কক্সবাজারের সাগরদ্বীপ কুতুবদিয়া উপজেলার দক্ষিণ ধুরুং ও লেমশীখালী ইউনিয়নের মধ্যভাগে পিলটকাটা নদী বা খাল। খালের উত্তর পাশে লেমশীখালী ইউনিয়নের মতিরবাপের পাড়া। আর দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের বইদ্যারপাড়া, কুতুব দরবার শরিফ ও সিকদারপাড়া গ্রাম। এই চার গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ জরুরি প্রয়োজনে এপার–ওপার হচ্ছে নদীর ওপর তৈরি ঝুঁকিপূর্ণ একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে। বিশেষ করে স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসাপড়ুয়া ছেলেমেয়েদের সাঁকো পারাপার নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেকে পা পিছলে নদীতে পড়ে আহত হচ্ছে। এর পরও খালের ওপর একটি পাকা সেতু তৈরি হচ্ছে না।
মতিরবাপের পাড়ার কলেজছাত্রী উম্মে হাবিবা বলেন, জন্মের পর থেকে এই বঁােশর সঁাকো দিয়ে পারাপার করছি। এই গ্রামে কোনো ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় সাঁকো পার হয়ে অন্য গ্রামে যেতে হচ্ছে, বিশেষ করে ছোট ছেলেমেয়েদের সঁাকো পারাপারে চরম ঝুঁকি নিতে হয়। এক মাস আগে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী সাঁকো থেকে খালে পড়ে আহত হয়েছে। তা ছাড়া বয়স্ক নারী–পুরুষদেরও একই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আযাদ বলেন, দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের বইদ্যার পাড়া, কুতুব শিরফ দরবার, সিকদারপাড়া এলাকায় প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের বসবাস।
এখানে পূর্ব ধুরুং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুতুব শিরফ হাফেজ খানা, এবতেদািয় মাদ্রাসা, টেকনিক্যাল কলেজ, দারুল হিকমা আল মালেকিয়া দাখিল মাদ্রাসা, কয়েকটি কিন্ডারগার্টেনসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু মতিরবাপের পাড়ার ১৫ হাজারের বেশি জনবসতি থাকলেও সেখানে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। এ কারণে শিক্ষার্থীদের সাঁকো পারাপারে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
লেমশীখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আকতার হোছাইন বলেন, বঁাশের সঁাকোর ওপর স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বরাবর বহু আবেদন–নিবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সাড়া মিলছে না।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম নুরুল বশর চৌধুরী বলেন, খালের দুই পাের চার গ্রামের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ সাঁকো নিয়ে সমস্যায় আছে। তথ্যপ্রযুক্তির এই ডিজিটাল যুগেও এখানকার মানুষ বঁাশের সাঁকোর ওপর নির্ভরশীল, এটা ভাবতে কষ্ট হচ্ছে। সাঁকোর বিকল্প একটি পাকা সেতু নিমাণে ঊর্ধ্বতন মহলে যোগাযোগ চলছে।