নকল 'ভিরতাকো'য় কৃষকের মাথায় হাত
কক্সবাজারের চকরিয়ার কোনাখালী ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার হোসেন (৪০) চলতি মৌসুমে দুই একর জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। প্রতি মৌসুমে কানিপ্রতি এক হাজার ৮০ কেজি ধান হলেও এবার হয়েছে ৭০০ কেজির কম। মাজরা পোকা সব শেষ করে দিয়েছে। পোকা দমনে ওষুধও ছিটিয়েছেন, কিন্তু কাজ হলো না। ওষুধ যে নকল তা তিনি জানতেন না। পোকায় খেয়ে চিটা হয়ে গেছে বেশির ভাগ ধান। ফলে লাভ বাদ দিয়ে আসল উঠে আসে কি না সেই চিন্তায় অস্থির তিনি। একই অবস্থা কৃষক মোহাম্মদ হোসেন, শহীদুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান, আবু তাহেরসহ আরও অনেকের।
কৃষকেরা জানান, কয়েক বছর ধরে এই এলাকার কৃষকেরা ধানখেতে মাজরা পোকা নিধনে সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেডের ভিরতাকো নামের ওষুধ ব্যবহার করে আসছেন। ওষুধটি ব্যবহার করে কৃষকেরা সুফলও পেয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে ভেজাল ভিরতাকোয়। বেতুয়া বাজার ও পুরইত্যাখালীর কয়েকটি দোকানে সিনজেনটা কোম্পানির ভিরতাকোর পরিবর্তে নকল ভিরতাকো বিক্রি করছে।
মধ্যম কোনাখালী এলাকার কৃষক জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘নকল ভিরতাকোর লোগো ও প্যাকেট আসলটির মতো হওয়ায় আমরা চিনতে পারিনি। ব্যবহার করার পর মাজরা পোকা নিয়ন্ত্রণ দূরের কথা উল্টো ধানের থোড়গুলো চিটা হয়ে গেছে।’
জানতে চাইলে সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেডের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. জিয়াউল হক বলেন, সিনজেনটা কোম্পানির ভিরতাকো ওষুধটি নিজস্ব লোকের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। কিন্তু একটি অসাধু চক্র সিনজেনটা কোম্পানির সুনাম নষ্ট করার জন্য নকল ভিরতাকো বাজারে বিক্রি করছে। যারা এই কোম্পানির নামে নকল ওষুধ বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ বলেন, ‘একটি চক্র মাজরা পোকা নিধনের নকল ওষুধ ভিরতাকো বাজারে বিক্রি করে কৃষকদের প্রতারিত করছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। যাঁরা নকল ভিরতাকো বিক্রি করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’