চলচ্চিত্র প্রদর্শনী থেকে তহবিল সংগ্রহ

কারও ডাকের অপেক্ষা তাঁরা করেননি। চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের কয়েকটি অঞ্চলে হঠাৎ যখন বন্যা হানা দিল, তখন ক্যাম্পাসভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠন বন্যার্তদের সেবায় এগিয়ে এসেছে নিজেদের মতো করে। নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে তহবিল গঠন করেছেন তাঁরা, সংগ্রহ করেছেন ত্রাণ। পড়ুন তেমনই একটি সংগঠনের উদ্যোগের কথা।

চলচ্চিত্র প্রদর্শনের পাশাপাশি চিত্রকর্ম, ডিজিটাল আর্ট ও আলোকচিত্র বিক্রি করে চলেছে তহবিল সংগ্রহের কাজ
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রকে (টিএসসি) ঘিরে গড়ে ওঠা সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর অন্যতম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ। যেকোনো সামাজিক সংকট বা বিপত্তি নিয়ে তারা সব সময় সচেতন। সিলেট বিভাগের বন্যা পরিস্থিতি দেখে সংগঠনের সদস্যরা ভাবতে শুরু করেছিলেন, কীভাবে বন্যার্ত মানুষকে সাহায্য করা যায়।

আলাপ–আলোচনা করে সংগঠনের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেন, চলচ্চিত্র প্রদর্শনের পাশাপাশি চিত্রকর্ম, ডিজিটাল আর্ট ও আলোকচিত্র বিক্রি করে চলবে তহবিল সংগ্রহের কাজ। বন্যা পরিস্থিতির যেহেতু হঠাৎ অবনতি হলো, তাই শিক্ষার্থীদেরও আয়োজন করে ফেলতে হয়েছে দ্রুত। তবু ক্যাম্পাস কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ ভালো সাড়া পেয়েছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন

চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর জন্য সিনেমা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সব ধরনের দর্শকের কথা মাথায় রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। আধুনিক ও বাংলা ধ্রুপদি চলচ্চিত্র—দুটিই ছিল তালিকায়। দুই দিন ধরে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী চলেছে। প্রতিদিন দেখানো হয়েছে চারটি করে সিনেমা। প্রথম দিন প্রদর্শিত হয় পরিচালক এহতেশামের পিচ ঢালা পথ, মালেক আফসারীর এই ঘর এই সংসার, হুমায়ূন আহমেদের ঘেটুপুত্র কমলা ও গিয়াসউদ্দিন সেলিমের মনপুরা। দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ ২০ জুন প্রদর্শিত হয়েছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর টেলিভিশন, ইমতিয়াজ আহমেদ বিজনের মাটির প্রজার দেশে, অনম বিশ্বাসের দেবী ও গিয়াস উদ্দিন সেলিমের গুণিন।

সিনেমার পাশাপাশি চিত্রকর্ম ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীও সাড়া ফেলেছে দর্শনার্থীদের মধ্যে। আগ্রহী ক্রেতাও পাওয়া গেছে অনেক। এ ছাড়া ‘ডোনেশন বক্স’–এর মাধ্যমে ক্যাম্পাস এলাকা থেকে বন্যার্তদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন সংগঠনের সদস্যরা।

এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক কে এম ইতমাম ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আয়োজনের নাম দিয়েছিলাম “বন্যার্তদের জন্য চলচ্চিত্র”। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো একত্র হয়ে বন্যার্তদের সহায়তায় একটি সম্মিলিত তহবিল গঠন করেছে। আমরা আমাদের সংগৃহীত অর্থ বানভাসি মানুষের পুনর্বাসনে কাজে লাগাতে চেষ্টা করছি।’