না না, বলা যাবে না

সঙ্গীর সঙ্গে মনোমালিন্যের বিষয়টি সবাইকে জানানো ঠিক নয়। প্রতীকী ছবি।
সঙ্গীর সঙ্গে মনোমালিন্যের বিষয়টি সবাইকে জানানো ঠিক নয়। প্রতীকী ছবি।

অনেকেই খুব কাছের বন্ধুর সঙ্গে জীবনের সব খুঁটিনাটি শেয়ার করেন। নারীর ক্ষেত্রে কাছের বন্ধুকে সবকিছু খুলে বলার ঘটনা বেশি ঘটে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বামীর চেয়ে অনেকেই তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে বেশি ভালোবাসেন। বন্ধুর কাছে প্রথম প্রেম, ভালোবাসা বা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথাও বলে ফেলেন। কিন্তু আরেকজনের কাছে সবকিছু অতিরিক্ত বলে ফেলার এ অভ্যাস কি ভালো? বিশেষজ্ঞেরা বলেন, কিছু বিষয় আছে, যা খুব বেশি ঘনিষ্ঠ হলেও হুট করে বলে ফেলা ঠিক নয়। তেমনই কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে জেনে নিন:

সঙ্গীর সঙ্গে মনোমালিন্য
সম্পর্কের মধ্যে কিছু খারাপ সময় আসতে পারে। দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি, মনোমালিন্যের ঘটনাও ঘটতে পারে। কিন্তু প্রতিটি ঘটনার খুঁটিনাটি বন্ধুকে বলে দেওয়া বা অভিযোগ করা ঠিক নয়। বড় ধরনের কোনো সমস্যা না হলে সবকিছু বন্ধুর কাছে জানানো ঠিক হবে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। এর চেয়ে বরং ধৈর্য নিয়ে নিজের সঙ্গীর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে সমস্যা সমাধান করাই ভালো। অনেকেই এ ধরনের পরিস্থিতিতে ফোন করে বন্ধুকে সব ঘটনা জানিয়ে দেন। এতে বন্ধুর মনে সঙ্গী সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি হতে থাকে।

খারাপ সময়
জীবনে অনেক দুঃসময় আসতে পারে। বন্ধুকে বললে হয়তো অনেক সময় হালকা হওয়া যায়। কিন্তু সব ঘটনাই বন্ধুকে জানাতে হবে—এমন কথা নেই। খারাপ সময়ের কথা অন্যকে বলতে গিয়ে আরও বাজে পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। একটা নির্দিষ্ট সময় পরে নিজেকে কীভাবে সামলাতে হবে, তা নিজেরই শিখে নেওয়া উচিত।

অভিযোগ
কেউ কিছু বললেই সে বিষয়ে বন্ধুর কাছে অভিযোগ করা ঠিক নয়। অনেকেই অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কথা বলতে পারে। সে বিষয়ে কারও কাছে অভিযোগ না করে নিজেই সামলানোর চেষ্টা করা উচিত।

পারিবারিক সমস্যা
পরিবারে বিভিন্ন সময় সমস্যা তৈরি হতে পারে। পরিবারের সব সমস্যা অপরের সঙ্গে আলোচনা করা ঠিক নয়। মনে রাখতে হবে, কোনো পরিবারই নিখুঁত নয়। পারিবারিক সমস্যা নিজেদেরই মিটিয়ে নেওয়া ভালো। অন্যের কাছে সমাধান চাইতে গেলে পরিবারের বিরুদ্ধে বাজে বা নেতিবাচক কথা শুনতে হতে পারে। এতে নিজের কাছে খারাপ লাগবে। তাই পারিবারিক বিষয় পরিবারেই সীমাবদ্ধ থাকলে ভালো।

ভালো কাজ
ঢাকঢোল বাজিয়ে কাউকে দান করার বিষয়টি প্রচার করলে এর উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। তাই যখন ছোটখাটো কোনো সহযোগিতামূলক কাজ করবেন, চুপিসারে করাই ভালো। নিজের কাজগুলোর কথা গর্ব করে অন্যদের কাছে জানানোর বিষয়টি সবাই ভালোভাবে নাও নিতে পারে। আপনার ভালো কাজগুলো নিজে থেকেই একসময় অন্যদের চোখে পড়বে।

দাম্পত্য
অনেকের দাম্পত্য জীবনে নানা সমস্যা থাকতে পারে। সমস্যাগুলো নিয়ে নিজেদের সমাধানের পথে হাঁটা উচিত। মাঝখানে অন্য কাউকে টেনে আনলে তাতে ঝামেলা বাড়ে। কোনো সন্দেহ বা উদ্বেগ তৈরি হলে ঘনিষ্ঠ কারও কাছে সে বিষয়ে শুনে নিতে পারেন, তবে বিষয়টিতে ভারসাম্য রাখতে হবে। দাম্পত্য সম্পর্কের বিস্তারিত অন্যদের কাছে না বলাই ভালো। ব্যক্তিগত জীবন ব্যক্তিগত পর্যায়েই রাখুন। যৌনজীবনের খুঁটিনাটি নিয়ে অন্যের সঙ্গে গল্প করা কখনোই উচিত নয়।

অন্যদের সম্পর্কে বাজে কথা
বন্ধুদের সঙ্গে যতই রাগারাগি হোক বা আঘাত আসুক, দুজনের মধ্যকার পার্থক্য দূর করতে চেষ্টা করুন। দুজনের মধ্যকার সম্পর্কের বিষয়টি সবার কাছে বলে বেড়ানোর প্রয়োজন নেই। এতে সম্পর্ক আরও খারাপ হবে। অন্যদের সম্পর্কে কিছু বলার আগে বা গালমন্দর চেয়ে সংযত হওয়া ভালো। এতে নিজের মর্যাদা বাড়ে। তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।