
দৈনন্দিন জীবনে বহুল ব্যবহৃত কিছু শব্দের কথা চিন্তা করুন! আপনার সে তালিকার ওপরের দিকে যে শব্দগুলো থাকবে, নিঃসন্দেহে তার একটি ‘ওকে’। শব্দটির প্রচলন তাবৎ দুনিয়ায়! মজার ব্যাপার হচ্ছে, আঠারো শতকের আগেও এই শব্দের ব্যবহার সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় না। এ করণেই বোধ হয়, ‘ওকে’র জন্ম নিয়ে অসংখ্য গল্প রয়েছে। সুনির্দিষ্ট দলিলটি পাওয়া যায় ১৮৩৯ সালের। ওই বছরের ২৩ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক বোস্টন মর্নিং পোস্ট পত্রিকা শব্দটির ব্যবহার করেছিল। পত্রিকাটির দ্বিতীয় পৃষ্ঠার মাঝামাঝি একটি কলামে প্রথমবারের মতো ‘অল কারেক্ট’ বা ‘সব ঠিক আছে’ বাক্যের পরিবর্তে ‘o. k.’ লেখা হয়।
ওকে শব্দটির ইংরেজি ভাষায় টিকে যাওয়ার পেছনে বোস্টন মর্নিং পোস্ট পত্রিকার অবদান যতটা, তার চেয়ে ঢের বেশি অবদান যুক্তরাষ্ট্রের অষ্টম প্রেসিডেন্ট মার্টিন ভ্যান বিউরেনের। তাঁর সম্পর্কে একটি কথা প্রচলন রয়েছে যে, তিনি দাপ্তরিক কাগজপত্রে সব ঠিক আছে বোঝাতে ‘ওকে’ ব্যবহার করতেন। যদিও এই তথ্যের কোনো দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তবে বিউরেনের শাসনামলের এক দশকের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষও দৈনন্দিন কাজকর্মে ‘ওকে’ বলা শুরু করে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের লেখকেরা ঐক্যবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন এই শব্দটিকে ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। শুধু ব্যতিক্রম ছিলেন মার্ক টোয়েন।
তবে বিশ শতকের গোড়া থেকেই ‘ওকে’ শব্দটির প্রচলন এতটাই বেড়ে যায় যে, সাহিত্যিকেরাও সেটার ব্যবহার এড়িয়ে যেতে পারেননি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন নিজেই তাঁর সব দাপ্তরিক কাগজপত্র ‘ওকে’ দিয়ে অনুমোদন করতেন। মূলত এরপর
থেকেই ওকে শব্দটি প্রায় সব দেশেই পরিচিত হতে শুরু করে।
বিবিসি অবলম্বনে