পড়ালেখাটা আবার শুরু করেছিলাম বন্ধুর অনুপ্রেরণায়

আজ আগস্ট মাসের প্রথম রোববার—বন্ধু দিবস। স্বপ্ন নিয়ের আহ্বানে পাঠকেরা লিখে পাঠিয়েছেন তাঁদের সেই সব বন্ধুর কথা, যাঁরা দুঃসময়ে বাড়িয়েছেন সাহায্যের হাত।

দুই বন্ধু
ছবি: সংগৃহীত

আমার ছোটবেলার সবচেয়ে কাছের বন্ধুদের মধ্যে একজন শামীম। দুজন একসঙ্গে বেড়ে উঠেছি, আমাদের বাড়িও একই গ্রামে। সব বন্ধু মিলে একসঙ্গে আমরা স্কুলে যেতাম। শামীম সব সময় আমার পাশে থাকত। এমনকি ছোটবেলা থেকে মাঝেমধ্যে আমার বাড়ি চলে আসত ঘুমানোর জন্য। দুই বন্ধু মিলে গভীর রাত পর্যন্ত গল্প করতাম। একসঙ্গে পড়াশোনা, গোল্লাছুট খেলা, কানামাছি খেলা, ঘণ্টার পর ঘণ্টা পুকুরে সাঁতার কাটা, সেসব স্মৃতি আজও মনে জীবন্ত হয়ে আছে।

অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় ভীষণভাবে ক্রিকেট খেলার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম। এককথায় বলতে গেলে পড়ালেখা থেকে অনেকটা দূরে সরে গিয়েছিলাম। শামীম কিন্তু আমার সঙ্গে খেলাধুলার পাশাপাশি নিজের পড়ালেখাটাও ঠিক রেখেছিল। একপর্যায়ে সে আমার অবস্থা দেখে ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়ে। আমাকে পরামর্শ, সদুপদেশ দিতে শুরু করে। প্রথমে আমি তার কথাগুলো অতটা গুরুত্ব দিতাম না। কারণ, খেলাধুলা করা ছাড়া তখন আর আমার কিছুই ভালো লাগত না। তারপর আস্তে আস্তে শামীম আমাকে আরও গভীরভাবে বোঝাতে লাগল, পড়ালেখার প্রতি মনোনিবেশ করার জন্য চাপ দিতে লাগল।

একসময় আমি প্রিয় বন্ধুর কথায় গুরুত্ব দিতে শুরু করি, আবার ফিরি পড়ার টেবিলে। সেই যে শুরু, এরপর আর কখনো পড়ালেখায় ফাঁকি দিইনি। এখন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। শামীমের সেই অবদানের কথা আমার সারা জীবন মনে থাকবে। ওই সময় সে আমার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছে। কখনো কখনো ওকে বকাঝকাও করেছি। তবু সে আমার পেছনে লেগে ছিল। শামীম এখন একটা সরকারি কলেজে পড়ছে। আমাকে নিয়ে সব সময় গর্ব করে। স্থানের দূরত্ব থাকলেও দুজনের মনের দূরত্ব তৈরি হয়নি একটুও। আমরা সব সময় একে অপরের খোঁজখবর নিই, বিভিন্ন উৎসব অথবা ছুটিতে বাড়িতে এসে আবার আগের মতো আড্ডা আর খেলাধুলায় মেতে উঠি।

স্বপ্ন নিয়েতে লেখা পাঠাতে চাইলে যোগাযোগ করুন ফেসবুক পেজে। ফেসবুক পেজের লিংক এখানে