তুমি নেই দুই বছর

মনের বাক্স

স্কুলের সেই দিনগুলো

গ্রামে প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে শহরের মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হওয়া। সেই ছোট্ট আমি গুটি গুটি পায়ে মা–বাবাকে ছেড়ে শহরের স্কুলে পড়তে গেলাম। রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার আগেই স্কুলের ছাত্রীনিবাসের সঙ্গে পরিচিত হওয়া।

অজানা ভয়, আশঙ্কা, একাকিত্ব ধীরে ধীরে মুছে ফেলতে পেরেছিলাম তোমাদের জন্য। আমার বড় আপুরা, আমার সহপাঠীরা, আমার ছোট আপুরা—তোমাদের পাশে পেয়ে। একসময় তীব্র ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল সেই হোস্টেল ও হোস্টেলের মানুষগুলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পরও বড্ড বেশি মনে পড়ে তোমাদের। মনে পড়ে সেই সময়গুলো। কী ভালোবাসায়, অভিমানে, খুনসুটিতে আমরা মিলেমিশে থাকতাম। আহা সেই আমরা!

শাকিনাতুন সুলতানা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

এখন আমাদের মধুর সময়

২০১৭ সালের কথা। মায়ের কথায় চারুকলায় সেই যে গেলাম আর তোমায় দেখলাম, এরপর তোমাকে স্কুলেও দেখলাম। তারপর থেকে আমি যেন তোমার প্রেমে পাগল হয়ে গেছি। তোমার সঙ্গে দিনে স্রেফ একবার দেখা করার লোভে আমি তোমার বাড়িতে টিউশনি করানো শুরু করলাম! কিন্তু তা–ও তো তুমি সায় দিতে না। নিজের মধ্যেই কেমন একটা দহনজ্বালায় জ্বলতাম। কিন্তু অবশেষে বলেই ফেললাম ভালোবাসা দিবসে, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি।’ আর তুমিও সায় দিলে। পৃথিবীটা কত আজব, তাই না? আগে ছিলাম শিক্ষক, পরে হলাম ভাইয়া, সবশেষে তোমার অযোগ্য প্রেমিক। তুমি যে কতটা অভিমানী, তা আমি আগে কখনোই বুঝিনি। এখন বেশ বুঝতে পারছি। তুমি এভাবেই চিরকাল আমার বুকের ওপর মাথা রেখে আবদার করে যেয়ো স্নেহা। আর আমিও তোমাকে এভাবে ভালোবেসে যাব, কথা দিলাম।

সাকিব, আফতাবনগর, ঢাকা।

তুমি নেই দুই বছর

তোমাকে হারিয়ে ফেলার আজ দুই বছর পূর্ণ হলো। আমি তোমাকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাইনি। তোমার ভালোবাসার পূর্ণতা দেওয়ার জন্য নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছি। তোমার অসমাপ্ত কাজগুলো করব বলে নিজেকে দিনে দিনে বড় করে তোলার চেষ্টা করছি। দুই বছর হয়ে গেল তোমাকে নিয়ম করে দেখার জন্য খালিশপুর যাওয়া হয় না। কারণ, তোমার শহরে গেলে তোমাকে ভেবে আমার চোখে জল চলে আসবে। তুমি আমাকে বলেছিলে, তুমি যদি আমার জীবন থেকে কখনো হারিয়ে যাও, তাহলে আমি যেন চোখের জল না ফেলি। আজ তোমাকে ভীষণ মনে পড়ছে, খুব কান্না পাচ্ছে। কিন্তু তোমার কথা রাখতে কান্নার অধিকারও হারিয়ে ফেলেছি।

আল আমিন, লালবাগ, ঢাকা

নামহীন অনুভূতি

এমন যদি হয়, হঠাৎ একদিন তুমি আমি মুখোমুখি। তুমি কি চিনবে আমায়? আমি হয়তো তোমাকে চিনতে পারব না। তোমার মুখটা ঝাপসা হয়ে গেছে। স্পষ্ট দেখতে পাই না।

তোমার সঙ্গে তো আমার তেমন কিছু ছিল না। না বন্ধুত্ব, না প্রেম। তবে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে একটু-আধটু যা কথা হতো। তাহলে কেন এখনো তোমাকে ভীষণ মিস করি? খুব দেখতে ইচ্ছা হয়? জানি না, আমি কিছুই জানি না!

তোমারও কি এমন হয়? কখনো মনে পড়ে আমায়? আনমনে ভাবো কি আমার কথা? জানো, কিছুদিন আগেও তোমাকে অনেক খুঁজেছি। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাইনি। কেউই তোমার সন্ধান দিতে পারেনি।

দীর্ঘ সাত বছর পর তোমাকে কেন জানি খুব মনে পড়ছে।

মেহেরুন ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ নার্স, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।

মায়ের হাতের রান্না

দীর্ঘদিন থেকে মায়ের হাতের রান্না খাওয়া হয় না। স্নেহমাখা মুখের ডাক শোনা হয় না। ভোরের আলো যেন চোখে পড়ে না। কেউ বলে না, ওঠ রে বাবা। বেলা অনেক হয়েছে!

আমি নিতান্তই অলস হয়ে যাচ্ছি। মেসে থাকি। কোনো শাসন–বারণ নেই। আর কেই-বা শাসন করবে, এখানে তো মা-বাবা কেউ নেই। খালার হাতের রান্না বেশ ভালো। তবে মায়ের রান্নার মতো নয়। মাঝে মাঝে নিজেরা রান্না করি। অথচ তুমি আমাকে আগুনের পাশেই বসতে দিতে না। ভীষণ মনে পড়ে দিনগুলো। রান্নাও শিখে ফেলেছি মা। সারা দেশে করোনার প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। সাবধানে থেকো মা। বাবা ও বোনকেও সাবধানে রেখো। কদিন পর ফিরব। সবাই মিলে তোমার হাতের রান্না খাব। তুমি চাইলে একদিন আমিও রান্না করে খাওয়াব।

সামিউল ইসলাম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।