন শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটেও। গয়না ও আংটির জন্য চাঁদনী চক মার্কেট আর গাউছিয়া সুপার মার্কেট তো সবারই চিরচেনা। এ ছাড়া ফেসবুকের নানা পেজেও কিনতে পাবেন রকমারি নকশার আংটি।