ঠোঁটের চাই বাড়তি যত্ন

শীতে ঠোঁট যেন না ফাটে সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। ছবি: নকশা
শীতে ঠোঁট যেন না ফাটে সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। ছবি: নকশা

‘তোমার ঘুমন্ত ঠোঁটে হাসির কুঁড়ি চোখ মেলছে

তোমার অজ্ঞাতে। ’

শামসুর রাহমানের ‘ক্ষণকাল’ কবিতায় এমন বর্ণনা মেলে ঠোঁটের। সুন্দর মুখশ্রীর সঙ্গে নরম–কোমল ঠোঁট তো সবারই আকাঙ্ক্ষিত। মায়ের ঠোঁটের কোমল পরশ কপালে না পেলে সন্তানের তো ঘুমই ভাঙতে চায় না। শীতের সময় কোমল ঠোঁট বাহ্যিকভাবে একটু খসখসে হয়ে উঠতেই পারে। তাই নিয়মিত যত্নে রাখা উচিত ঠোঁট।

বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ারের রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি বলেন, ঠোঁটের ত্বক শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় বেশি কোমল। তাই শীতের শুষ্কতায় ঠোঁটের ত্বকে ক্ষতির পরিমাণও হয় বেশি। অনেকেই ভোগেন ঠোঁট ফাটার সমস্যায়। ঠোঁট ফেটে যাওয়া বা চামড়া উঠে পাতলা হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা অনেক সময় লিপজেল বা ভ্যাসলিন ব্যবহার করেও সমাধান হয় না। তবে প্রাকৃতিকভাবে খুব সহজেই এ সমস্যাগুলোর সমাধান করা সম্ভব।

পরিষ্কার ভেজা কাপড় বা তুলায় চিনি নিয়ে সেটি ঠোঁটে আলতো করে ঘষে নিলে ঠোঁটের মরা চামড়াগুলো উঠে যাবে। এরপর ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ঠোঁটে নারকেল তেল লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়। ঠোঁটের মরা চামড়া টেনে তুলবেন না কখনোই।


কোমল ঠোঁটের জন্য

● সমপরিমাণ লেবুর রস ও মধুর মিশ্রণ তৈরি করে মিশ্রণটি ভালোভাবে ঠোঁটে লাগিয়ে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এরপর পরিষ্কার, নরম একটি ভেজা কাপড় দিয়ে আলতো করে ঘষে তুলে ফেলতে হবে। এই মিশ্রণ চাইলে প্রতিদিনই ব্যবহার করতে পারেন। এমনকি দিনে একাধিকবারও ব্যবহার করা যায়।

● আধা চা–চামচ মধু এবং এক চা–চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে লাগিয়ে রাখতে পারেন প্রতিদিন।

● পাকা পেঁপে চটকে এর সঙ্গে দুধ মিশিয়ে মিশ্রণটি ঠোঁটে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১-২ দিন এটি ব্যবহার করতে পারেন।

● এক চা–চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে এক চা–চামচ চিনি মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে নিয়ে তা ঠোঁটে ৫-১০ মিনিট ধরে ঘষে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন প্রতিদিন। এরপর লিপবাম লাগিয়ে নিন। এতে ঠোঁট নরম থাকে, ঠোঁটের স্বাভাবিক গোলাপি ভাবটা বজায় থাকে।

কালচে ভাব কমাতে

● প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে গ্লিসারিন ব্যবহার করুন। এতে ঠোঁট আর্দ্র থাকে, কালচে ভাবও কমে যায়।

● কালচে ভাব কমে না আসা পর্যন্ত প্রতিদিন এক টুকরা বিট নিয়ে হালকা করে ঠোঁটে মালিশ করতে পারেন।

● প্রতিদিন শসার রস ঠোঁটে লাগাতে পারেন।

আরও কিছু

● নিয়মিত লিপবাম বা অ্যালোভেরাযুক্ত পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন। সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা এসপিএফসমৃদ্ধ লিপবাম ব্যবহার করুন।

● লিপস্টিক লাগাতে চাইলে ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ লিপস্টিক বেছে নিন।

● পর্যাপ্ত পানি পান করুন। আর্দ্রতার অভাবে ঠোঁট ফেটে যায়, আবার কখনো কখনো কালচে ভাব আসতে দেখা যায়।

● অতিরিক্ত ঠান্ডা হাওয়া থেকে বাঁচতে স্কার্ফ ব্যবহার করতে পারেন।

● জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভেজাবেন না।