দুই খেলোয়াড় শোনালেন খেলাধুলায় আসার গল্প

জীবনের গল্প বলছেন ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সাথিরা জাকির। ছবি: সংগৃহীত
জীবনের গল্প বলছেন ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সাথিরা জাকির। ছবি: সংগৃহীত

সদ্য শেষ হলো বিশ্বকাপ ক্রিকেট উন্মাদনা। গত বছরের জুনে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে দেশের পক্ষে প্রথম শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে এমনটাই জানান বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের ক্রিকেটার সাথিরা জাকির জেসি। গত ১১ জুন রাজধানীর আমেরিকান সেন্টারের লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত হয় ‘ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন’বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাটের পাটগ্রামে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় ও আন্তর্জাতিক ম্যাচে বাংলাদেশের ধারাভাষ্য দেওয়া প্রথম নারী সাথিরা জাকির। প্যানেল আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন আশরীন মৃধা। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় নারী বাস্কেটবল দলের খেলোয়াড়, যিনি ২০১৬ সালে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

বৃষ্টিভেজা পড়ন্ত বিকেলে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়া ৬০ জন মেয়ে শিক্ষার্থীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিজ নিজ ক্ষেত্রে দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিনিধিত্বকারী ক্রিকেটার সাথিরা জাকির ও বাস্কেটবল খেলোয়াড় আশরীন মৃধাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। সেদিন আজকের অবস্থানে উঠে আসার গল্প শোনান তাঁরা। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আলোচক আশরীন মৃধা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে গানের প্রতি আমার ভালোবাসা ছিল। পড়াশোনা আর গানের পাশাপাশি বাস্কেটবলের প্রতি একটা টানও ছিল। সেই টানটা আমার পরিবার থেকেই এসেছে। পরিবারের সাপোর্ট না থাকলে কোনো কিছুতেই এগিয়ে যাওয়া যায় না। আজকের অবস্থানে আসার পেছনে আমার পরিবারের অনেক ভূমিকা রয়েছে।’

আশরীন মৃধা বাবার হাত ধরে পা রেখেছিলেন বাস্কেটবল ফেডারেশনের প্রশিক্ষণ স্কুলে। একসময় জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। গত বছর আমেরিকান সেন্টার তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যায়। সেখান থেকে এসে কী করছেন, এসব বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি বলেন, সব খেলায় বাংলাদেশের মেয়েরা ভালো করছে। শিরোপা নিয়ে আসছে। এখনই সময় মেয়েদের খেলাধুলায় আরও আগ্রহী করে তোলা। এ ক্ষেত্রে পরিবার ও স্কুলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। নারীরা ভালো করলেই এগিয়ে যাবে দেশ বলে জানান আশরীন মৃধা।

প্রত্যন্ত এলাকায় জন্ম হলেও ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ভালো লাগা ছিল। সেই ভালো লাগা থেকে স্বপ্ন দেখতেন একদিন ক্রিকেটার হবেন। লালমনিরহাটের গ্রামটিতে জেসি যখন ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখতেন, তখন তাঁর চারপাশে কেউ চিন্তা করেনি মেয়েরা ক্রিকেট খেলবে। ছোট্ট গ্রাম থেকে কীভাবে জাতীয় দলের খেলোয়াড় হলেন, সেই গল্প শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরেন সাথিরা জাকির জেসি। তিনি বলেন, অনেক বাধা আসবে। বাধা পেয়ে থেমে থাকলে হবে না। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আর নারীরা এগিয়ে গেলেই দেশও এগিয়ে যাবে। অনুষ্ঠানের শেষভাগে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা নিয়ে একটি সিনেমা দেখানো হয়।