টাইফয়েড: কীভাবে বুঝবেন, কী করবেন?

টাইফয়েড হয়েছে কি না তা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে এবং ওষুধ খাওয়ার জন্য রোগীকে চিকিত্সকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। ছবিটি প্রতীকী
টাইফয়েড হয়েছে কি না তা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে এবং ওষুধ খাওয়ার জন্য রোগীকে চিকিত্সকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। ছবিটি প্রতীকী

শীত পেরিয়ে এখন গরম পড়তে শুরু করেছে। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের সময়ে দেখা দেয় নানা অসুখ-বিসুখ। এ সময়ে ছড়ায় এমনি একটি মারাত্মক রোগের নাম টাইফয়েড। টাইফয়েড রোগ পানিবাহিত। সালমনেলা টাইফি ও প্যারাটাইফি জীবাণু থেকে টাইফয়েড রোগ হয়ে থাকে।

টাইফয়েডের লক্ষণ

প্রচণ্ড মাথাব্যথা, গলাব্যথা, পেটব্যথা, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া, জ্বরে শরীরের তাপমাত্রা ১০৩-১০৪ ফারেনহাইট, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, চামড়ায় লালচে দানা দেখা দেওয়া টাইফয়েডের প্রাথমিক লক্ষণ। অনেক ক্ষেত্রেই এই জ্বর প্রথম সপ্তাহে ধরা পড়ে না। দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে জ্বর ধরা পড়ে এবং মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। ওষুধ চলা অবস্থায়ও সপ্তাহ খানেক জ্বর থাকতে পারে।

টাইফয়েডের কারণ

টাইফয়েডের অন্যতম কারণ হলো দূষিত খাবার গ্রহণ। এ ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এবং পানির মাধ্যমেও এই রোগের জীবাণু ছড়ায়। এ রোগের জটিলতাও নেহাত কম নয়। রক্তক্ষরণ, অগ্নাশয়ে প্রদাহ, মেরুদণ্ডে সংক্রমণ এমনকি কিডনিতেও বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে টাইফয়েড থেকে। 

কী করবেন

টাইফয়েড হলে কী করতে হবে সে বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজের চিকিত্সক ড. দীনা শারমিন—

রক্ত পরীক্ষা

টাইফয়েড পানিবাহিত জীবাণুর মাধ্যমে ছড়ায়। তাই টাইফয়েড হয়েছে কি না, তা বুঝতে সবার আগে অসুস্থ ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষা করতে হবে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা

সব সময় পরিষ্কার পোশাক পরতে হবে। নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। অবশ্যই হাত ভালোভাবে ধুতে হবে। ঘরের জিনিসপত্র নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহূত জিনিসপত্র আলাদা করে রাখতে হবে।

পানি, খাবারে সতর্কতা

পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। খাবার গরম করে খেতে হবে। বাইরের খাবার খেলে সব সময় সচেতন থাকতে হবে। অপরিষ্কার শাক-সবজি ও কাঁচা-ফলমূল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

বাসস্থান ও টয়লেটের সুব্যবস্থা

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে কোনোভাবেই যেন টয়লেটে ময়লা বা পানি জমে না থাকে। আক্রান্ত ব্যক্তির টয়লেট নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে খোলামেলা ও পরিষ্কার বাসায় রাখতে হবে।

টাইফয়েড হয়েছে কি না, তা যেমন রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে, তেমনি ওষুধ খাওয়ার জন্যও অবশ্যই রোগীকে একজন চিকিত্সকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।