চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করার বয়স

মেখলা সরকার
মেখলা সরকার

বয়ঃসন্ধিকাল পেরোনোর সময়টা একেকজনের জন্য একেক রকম হয়। কেউ ১৮-তেই বয়ঃসন্ধি পেরিয়ে যান, আবার কেউ ২২ পর্যন্ত সময় নেন। বয়ঃসন্ধি শেষ করে একটু বড় হয়ে ওঠা সবার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই সময়টাতে নিজের দায়িত্ব-কর্তব্য নিয়ে সবাই একটু দোটানায় থাকেন। নিজেকে আরও একটু বেশি স্বাধীন মনে করতে থাকেন এই বয়সী তরুণ-তরুণীরা। নিজের কাজ অন্য কেউ করে দেবে, এটি যেন আর মানসিকভাবে মেনে নিতে পারেন না অনেকেই।
সবকিছুতেই আবেগ থাকা বয়ঃসন্ধিকালের বৈশিষ্ট্য হলেও এই বয়সে আবেগতাড়িত হন। তাঁরা বয়ঃসন্ধিকাল থেকে হঠাৎ একদম পুরোদস্তুর ‘ম্যাচিউর’ আচরণ করেন এ রকম ঠিক নয়, কিন্তু কিছু কিছু আচরণে তাঁরা নিজে থেকেই পরিবর্তিত হন। নতুন পরিবেশ তাঁকে নানা রকম অভিজ্ঞতা দিলেও তাঁর জন্য কোনটি ভালো তা বেছে নেওয়ার সঠিক সময় এই বয়সটাই। এই বয়সে তারুণ্যের গরম রক্ত তাঁকে দ্রুততার সঙ্গে নানা সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করে। কিন্তু এই সময়ে যেকোনো ক্ষেত্রে একটু ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
এই বয়সে পরিবার থেকে অনেক বেশি সাহায্যের প্রয়োজন হয়। পরিবার যদি হঠাৎ করেই তাঁর কাছ থেকে একজন ম্যাচিউর মানুষের আচরণ আশা করে, তাহলে তিনি এই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হন এবং ভেঙে পড়েন। এ ক্ষেত্রে মা-বাবার উচিত সন্তানকে ছোট থেকেই সচেতন করে তোলা। ছোট ছোট কিছু কাজে তাঁকে বয়ঃসন্ধিকালেই স্বাধীনতা দিতে হবে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে দিতে হবে। বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই যদি তাঁর ওপর একটু একটু দায়িত্ব দেওয়া শুরু করা যায়, তাহলে তিনি এই বয়সে এসে দায়িত্ব নিতে শেখেন এবং তাঁর সব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেন।

পরিবার থেকে যদি ম্যাচিউরভাবে ছোট থেকেই ব্যক্তির ওপর ক্রমে ক্রমে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে তাঁর মধ্যে এক দিক থেকে যেমন তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়ে, তেমনি তিনি যেকোনো দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে সমর্থ হন।

বয়ঃসন্ধিকালের ঠিক পরের সময়টা প্রত্যেকের জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময়ে পরিবার ও বন্ধুদের সহায়তায় নিজেকে সঠিকভাবে এগিয়ে নিতে পারলে পরবর্তী জীবন হয় অনেক সুন্দর ও সাফল্যময়।

মেখলা সরকার : সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা।