ঘন ভ্রু যুগল

মুখের আকৃতির সঙ্গে মানিয়ে বেছে নিন আপনার ভ্রুর আকার। মডেল: অমৃতা, ছবি: নকশা
মুখের আকৃতির সঙ্গে মানিয়ে বেছে নিন আপনার ভ্রুর আকার। মডেল: অমৃতা, ছবি: নকশা

ফ্যাশন-সচেতন তরুণীরা স্টাইলের একঘেয়েমি ভাব কাটানোর জন্য হরহামেশাই চুলের কাটে ও সাজের ধরনে পরিবর্তন আনেন। তবে শুধু চুলের কাটেই কেন? চেহারায় নতুনত্ব আনতে চাইলে চোখের ভ্রুর আকৃতিতেও পরিবর্তন আনা যেতে পারে। তবে সেটা অবশ্যই মুখের সঙ্গে মানানসই হতে হবে।
একসময় চিকন ভ্রু রাখার প্রবণতা দেখা গেলেও, এখন আবার সেই মোটা ভ্রু রাখার চল ফিরে এসেছে।

রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীনের মতে, সব যুগে এবং সব কালেই মোটা ও ঘন ভ্রুর একটা আলাদা আবেদন ছিল, যা এখনো আছে। তবে এটাও ঠিক যে ইদানীং ভ্রুর আকৃতিটা একটু মোটা রাখার ঝোঁক তরুণীদের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ভ্রুর আকৃতির হালকা রকমফের করলে পুরো চেহারার আদলই পাল্টে যেতে পারে। তাই ভ্রু মোটা রাখলেও তা কোন আকৃতিতে প্লাক করলে সুন্দর দেখাবে, সেটা জেনে নেওয়া ভালো।

লম্বাটে মুখের মেয়েদের গোল আকৃতির ভ্রুতে এবং যাদের মুখ গোলাকৃতির, তাদের ভ্রু ভি আকৃতি রাখলে বেশি মানায়। এ ক্ষেত্রে ভ্রুর সামনের দিকটা একটু শার্প বা তীক্ষ রাখার পরামর্শ দেন আফরোজা পারভীন। তিনি আরও বলেন, যাঁদের ভ্রু এমনিতেই অনেক ঘন ও কালো তাঁদের ভ্রু আঁকার কোনো প্রয়োজনই নেই। মেকআপ নেওয়ার পর আইব্রো ব্রাশ দিয়ে হালকা করে আঁচড়ে নিলেই চলবে। এতে করে ভ্রুতে লেগে থাকা পাউডার মুছে যাবে।

রূপবিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খান জানালেন, যাঁদের কপাল ছোট ও সামান্য উঁচু, তাঁদের ভ্রু বেশি মোটা না রাখলেই ভালো দেখায়। আয়ত চোখের অধিকারী যাঁরা, তাঁদের মোটা ভ্রুতে দারুণ মানিয়ে যায়। অন্যদিকে চোখের পাতা ছোট যাঁদের, তাঁদের মোটা আকৃতির ভ্রুতে দেখতে বেশি ভালো লাগে না।
যাঁদের জোড়া ভ্রু, তাঁরা যদি ভ্রু মোটা রাখতে চান, তাহলে দুই ভ্রুর মাঝখানের জোড়া অংশটুকু প্লাক করে সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে ফেলার পরামর্শ দেন তিনি।

কানিজ আলমাস খান ও আফরোজা পারভীন দুজনই মনে করেন, যাঁদের মুখ চাপা, তাঁদের তুলনায় একটু ভারী গড়নের মুখ যাঁদের, তাঁদের মোটা ভ্রুতে বেশি মানায়। তবে তার মানে এই নয় যে যাঁদের গাল চাপা তাঁরা মোটা ভ্রু রাখতে পারবেন না।

যাঁরা এত দিন একটু চিকন করেই ভ্রু প্লাক করে আসছিলেন কিন্তু এখন ভ্রুর আকৃতিতে পরিবর্তন আনতে চাইছেন, তাঁরা কী করবেন? পরবর্তী সময়ে ভ্রু প্লাক করার আগে অন্তত দুই থেকে আড়াই মাস বিরতি নিন, আর যাঁদের ভ্রু খুব দ্রুত গজায়, তাঁরা এক থেকে দেড় মাস পর প্লাক করালেও ভ্রুর মোটা আকার রাখতে পারবেন। আসলে কত দিন পর পর ভ্রু প্লাক করবেন, সেটা নির্ভর করবে আপনার ভ্রুর বৃদ্ধির ওপর।
যাঁদের ভ্রু প্রাকৃতিকভাবেই ঘন ও মোটা, তাঁদের জন্য তো চলতি ফ্যাশনের এই ধারা অনুসরণ করতে বেশ সুবিধাই হবে, কিন্তু যাঁদের ভ্রু পাতলা, তাঁদের জন্যও রয়েছে কিছু টিপস:
 প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে সামান্য পরিমাণ ক্যাস্টর অয়েল তুলায় ভিজিয়ে ভ্রু জোড়ায় লাগাতে পারেন। এটি ভ্রু ঘন করতে সাহায্য করবে।
 ভ্রু মোটা দেখানোর জন্য মেকআপ করার সময় আইব্রো পেনসিল দিয়ে ভ্রু এঁকে নিতে পারেন। তবে অবশ্যই মেকআপ তোলার সময় খুব ভালো করে তা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
 ভ্রু মোটা রাখলে সাজের ক্ষেত্রেও কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। চোখে খুব বেশি ভারী মেকআপ নয়, বরং চোখের ওপর মোটা করে এবং কিছুটা টেনে আইলাইনার লাগালেই দেখতে ভালো লাগবে। সে ক্ষেত্রে চোখের নিচে কাজল দেওয়ার দরকার নেই। তবে পাপড়িতে ঘন করে মাশকারা লাগাতে ভুলবেন না।
 চোখের পাতায় আইশ্যাডো লাগাতে চাইলে কপার, ব্রোঞ্জ এই ধরনের রংগুলোই বেছে নিন।
 চোখের সাজটা হালকা হওয়ায় ঠোঁট সাজাতে পারেন নিজের পছন্দের যেকোনো উজ্জ্বল রঙে। চলতি ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লাল, কমলা ইত্যাদি গাঢ় রঙের লিপস্টিক অনায়াসেই ব্যবহার করতে পারেন ঠোঁটে।