ঈদের কেনাকাটা ফেনীতেই

ফেনী শহরের গ্র্যান্ড হক টাওয়ারে পোশাক বাছাইয়ে ব্যস্ত এক  নারী l প্রথম আলো
ফেনী শহরের গ্র্যান্ড হক টাওয়ারে পোশাক বাছাইয়ে ব্যস্ত এক নারী l প্রথম আলো

প্রতিবছরই আয়তনে বাড়ছে ফেনীর ঈদবাজার। রোজার শুরু থেকেই বিপণিকেন্দ্রগুলোতে ভিড়। কেবল ফেনীর বাসিন্দারা নন, জেলার কাছাকাছি অবস্থিত চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও কুমিল্লার কয়েকটি উপজেলার লোকজনও ঈদের কেনাকাটার জন্য এখানে আসছেন। শহরের শতাধিক ছোট-বড় বিপণিকেন্দ্রের কয়েক হাজার পোশাকের দোকানের বিক্রেতাদের এখন দম ফেলার ফুসরতও নেই।
শহরের বিভিন্ন দোকানে এখন দেশি-বিদেশি বাহারি পোশাকের সমাহার। পছন্দসই পোশাক মেলায় ক্রেতারাও কেনাকাটা করে তৃপ্ত। তবে অনেকে জানালেন, পোশাকের দাম গতবারের চেয়ে খানিকটা বেশি।
ব্যবসায়ীরা জানান, ফেনীর ঈদবাজার ক্রমশ বড় হচ্ছে। শহরে এখন শীতাতপনিয়ন্ত্রিত মার্কেট হয়েছে। আছে আধুনিক রুচিশীল পোশাকের দোকানও। তাই ফেনীর আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষও এখানে ঈদের কেনাকাটা সারছেন। ফেনী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আইনুল করিমও একই কথা বললেন। তিনি বলেন, ফেনীতে শতাধিক বিপণিকেন্দ্রে প্রায় দশ হাজার দোকান আছে। ফেনী ছাড়াও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, সেনবাগ, চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ, পার্বত্য চট্টগ্রামের রামগড়, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রাম থেকে লোকজন ফেনীতে ঈদের কেনাকাটা করতে আসেন। এখানকার ঈদ বাজারে দৈনিক গড়ে ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে।
শহরের শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপণিবিতান, ফেনী সেন্টার, গ্র্যান্ড হক টাওয়ার, জুম্মা শপিং সেন্টার, তমিজিয়া শপিং কমপ্লেক্স, জহিরিয়া টাওয়ার, এফ রহমান এসি মার্কেট, মহিপাল প্লাজা গ্রিন টাওয়ার, ফেনী প্লাজা, রোকেয়া শপিং সেন্টার, ইব্রাহিম হোসেন মার্কেটসহ শহরের বিভিন্ন মার্কেটে এখন ক্রেতাদের ঢল।
বাহারি পোশাক, শাড়ি, পাঞ্জাবির সমাবেশ ঘটানোর পাশাপাশি ক্রেতা টানতে বিপণিকেন্দ্রগুলো র্যা ফল ড্রয়েরও আয়োজন করেছে। পুরস্কার হিসেবে ঘোষিত হয়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন এসব। তবে পুরস্কারের প্রলোভন নয়, মানসম্পন্ন পোশাকের খোঁজেই বিপণিকেন্দ্রগুলোতে যাচ্ছেন ক্রেতারা।
ফেনীর তরুণ-তরুণীরাও এখন চলতি ফ্যাশনের দিকেই ঝুঁকছেন। তরুণীদের পছন্দ লম্বা ঝুলের মাটি ছোঁয়া গাউন ও ফ্রক। বাজার ঘুরে চোখে পড়ল ‘শারারা’ এবং ‘বাজিরাও মাস্তানি’ নামের পোশাক। বিক্রয়কর্মীরা জানালেন, হিন্দি সিরিয়াল ও চলচ্চিত্রের বিভিন্ন চরিত্রের নামে পোশাকের নামকরণ করা হচ্ছে কয়েক বছর ধরে। এতে পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়ে।
নারীদের সুতি, জর্জেট ও সিল্কের হরেক রকমের শাড়িও বিক্রি হচ্ছে মার্কেটগুলোতে। ছেলেদের পোশাকেও এসেছে বৈচিত্র্য। পাঞ্জাবি, শার্ট, টি–শার্ট, জিনস, ফতুয়া ও জুতার বাজারে তরুণদের ভিড় দেখা গেল। চলছে হালকা কাজের ঝলমলে সুতির এবং সিল্কের পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি ও কটি।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থেকে ঈদের পোশাক কিনতে আসা লুনা আক্তার নামের এক গৃহবধূর সঙ্গে কথা হয় গ্র্যান্ড হক টাওয়ার মার্কেটে। তিনি বলেন, ‘দেখেশুনে পছন্দ করে ঈদের পোশাক কিনব। তবে এবার দাম একটু বেশি।’
শহরের শহীদ হোসেন উদ্দীন বিপণিকেন্দ্রে আছে সাড়ে চার শ দোকান। এখানকার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, বেচাকেনা খুব ভালো চলছে। সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে কেনাকাটা। তবে ঈদ ঘনিয়ে এলে মধ্যরাত পর্যন্ত মার্কেট খোলা থাকবে।