‘প্রিয় বন্ধু’ বইয়ের যত্ন

সে আপনি যা–ই বলুন না কেন, ই-বুক আর বই কখনোই এক নয়। তুলনাই চলে না! বই পড়া ভারি মজা। বলা হয়, যাঁর বই পড়ার অভ্যাস আছে, বাকি জীবনে তাঁর আর একাকিত্বে ভোগার সম্ভাবনা নেই। অনেকের বাড়িতেই থাকে বইয়ের বড় কালেকশন। সেটি ওই ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব, জ্ঞান, রুচি, আভিজাত্য—নানা কিছুর পরিচয় বহন করে। বই মানুষের সেরা বন্ধু। সেই সেরা বন্ধুর যত্ন নেওয়া জরুরি। জেনে নেওয়া যাক কীভাবে নেবেন বইয়ের যত্ন।

‘প্রিয় বন্ধু’র যত্নে যা করবেন

১. আপনার বইয়ের পরিমাণ বুঝে সেগুলোর জন্য কিনুন সুন্দর একটা বুকশেলফ। যদি সেই বুকশেলফে কাচের দরজা থাকে, তাহলে আরও ভালো। কেননা, তাতে ধুলা ভেতরে ঢুকতে পারবে না। আর আপনিও বাইরে থেকে বইগুলো দেখতে পাবেন।

২.  বইগুলো আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সাজিয়ে রাখুন। একাডেমিক বা অফিশিয়াল বইগুলো রাখুন সবার সামনে। কেননা, সেগুলো প্রায়ই নাড়াচাড়া করার দরকার পড়ে। এরপর উপন্যাস, গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনি, রান্নার বই, ছবির বই—এভাবে সাজিয়ে রাখতে পারেন। অথবা লেখকের নামানুসারেও রাখতে পারেন। এভাবে বই রাখলে প্রয়োজনের সময় যেকোনো বই খুঁজে পেতে সুবিধা হবে।  

‘প্রিয় বন্ধু’ বইয়ের যত্ন নিন

৩. প্রিয় বইগুলো বেশি দিন ভালো রাখতে মলাট দিয়ে নিন। বইটি পড়ার সময় ‘প্রচ্ছদ’ যাতে মিস না করেন, চেহারা দেখতে পান, সে জন্য স্বচ্ছ পেপারের মলাট লাগিয়ে নিতে পারেন।

৪. বইয়ের ভেতর কচি নিমপাতা, তেজপাতা বা শুকনা ল্যাভেন্ডার ফুলের গুচ্ছ রাখতে পারেন। বইয়ের তাকে নিয়মিত দূরত্বে ন্যাপথলিন বা কর্পূর রাখতে পারেন। সেসবের গন্ধে পোকা ধরবে না।

৫. কোনো এক ঝলমলে রোদের দিনে বইগুলোকে রোদে দিতে পারেন। এতে স্যাঁতসেঁতে ভাব চলে যাবে। অনেকদিন ভালো থাকবে বইগুলো। মাসে একবার শুকনা কাপড় দিয়ে বইগুলো মুছে রাখুন।

কোনো এক ঝলমলে রোদের দিনে বইগুলোকে রোদে দিতে পারেন

যা করবেন না

বই কখনো ভেজা বা নোংরা হাতে ধরবেন না। আশপাশে খাবার রেখে বই পড়বেন না। আর সেই বই যদি হয় ধার করা, তাহলে তো আরও নয়। বইয়ের ভেতর রাসায়নিক ব্যবহার করা একদমই উচিত নয়। এতে আপনি যখন বইটি পড়বেন, তখন এই বিষাক্ত রাসায়নিক আপনার ক্ষতি করতে পারে। পড়ার সময় কাগজ ভাঁজ করে রাখার অভ্যাস বন্ধ করুন, বরং বুক মার্ক ব্যবহার করুন। বুক মার্ক ব্যবহারের সময় হালকা কোনো উপাদান ব্যবহার করুন। কাগজের টুকরা, পালক, রেশমের ফিতা বা শাটিনের কাপড় হতে পারে ভালো বিকল্প। বাজারে এখন নকশা করা সুন্দর সুন্দর বুক মার্ক পাওয়া যায়।

অনেকের আবার বইয়ের ভাঁজে গোলাপ রাখার অভ্যাস আছে

অনেকের আবার বইয়ের ভাঁজে গোলাপ রাখার অভ্যাস আছে। এতে বইয়ের কাগজের রং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বই ধার নিলে ঠিক সময়ে ফেরত দিন। পারলে মলাট দিয়ে ফেরত দিন। ধার দিলে বইয়ের নাম, কাকে ধার দিচ্ছেন তার নাম ও তারিখ দিয়ে লিখে রাখুন। এতে বই উদ্ধারের সম্ভাবনা বাড়বে। কেননা, বই নিয়ে জনপ্রিয় উক্তিগুলোর একটি হলো, ‘যে বই ধার দেয় আর যে বই ফেরত দেয়, উভয়েই বোকা!’

ছবি: পেকজেলসডটকম