
বাতাসে এখন উষ্ণতার ছোঁয়া। সঙ্গে আমের মুকুলের গন্ধই বলে দিচ্ছে বৈশাখ এল বলে। বৈশাখের এই গরমে স্বস্তির পরশ বোলাতে তালপাখা, বিভিন্ন নকশার হাতপাখা ও শীতলপাটির জুড়ি নেই। এ ছাড়া ঘর সাজাতে নানা রঙের ও নকশার তালপাখা, হাতপাখা ও শীতলপাটি আপনার বাঙালিয়ানাকে ফুটিয়ে তুলে ঘরে নিয়ে আসবে লোকজ আমেজ।
এককালে বৈশাখের অন্যতম অনুষঙ্গ ছিল তালপাখা, হাতপাখা ও শীতলপাটি। তবে যন্ত্রনির্ভর এই যুগে এগুলোর চাহিদা কিছুটা কমেছে। তারপরও গরম এলে শহুরে অনেকেই প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে ব্যবহার করেন তালপাখা আর শীতলপাটি। পাশাপাশি ঘরের সাজে ভিন্ন মাত্রা যোগ করতেও ব্যবহার করা যায় এগুলো। পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে ঢাকার নিউমার্কেট, গাউছিয়া, এলিফ্যান্ট রোড, কাঁটাবন থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোর দোকানে পাওয়া যায় নানা রং-নকশার তালপাখা, হাতপাখা ও শীতলপাটি। কদিন আগে এলিফ্যান্ট রোডের একটি দোকানে শীতলপাটি কিনতে এসেছিলেন সুমনা হক। তিনি বলেন, অতি গরমে শীতলপাটি অনেক আরামদায়ক। তা ছাড়া এখানে ঘর সাজানোর জন্য ও বিয়ের জন্য নানা ডিজাইনের শীতলপাটি রয়েছে।
বৈশাখকে সামনে রেখে যাত্রা, আড়ং ও দেশি দশের শাখাগুলোতে বাহারি নকশার তালপাখা, হাতপাখা ও শীতলপাটি রাখা হয়েছে। অন্দরসজ্জাবিদ গুলশান নাসরিন বলেন, ঘর সাজানোর কাজ অনেক সময় সিজন্যাল হয়। এখন যেমন গরমকালে বসার ঘরে কার্পেটের বদলে রঙিন শীতলপাটি ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া শোয়ার ঘরে ইদানীং বিছানার চাদরের বদলে শীতলপাটি বিছিয়ে রাখা হয়। এর ওপর পানি দিয়ে হালকা মুছে নিলে বেশ ঠান্ডা ও আরামদায়ক একটি আমেজ পাওয়া যাবে।
এ ছাড়া দেয়ালে, দরজায় শোপিস হিসেবে তালপাখা ও হাতপাখা সাজালে তা ঘর সাজানোয় অন্য মাত্রা যোগ করবে। বসার ঘরে বা শোয়ার ঘরে এগুলো ব্যবহারের পাশাপাশি খাবার টেবিলের ম্যাট হিসেবেও এখন শীতলপাটি বেশ চলছে। অনেকেই শীতলপাটি ছোট ছোট করে কেটে তা গ্লাসের নিচে বা ঢাকনা হিসেবে ব্যবহার করছে। তবে সব ঘরে সব রঙের শীতলপাটি বা পাখা সাজানো যাবে না, তাই রং বিবেচনা করতে হবে বুঝেশুনে। পাখা বা শীতলপাটি যদি বসার ঘরে ব্যবহার করতে হয় তবে পর্দা হতে হবে দেশীয় উপাদানের যেমন গ্রামীণ চেক। সোফা যদি বেতের বা কাঠের হয় তবে তা হবে মানানসই। আবার হালকা রঙের পর্দা ও দেয়ালে গাঢ় রঙের পাখা ও শীতলপাটি বেশ মানাবে। তাই দেশীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া পাওয়া যায় এমন অনুষঙ্গ নির্বাচনের পরামর্শ দিলেন গুলশান নাসরিন।

দরদাম
নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, কাঁটাবন ও পুরান ঢাকার বিভিন্ন দোকানগুলোতে তালপাখা পাওয়া যাবে ৩০-৫০ টাকার মধ্যে। তবে একটু নকশা করা হাতপাখা ৬০-৮০ টাকা ও কাপড়ের নকশা করা হাতপাখা পড়বে ১০০-১৫০ টাকার মধ্যে।
এসব দোকানে নকশা ও আকারের ওপর বিভিন্ন দামে শীতলপাটি পাওয়া যায়। এখানে ১৫০-৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে শীতলপাটি। তবে নকশা ভেদে দামের পার্থক্য থাকবে। পাঁচ ফুট বাই আড়াই ফুট পাটির দাম পড়বে ৫০০ টাকা, নকশা থাকলে দাম একটু বেশি। দুই ফুট বাই দুই ফুট প্লেন পাটি পাবেন ২০০ টাকায়। তবে মার্কেট ঘুরলে ছোট পাটি পাবেন ১৫০ টাকায়।
অন্যদিকে ঘর সাজানোর জন্য দামি ও সুন্দর পাখা এবং শীতলপাটি পাওয়া যাবে বিভিন্ন শোরুমগুলোতে। এখানে শীতলপাটি পাওয়া যাবে ৩৫০০-৬০০০ টাকার মধ্যে। ছোট সাইজের শীতলপাটি পাওয়া যাবে ৩০০-৭০০ টকার মধ্যে। দুই ফুট বাই দুই ফুট পাটি ২০০-৩০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া বিভিন্ন নকশা করা হাতপাখা পাওয়া যাবে ৩০০-৪৫০ টাকার মধ্যে।