চাঁদের অন্ধকার দিকের ছবি

জ্যোতির্বিদেরা হয়তো এই ছবি দেখে আমোদিত হবেন। হয়তো পিংক ফ্লয়েডের ভক্তরা অবাক হবেন এই ছবি দেখে। হয়তো এই ছবি বদলে দেবে ‘দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন’ গানের চিত্রকল্পকে। কেননা ‘চাঁদের অন্ধকার দিকের’ এক সম্পূর্ণ আলোকিত ছবিই সম্প্রতি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
ডিপ স্পেস ক্লাইমেট অবজারভেটরি থেকে তোলা এই ছবিতে চাঁদের অন্য দিকের খুবই স্পষ্ট দৃশ্য দেখা গেছে। পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার সময় সূর্য আর পৃথিবীর মাঝে থাকা চাঁদের এ ছবিটি তোলা হয়েছে। এতে সূর্যের আলোয় পৃথিবীর আলোকিত দিকটির ওপর চাঁদকে দেখা যাচ্ছে। শক্তিশালী স্যাটেলাইট ক্যামেরায় তোলা এই ছবি সম্প্রতি প্রকাশ করেছে নাসা।
১৬ জুলাই তোলা ছবিটিতে দেখা যায় প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর দিয়ে উত্তর আমেরিকার দিকে যাচ্ছে চাঁদ। সূর্যের আলোয় চাঁদের পৃষ্ঠের ক্র্যাটার বা পানিহীন হ্রদের মতো গভীর গর্ত আর ‘মারে মস্কোভিয়েনস’ নামের চাঁদের বিশাল সমতলভূমি স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছে এই ছবিতে। পৃথিবীর প্রায় ১৬ লাখ মাইল দূর থেকে এই ছবি তোলা হয়েছে।
পৃথিবী থেকে আমরা কেবল চাঁদের একটি দিকই দেখতে পাই। কেননা পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে চাঁদের যে পরিমাণ সময় লাগে ওই একই সময়েই চাঁদ নিজের অক্ষে একটি পূর্ণ আবর্তন শেষ করে। ফলে চাঁদের অন্য দিকটির দেখা মেলে না পৃথিবী থেকে।
১৯৫৯ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের একটা মিশনের আগে চাঁদের ওই দিকের চিত্র সম্পর্কে মানুষের কোনো ধারণাই ছিল না। নাসা জানিয়েছে, ডিপ স্পেস ক্লাইমেট অবজারভেটরি এখন থেকে প্রতি দুই বছর পর পর চাঁদের ওই দিকের ছবি তুলবে।
নাসার বিজ্ঞানী অ্যাডাম সাবো বলেন, ‘এটা আশ্চর্যজনক পৃথিবী চাঁদের চেয়ে যে কত বেশি উজ্জ্বল। চাঁদের পৃষ্ঠের সঙ্গে তুলনা করলে অন্ধকার মহাকাশে আমাদের গ্রহটি সত্যিই অসাধারণ।’
অস্ট্রেলিয়ার মনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী মিখায়েল ব্রাউন ‘চাঁদের অন্ধকার দিকের’ এ ছবিকে ‘চিত্তাকর্ষক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই ছবি ব্যতিক্রমী। কেননা এ দৃশ্য দেখতে হলে আপনাকে মহাকাশযান নিয়ে চাঁদকে পেরিয়ে বহু দূরে যেতে হবে। আমরা সাধারণত এই পরিপ্রেক্ষিত দেখতে পাই না।’
(দ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে)