পাঠকের প্রশ্ন: আইন

পাঠকের প্রশ্ন বিভাগে আইনগত সমস্যা নিয়ে নানা রকমের প্রশ্ন পাঠিয়েছেন পাঠকেরা। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি সানজানা নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এবার।

মিতি সানজানা

প্রশ্ন: আমি একজন উদ্যোক্তা। প্রায় তিন বছর ধরে আমি একটি বুটিক হাউস চালাই। এই ব্যবসায় আমার সঙ্গে আরও দুজন অংশীদার (পার্টনার) যুক্ত হতে চাইছেন। আমরা সবাই মিলে বুটিক হাউসটিকে একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে চাচ্ছি। আমাদের একজন কোম্পানি গঠনের কথা বলছেন। আমরা জেনেছি, কোম্পানি গঠন করা নাকি খুব ঝক্কির কাজ। এ ক্ষেত্রে আমার প্রশ্ন, কোম্পানি গঠনের জন্য কী কী আইনি পদ্ধতি মেনে চলতে হবে?

সাবাহ

বারিধারা, ঢাকা

উত্তর: একজন নতুন বিনিয়োগকারীকে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরণ করে ব্যবসা শুরু করতে হয়। প্রথমে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিস অ্যান্ড ফার্মসে নতুন কোম্পানি নিবন্ধন করাতে হয়। কোম্পানি আইন ও অন্যান্য বিধি অনুসারে এই প্রতিষ্ঠান কোম্পানি, সমিতি ও অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশন দিয়ে থাকে।

আবেদনকারীকে সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হয়। আপনি যেহেতু তিন বছর ধরে ব্যবসা করছেন, তাই আমি ধরে নিচ্ছি আপনার ট্রেড লাইসেন্স আছে।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি খোলার নিয়ম

কোম্পানি খোলার আগে প্রথমেই আপনাদের প্রস্তাবিত নামটি দিয়ে একটি নেমক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট তুলতে হবে। যদি আপনার প্রস্তাবিত নামটি খালি থাকে, তবে কোম্পানির নাম নিবন্ধন করার জন্য আপনাকে সেখান থেকে নাম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন সম্পন্ন হবার পর এবার নির্ধারিত ফি ব্যাংকে জমা প্রদান করে পছন্দের নামটি নিবন্ধন করতে হবে।

নাম নিবন্ধনের পরে এবার আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে। তা হলো আপনার কোম্পানির জন্য মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন এবং আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করতে হবে। মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন হলো কোম্পানির উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি সম্পর্কে বলা থাকে; এতে ব্যবসার নাম, ধরন, লক্ষ্য, মূলধনের পরিমাণ ইত্যাদি বিষয়ের উল্লেখ থাকে। কীভাবে কোম্পানি পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচিত হবে, কোম্পানির সাধারণ সভা এবং বিশেষ সভা কীভাবে কখন সম্পাদিত হবে, কীভাবে নতুন সদস্য নেওয়া হবে, কীভাবে কোন সদস্যকে বহিষ্কার করা হবে, কীভাবে লভ্যাংশ বণ্টন করা হবে ইত্যাদি বিষয় আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশনে বিশদভাবে বর্ণনা করতে হবে। এ ব্যাপারে আপনাকে কোম্পানিবিষয়ক অভিজ্ঞ একজন আইনজীবীর পরামর্শ নিতে হবে।

এসব প্রস্তুত হওয়ার পর প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির নিবন্ধনের আবেদনপত্রটি সংগ্রহ করতে হবে, উক্ত আবেদনপত্রটি যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে এবং আনুষঙ্গিক কাগজপত্রগুলো প্রস্তুত করতে হবে। এবার পূরণ করা আবেদনপত্র ও আনুষঙ্গিক কাগজপত্রগুলো নিয়ে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিস অ্যান্ড ফার্মসের অফিসে জমা দিতে হবে। কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর যাচাই–বাছাই করে সেখান থেকে আপনাকে কোম্পানির নিবন্ধনের জন্য সুনির্দিষ্ট ফি ধার্য করে দেবে। এবার কোম্পানি নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় ফি নির্দিষ্ট ব্যাংকে জমা দিতে হবে।

সেখানে আরও কিছু আনুষঙ্গিক কাজ আছে, তা আপনাকে সম্পাদন করতে হবে। পরবর্তীকালে নিবন্ধক পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে দেখবেন এবং আপনার আবেদনটি উপযুক্ত মনে হলে তাঁদের বইয়ে আপনার নতুন কোম্পানির নাম তালিকাভুক্ত করবেন। একই সঙ্গে আপনাকে কোম্পানির নিবন্ধন সার্টিফিকেট প্রদান করে থাকবেন। নিবন্ধন সার্টিফিকেট পাওয়ার পরপরই প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম আপনি শুরু করতে পারবেন।

ঘোষণা

পাঠকের প্রশ্ন, বিশেষজ্ঞের উত্তর

পাঠকের প্রশ্ন পাঠানো যাবে ই–মেইলে, ডাকে এবং প্র অধুনার ফেসবুক পেজের ইনবক্সে। ই–মেইল ঠিকানা: [email protected]

(সাবজেক্ট হিসেবে লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’)

ডাক ঠিকানা: প্র অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫। (খামের ওপর লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’)

ফেসবুক পেজ: fb.com/Adhuna.PA