বর্ষার পাদুকা-বৃত্তান্ত

মেয়েদের পাশাপাশি ছেলে ও শিশুদের জন্যও বর্ষার উপযোগী নানা রকমের বাহারি জুতা-স্যান্ডেল-চপ্পল পাওয়া যায় বাজারে।
মেয়েদের পাশাপাশি ছেলে ও শিশুদের জন্যও বর্ষার উপযোগী নানা রকমের বাহারি জুতা-স্যান্ডেল-চপ্পল পাওয়া যায় বাজারে।

ঝিরিঝিরি বৃষ্টি প্রায় প্রতিদিনই হচ্ছে। কিন্তু দিনমান আলসেমি করে ঘরে বসে বসে বর্ষার বাদলধারায় মন ভেজানোর সুযোগ কই? প্রতিদিন কত কাজ। রোজা যাচ্ছে, ঈদ আসছে, আছে ঈদের কেনাকাটা! আর শ্রাবণ তো কেবল শুরু। এ বর্ষায় কর্মমুখর পথচলা আরও বেশি গতিময় করতে জেনে নিন বর্ষার পাদুকা বৃত্তান্ত।
জুতা
বর্ষায় জুতা নির্বাচন একটু ঝামেলারই বটে। সাধারণ চামড়ার জুতা বৃষ্টিজলে দ্রুত নষ্ট হয়। আর বর্ষা মানেই পায়ের নিচে নোংরা কাদাজল। কিন্তু এখন বাজারে আছে নানা রকম কৃত্রিম চামড়ার জুতা। আছে নরম রাবার বা সিনথেটিক লেদারের জুতাও। বর্ষাকালের জন্য বিশেষ ডিজাইনের জুতা আছে অনেক নামী ব্র্যান্ডেরও।
বর্ষায় শিশুদের জুতার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা দরকার। বৃষ্টিতে পা ভিজে অনেক সময় ফুসকুড়ি, চুলকানির মতো নানা ধরনের চর্মরোগ হতে পারে। তাই স্কুলগামী শিশুদের কথা মাথায় রেখে বাজারে এসেছে পানিরোধক জুতা। প্লাস্টিকের তৈরি এসব জুতা বিভিন্ন বড় জুতার দোকানসহ বাটা, গ্যালারি অ্যাপেক্সেও পাওয়া যাবে। এসব জুতা দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি আরামদায়কও বটে।
নারীদের মধ্যে অনেকেই বর্ষায় হালকা হিলের জুতা পছন্দ করেন। মেট্রো শপিং মলে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা নুশরাত বলেন, ‘সব সময় চপ্পল পরলেও বৃষ্টিতে সামান্য হিল বেশি পরি। এতে নোংরা কাদা পানি পায়ে কম লাগে।’ এখন খোলামেলা জুতার কদর বেশি। বর্ষায়ও জুতা খোলামেলা হওয়াই ভালো। তবে খোলামেলা বা আঁটসাঁট যেমনই নির্বাচন করুন না কেন, নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে পা ও পাদুকা উভয়ই।

চপ্পল ও স্যান্ডেল

গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত সব ঋতুতেই চপ্পল পছন্দ অনেকেরই। বর্ষার কথা মাথায় রেখেই  বাজারে এসেছে রাবার, রেক্সিন ও স্পঞ্জের তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের  চপ্পল এবং স্যান্ডেল। এগুলো পরতে যেমন আরামদায়ক, তেমনি পানিতে এর ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয় না, আবার দামেও সাশ্রয়ী।

এখন অনেক তরুণ-তরুণীকেই আটপৌরে সাজের সঙ্গে নানা রকমের বাহারি চপ্পল পরতে দেখা যায়। বর্ষায় যেহেতু উজ্জ্বল রঙের পোশাক বেশি পরা হয়, তাই চপ্পল ও স্যান্ডেলও তৈরি হচ্ছে বাহারি রঙে। বাজার পাবেন বিভিন্ন রঙের চপ্পল ও স্যান্ডেল। বিশেষ করে গোলাপি, কালো, বেগুনি, সাদা, সবুজ ইত্যাদি রঙের চলই বেশি। এসব স্যান্ডেলের নকশাও নজর কাড়া। ফুল, রেখা ও জ্যামিতিক নকশা বেশ কয়েক বছর ধরেই জনপ্রিয়, সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্লাস্টিকের সঙ্গে ভেলভেটের কাজ করা স্যান্ডেল। মেয়েদের স্যান্ডেলে ছোট ছোট চুমকি ও পুঁতির সামান্য কাজ বরাবরের মতো জনপ্রিয়।

কেনাকাটা

বর্ষায় ব্যবহার উপযোগী জুতা পাবেন আশেপাশের বিভিন্ন জুতার দোকানে। তবে অপেক্ষাকৃত কম দামে বিভিন্ন রাবারের সোলের বৈচিত্র্যময় জুতা পাবেন নিউমার্কেট, চাঁদনিচক, এলিফ্যান্ট রোড, মিরপুর, গুলিস্তানের বিপণিবিতানগুলোতে। ব্র্যান্ডের জুতা কিনতে চাইলে চলে যেতে পারেন বসুন্ধরা সিটি, রাপা প্লাজা, ইস্টার্ন প্লাজা, মেট্রো শপিং মলসহ এ ধরনের বিপণিবিতানে। এ ছাড়া বাটা, গ্যালারি অ্যাপেক্স, বে এম্পোরিয়ামসহ নানা ব্র্যান্ডের নিজস্ব আউট-লেটে তো বাহারি জুতার সমাহার।

নিউমার্কেট, চাঁদনিচক, মেট্রো শপিং মলসহ বিভিন্ন জুতার দোকানগুলোতে মেয়েদের জন্য কৃত্রিম চামড়া ও রেক্সিনের তৈরি জুতার দাম পড়বে ৪৫০ থেকে ২৭০০ টাকার মধ্যে। শিশুদের জন্য  পানিরোধক জুতা পাওয়া যাবে ৮০০ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে। গ্যালারি অ্যাপেক্সে ছেলেদের জুতাগুলোর দাম ১৩৫০ থেকে শুরু।  বর্ষায় ব্যবহার উপযোগী লেদার সিনথেটিক মেশানো কেডস পাওয়া যাবে ৭০০ থেকে ২৭০০ টাকার মধ্যে।

বৈচিত্র্যময় নকশা করা বিভিন্ন রঙের চপ্পল ও স্যান্ডেল পাওয়া যাবে নিউমার্কেট ও চাঁদনী চকে। নকশা ও মানের ওপর ভিত্তি করে রাবার ও স্পঞ্জের জুতার দাম ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশীয় ফ্যাশন হাউস ও ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে পাবেন পছন্দমতো চপ্পল ও স্যান্ডেল। তাই আর দেরি নয়, বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলার জন্য দ্রুত কিনে ফেলুন বর্ষার বাহারি পাদুকা।