উত্তরের আলো সরকারি আজিজুল হক কলেজ

সরকারি আজিজুল হক কলেজ
ছবি: প্রথম আলো

১৯৩৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার আজিজুল হকের নামে স্থাপিত হয় বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ। এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন ড. এম এম মুখার্জি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলায় প্রথম সম্মান কোর্স চালু করেছিল এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯৬৮ সালের ১৫ এপ্রিল জাতীয়করণ হওয়া কলেজটিতে এখন আলাদা দুটি ক্যাম্পাসে পাঠদান কার্যক্রম চলছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি আজিজুল হক কলেজে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্স ছাড়াও ২৩টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা এখানে ৩০ হাজারের বেশি। উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলে এই কলেজ রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে বরাবরই শ্রেষ্ঠত্বের সুনাম ধরে রেখেছে। স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তরের ফলাফলেও সুনাম আছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘পারফরম্যান্স র‌্যাংকিং’–এ ৬৮৫টি কলেজের মধ্যে এই কলেজের অবস্থান সব সময়ই বেশ ভালো। বর্তমানে এখানে বিজ্ঞান, কলা, সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে বেশ কয়েকটি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু আছে।

শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হল আছে পাঁচটি। এগুলোর মধ্যে শের-ই-বাংলা, শহীদ তিতুমীর ও শহীদ আকতার আলী মুন হল বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। চালু আছে বেগম রোকেয়া এবং ফখরুদ্দিন আহমদ হল।

সরকারি আজিজুল হক কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌, কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর মতো গুণীজনেরা। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে এ কলেজের বেশ কয়েকজন ছাত্র শহীদ হন। শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন সাহিত্যিক শাহেদ আলী ও কবি আতাউর রহমান। শিক্ষার্থীদের তালিকায় আছেন কণ্ঠশিল্পী শওকত হায়াত খান, কবি মহাদেব সাহা, ভাষাসৈনিক গাজীউল হক, বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ড. আনোয়ার হোসেন, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ড. এনামুল হক, শিক্ষক মমতাজুর রহমান তরফদার প্রমুখ।

সহশিক্ষা কার্যক্রমের জন্য সরকারি আজিজুল কলেজের শিক্ষার্থীদের সুনাম রয়েছে। কলেজ থিয়েটার, পুণ্ড্র ডিবেটিং ক্লাব, পরিবেশবাদী সংগঠন তীর, রক্তদাতা সংগঠন বাঁধন, বিএনসিসি, রেড ক্রিসেন্ট, রোভার স্কাউটের মতো সংগঠনগুলো সব সময় ক্যাম্পাস মাতিয়ে রাখে। বিদেশি ভাষা শিক্ষার কোর্স ও আইসিটি কোর্স ছাত্রছাত্রীদের এগিয়ে রাখছে। নতুন ১৯টি বিষয়ে কোর্স চালুর পরিকল্পনা আছে।

সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলী বলেন, ‘বগুড়ায় কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এ কারণে উত্তরবঙ্গের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় ভরসা এখন সরকারি আজিজুল হক কলেজ। উচ্চশিক্ষায় যুগোপযোগী ১৯টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালুর জন্য আমরা আবেদন করেছি। এই উদ্যোগ বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির অনুমোদন পাওয়া যাবে।’