আমেরিকার তিশা ফল খাগড়াছড়িতে

রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের গাছে ঝুলছে তিশা ফল  প্রথম আলো
রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের গাছে ঝুলছে তিশা ফল প্রথম আলো

সফেদা পরিবারের হলেও চেহারা ও স্বাদে একেবারেই ভিন্ন তিশা ফল। আমেরিকার এই ফল ধরেছে খাগড়াছড়ির খেজুরবাগান হর্টিকালচার সেন্টার ও রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের বাগানে।

রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের দাবি, ফলটি বাংলাদেশের কোনো বাগানে এর আগে দেখা যায়নি। খাগড়াছড়ির দুটি বাগানেই প্রথমবারের মতো ফলটি ধরল।

খাগড়াছড়ির রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, তিশা ফলের বৈজ্ঞানিক নাম Pouteria campechiana এটি Sapotaceae পরিবারের সদস্য। এর উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা। রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের উদ্যোগে ২০০২ সালে এই ফল গাছের চারা প্রতিষ্ঠানের বাগানে রোপণ করা হয়। ২০০৯ সাল থেকে এখানকার তিশাগাছে ফল ধরা শুরু হয়। কেন্দ্রের উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা জানান, তিশা ফলের গাছ ১০ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। ফলটি দেখতে ডিম্বাকার। কাঁচা অবস্থায় সবুজ, পাকলে গাঢ় সোনালি থেকে কমলা রং ধারণ করে। পাকা ফল সাধারণত সাত সেন্টিমিটার লম্বা হয়। এর ওজন হয় ১২৫ গ্রাম।

ডিমের মতো দেখতে বলে একে এগ ফ্রুট বা ডিমফলও বলা হয়। কেবল দেখতেই ডিমের মতো নয়, পাকা ফলের শাঁস সেদ্ধ ডিমের কুসুমের সঙ্গে চিনি মেশালে যেমন হয়, অনেকটা তেমন স্বাদের। ঘন রসে ভরা শাঁস ননিযুক্ত খাবারের মতো জিবের সঙ্গে লেগে থাকে। সুস্বাদু এই ফলে চিনি, আমিষ ও চর্বি আছে পর্যপ্ত পরিমাণে। এ ছাড়া লোহা, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ভিটামি এ, ভিটামিন সি, বিটাক্যারোটিন, নিয়াসিন, রিবোফ্লোবিনসহ নানা ধরনের খনিজ উপাদান ও ভিটামিন আছে এতে। এটি নানা দেশে উচ্চ ঔষধিগুণসম্পন্ন ফল হিসেবেও পরিচিত। ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ, মানসিক অবসাদ ও পেটের অম্বল দূর করে এই ফল। খাগড়াছড়ি খেজুরবাগান হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদ ওমর ফারুক বলেন, এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া তিশা ফলের চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে তিশা ফল চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।
খাগড়াছড়ি রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, তিশা ফল ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হওয়ায় বাড়িতে একটি গাছ থাকলে পরিবারের সদস্যদের ভিটামিনের অভাব দূর করা সম্ভব।