আমার সাহসী বাবা

আজ ২০ জুন, বাবা দিবস। বাবাকে ভালোবাসার বিশেষ এই দিন উপলক্ষে পাঠকের কাছে লেখা আহ্বান করেছিল গোদরেজ প্রটেক্ট ও প্রথম আলো অনলাইন। ‘বাবা, তোমাকে বলা হয়নি’ শিরোনামে বিপুলসংখ্যক পাঠক তাঁদের বাবাকে নিয়ে অনুভূতিমালা লিখেছেন। এখানে নির্বাচিত লেখাগুলোর একটি প্রকাশিত হলো।

বাবা, আমার দেখা সবচেয়ে সাহসী তরুণ কে, জানো? সেটা হচ্ছ, তুমি।

২০০৯ সালের ঘটনা। আমাদের সংসারে তীব্র অভাব। এমনও দিন গেছে যে আমার খাওয়ার জন্য দুধ পর্যন্ত কেনা সম্ভব হতো না। এক বেলা ভাত খেলে অন্য বেলার ভাতের সংস্থান অনিশ্চিত ছিল। চাল শেষ হলে পরদিন কী খাব, তার অনিশ্চয়তা ছিল!

যদিও আমি তখন কিছু বুঝতাম না। কারণ, বাবা তুমি বুঝতে দাওনি। আমি তোমাকে সেই সময় কখনো হতাশ হতে দেখিনি। তুমি প্রচুর চেষ্টা করতে কাজ খোঁজার। শত অভাবের মধ্যেও আমাকে বিলাসীভাবেই বড় করেছ কারও সাহায্য ছাড়াই। প্রতি মুহূর্তের ব্যর্থতা, কষ্টের জন্য কখনো আক্ষেপ করতে বা ভেঙে পড়তে দেখিনি তোমায়। ভাগ্যকে দোষারোপ করোনি কখনো। যথেষ্ট শক্ত হাতেই সব সামলে নিয়েছ তুমি।

তোমার প্রতিটি সেকেন্ডের লড়াই আমার জন্য এক অনুপ্রেরণা, বাবা। তবু আমি তোমার মেয়ে হয়েও এত ভিতু কেন, বলো তো? এত সহজে হাল ছেড়ে দিই কেন? নিজে ক্ষতবিক্ষত হয়েও আমাকে আগলে রেখেছ তুমি। অথচ আজ আমাদের মাঝে কত দূরত্ব। আমাদের অবস্থার পরিবর্তন হলেও কি সেই দিনগুলো তোমাকে কষ্ট দেয়? আমি বিধাতার কাছে সব সময় বলি, আমি বেঁচে থাকতে যেন তোমার কিছু না হয়। আমি সহ্য করতে পারব না। আমি খুবই দুর্বল মনের মানুষ, বাবা।

তোমার মতো সাহসী মানুষ খুবই কম আছে, বাবা। কিছু সাহস দাও না আমাকে।

বাবা, তোমাকে বলা হয়নি, আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।