চেয়ারম্যান পদে দুই বেয়াই

টেকনাফের সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলী ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আহমদ। সম্পর্কে তাঁরা একে অপরের বেয়াই। কিন্তু সেই মধুর সম্পর্কে এখন উনুনের উত্তাপ। কারণ, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। দুজনেই আওয়ামী লীগ থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী বর্তমানে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। জাফর আহমদ সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। এ দুই বেয়াইয়ের কথা এখন ভোটারদের মুখে মুখে। তবে এ নিয়ে আওয়ামী লীগে দেখা দিয়েছে বিভক্তি।

জানা যায়, মোহাম্মদ আলীর বড় ছেলের সঙ্গে জাফর আহমদের বড় মেয়ের বিয়ে হয় কয়েক বছর আগে। এখন চেয়ারম্যান পদের জন্য পারিবারিক সম্পর্কও ভালো যাচ্ছে না তাঁদের। ৩১ মার্চ এই উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

দলীয় সূত্র জানায়, ১ মার্চ উপজেলা আ.লীগের এক সভায় তৃণমূলের নেতারা দলের একক চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ আলীর নাম ঘোষণা করেন। কিন্তু স্থানীয় সাংসদ আবদুর রহমান বদি একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া জাফর আহমদকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের কয়েকজন তৃণমূল নেতা বলেন, মোহাম্মদ আলী ৪৩ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তা ছাড়া তিনি সাংসদও ছিলেন। জনপ্রিয়তা ও রাজনীতির কথা বিবেচনা করে তাঁকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয় তৃণমূল থেকে। কিন্তু সাংসদ বদি মোহাম্মদ আলীকে নিজের জন্য নিরাপদ মনে করেন না। তাই দলে সদ্য যোগদানকারী জাফর আহমদকে মাঠে নামিয়েছেন।

জানতে চাইলে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর বলেন, তৃণমূলের নেতারা দলের একক চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীকে বেছে নিয়েছেন। এর বাইরে কেউ প্রার্থী হলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

জাফর আহমদ বলেন, ‘দলের নেতারা চেয়েছেন বলে আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছি। স্থানীয় সাংসদ আবদুর রহমান বদিসহ জেলা আ.লীগের নেতারা আমার সঙ্গে রয়েছেন। কিন্তু বেয়াই অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী চাইছেন, তিনিও নির্বাচন করবেন। ফলে শীতল যুদ্ধ তো একটু হবেই।’

মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমিই আওয়ামী লীগ মনোনীত একমাত্র উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী। সাংসদ আব্দুর রহমান বদি ও জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ কে আহমদ হোসেন অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যে দলীয় প্রার্থী (জাফর আহমদ) ঘোষণা করেছেন, তার বিরুদ্ধে জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়ে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার বরাবরে ফ্যাক্স বার্তা পাঠানো হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ কে আহমদ হোসেন বলেন, মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা জাফর আহমদকে দলীয় সমর্থন দিয়েছে। তা না মেনে কেউ বিভ্রান্তির সৃষ্টি করলে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।