ভয়, সে অনেকেই পায়। কারণে–অকারণে পায়। হতে পারে সেই ভয়ের উৎস অতি সামান্য কোনো বস্তু। সেই তালিকায় আছেন রথী–মহারথী হলিউড তারকারাও। সবার মতো তাঁদেরও মনের গহিনে লুকিয়ে আছে ভয়। সে সম্পর্কে জানলে আপনার মনে হতেই পারে, ‘আমি তো ঢের সাহসী!’ কারও কারও ভয় আবার সময়ের সঙ্গে বেড়ে রূপ নিয়েছে ফোবিয়ায়।
চুইংগামে ভয় অপরাহ্ উইনফ্রের
চুইংগাম কি কারও ভয়ের কারণ হতে পারে? বহুগুণে গুণান্বিত অপরাহ্র ভয় চুইংগামে। তিনি নিজে তো সহ্য করতে পারেনই না, এমনকি তাঁর প্রোডাকশন কোম্পানি হার্পো প্রোডাকশনসের সব কর্মকর্তা-কমর্চারীকে চুইংগাম খাওয়া আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করেছেন তিনি। অন্যদিকে তাঁর দাদির ছিল চিবানো চুইংগাম জমানোর শখ। সেখান থেকেই চুইংগামের প্রতি এই ভয়ের সূত্রপাত বলে তাঁর ধারণা। চুইংগামভীতিকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় সিক্লেফোবিয়া।
এলিয়ট পেইজ ভয় পান টেনিস বল
পুরো বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা টেনিস। কিন্তু সেই টেনিস খেলাও আরামে দেখতে পারেন না এলিয়ট। টেলিভিশনে টেনিস খেলা চালু হলেই তিনি উঠে যান কিংবা চ্যানেল পাল্টে ফেলেন, অথবা বেরিয়ে পড়েন ঘর থেকে।
শুকনো কাগজ ভয় পান মেগান ফক্স
টিভি তারকা স্ক্রিপ্ট পড়তে ভয় পান, এমনও হয় নাকি? মেগান ফক্সের সঙ্গে অবশ্য ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই এমনটি হচ্ছে। শুকনো কাগজ দেখলেই ভয় পান তিনি। এ জন্য স্ক্রিপ্ট পড়ার সময় তাঁর সঙ্গে পানি থাকে। কাগজ ধরতে গেলেই পানি দিয়ে ভালো করে হাত ভিজিয়ে নেন, যাতে তাঁকে শুকনো কাগজ ধরতে না হয়। এটাকে বলে পেপারোফোবিয়া।
নিকোল কিডম্যানের ভয় প্রজাপতিতে
প্রজাপতির রঙিন পাখা কতই না সুন্দর! কিন্তু নিকোল কিডম্যানের বেলায় তা পুরো উল্টো। প্রজাপতি দুই চোখে দেখতে পারেন না তিনি। হলিউড অভিনেত্রী লেপিডোপ্টেরোফোবিয়ায় আক্রান্ত, এর মানে প্রজাপতি বা মথের ভয়। প্রজাপতি দেখলেই তাঁর অস্থির লাগে। তাঁর শুটিং সেটে যাতে কোনো প্রজাপতি না থাকে, সে জন্য একজন বডিগার্ড নিয়োগ দেওয়া আছে।
স্কারলেট জোহানসনের আছে অর্নিথোফোবিয়া
অনেকের দিনের শুরু হয় পাখির কোলাহলে। কিন্তু হলিউড অভিনেত্রী স্কারলেট জোহানসনের জন্য পাখির ডাক তো সুমধুর নয়ই, বরং অস্বস্তির কারণ। তাঁর রয়েছে পাখির ভয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, এর নাম অর্নিথোফোবিয়া।
ম্যাথু ম্যাকুনাহের ক্লেথ্রোফোবিয়া
ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ইন্টারস্টেলার’ সিনেমা যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের হয়তো মনে আছে ম্যাথু ম্যাকুনাহের কথা। তাঁর চরিত্র কুপার ব্ল্যাকহোলে আটকা পড়েন। চরিত্রের মতো ম্যাথু ম্যাকুনাহে নিজেরও প্রচণ্ড আটকা পড়ার ভয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে ডাকা হয় ক্লেথ্রোফোবিয়া নামে। এ কারণে বড় কোনো টানেলের ভেতর দিয়ে গাড়ি চালাতে ভয় পান তিনি।
অ্যাডেলের ভয় গাংচিলে
খুব ছোট থাকতে সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে গিয়ে একবার গাংচিলের আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন সংগীততারকা অ্যাডেল। সেই যে ভয় ঢুকে গেল, সেটা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন। সেই ভয় দিনে দিনে বড়সড় হয়ে এখন পরিণত হয়েছে ফোবিয়ায়।
উইল স্মিথের আছে অ্যাকুয়োফোবিয়া
না, ভাববেন না তাঁকে কুকুরে কামড় দিয়েছিল কিংবা পানি দেখলেই আঁতকে ওঠেন তিনি। পানি নিয়ে তাঁর ভয় আছে বটে, কিন্তু তা সাধারণ পানি দেখলে নয়। বরং তাঁর ভয় জলাশয় নিয়ে। বড় কোনো জলাশয় দেখলে তিনি ভয়ে আঁতকে ওঠেন।
হেলিকপ্টার ভয় পান মেরিল স্ট্রিপ
হলিউডের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপের হেলিকপ্টারে চড়ার ভয়। যে কারণে সিনেমার শুটিংয়ে উঁচু কোনো জায়গায় যেতে হলে তিনি গাড়িতে করে যান, হেলিকপ্টারে নয়। আরেক হলিউড অভিনেতা ভিগো মার্টেনসনেরও হেলিকপ্টারভীতি আছে। ‘লর্ড অব দ্য রিংস’ সিনেমার শুটিং করতে পাহাড়ে চড়ার সময় সবাই হেলিকপ্টার ব্যবহার করলেও তিনি নিজে যোগ দিয়েছিলেন পাহাড় বেয়ে।
ক্লাউনে ভয় জনি ডেপের
জনি ডেপকে ব্যাটম্যানের বিখ্যাত ভিলেন ‘জোকার’ হিসেবে কম কল্পনা করা হয়নি। কিন্তু বারবারই তিনি তা না করে আসছেন। কারণটা খুবই সাধারণ, ক্লাউনদের প্রচণ্ড ভয় পান তিনি। ভাগ্যিস, জনি ডেপের এই ভয় ছিল। না হলে হোয়াকিন ফিনিক্সের আর জোকার চরিত্রে অভিনয় করে অস্কার পকেটে পোরা হতো না।
কেটি পেরির ভয় অন্ধকারে
মার্কিন গায়িকা কেটি পেরি ভয় পান অন্ধকার। অন্ধকারে তিনি থাকতেই পারেন না। এতটাই ভয় পান যে তাঁর বাড়ির প্রতিটি লাইট সারা রাত জ্বালানো থাকে, যাতে কোনো অন্ধকার প্রবেশ না করতে পারে। এর নাম নিক্টোফোবিয়া।