বাইরে বেরোনোর আগে যেমন প্রস্তুতি নেবেন

বাইরে বেরোনোর আগে ব্যাগে অন্যান্য অনুষঙ্গের পাশাপাশি জীবাণুনাশক রাখাটাও এখন জরুরি। মডেল: প্রিয়ন্তি
ছবি: নকশা

উপস্থাপক সামিয়া আফরিন পরিপাটি থাকতেই বেশি পছন্দ করেন। কাজের কারণে দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে বা অফিসে কাটে তাঁর। করোনাকালেও কাজের তাগিদে বেরোতে হয়েছে ঘরের বাইরে। কিন্তু সব সময় তাঁকে দেখা যায় চেনা সে পরিপাটি সাজপোশাকেই।

প্রতিদিনের কাজের জন্য পোশাক হওয়া চাই এমন, যা আরামদায়ক ও সহজেই পরিষ্কার করা যায়, এমনই বললেন সামিয়া আফরিন। অফিসের বা বাইরের পোশাক হিসেবে তিনি এখন সুতিকেই যথাযথ মনে করেন। এ ছাড়া হালকা একরঙা আরামদায়ক কুর্তি, পাঞ্জাবি পরেন প্যান্টের সঙ্গে। জুতারও তিনি এমন কিছু বেছে নেন, যা আরামদায়ক ও জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা যায়। তাই নাগরা ঘরানার জুতাই এখন তিনি বেশি ব্যবহার করছেন। এ ছাড়া অফিসের জন্য এমন ব্যাগ নেন, যাতে মাস্ক ও জীবাণুনাশক নেওয়া যায়। আর কেনাকাটা করতে গেলে নেন প্রয়োজন বুঝে তুলনামূলক ছোট ব্যাগ।

বাইরে যাওয়ার আগে সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া সামগ্রীর তালিকা এখন বেশ লম্বা। অন্য সব প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গের পাশাপাশি মাস্ক ও জীবাণুনাশক ব্যাগে রাখা এখন অতি জরুরি বিষয়। এ ছাড়া নিজের কাপড় থেকে শুরু করে জুতা, ব্যাগ সবই ব্যবহারে হতে হবে আগের থেকে একটু বেশি সাবধানী।

এই ধরুন বাইরে থেকে ঘরে ফিরেই যথারীতি ব্যবহার করা ব্যাগ, জুতায় জীবাণুনাশক স্প্রে করলেন। আর তাতেই হয়ে গেল সর্বনাশ। লেদারের প্রিয় ব্যাগ বা জুতার রং উঠে গেল বা চামড়া ফেটে গেল।

ওরিয়ন ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবসায় উন্নয়ন ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন জানান, লেদারজাতীয় পণ্যে সাধারণ জীবাণুনাশক ব্যবহার করা যাবে না। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে পানি ব্যবহারেও লেদারের ক্ষতি হয়। সে ক্ষেত্রে লেদারের জুতা, ব্যাগ বা বেল্টে বিশেষ ধরনের শাইনার স্প্রে ব্যবহার করতে হবে। এতে লেদারে একধরনের চকচকে ভাব আসে এবং একই সঙ্গে জীবাণুনাশকের কাজও করে। তবে যারা এ ধরনের স্প্রে ব্যবহার করতে চান না, তাঁরা প্রাকৃতিক নয় এমন লেদারের (ম্যানমেইড লেদার) জুতা বা ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। যা পানি, জীবাণুনাশক বা সাবান দিয়েও পরিষ্কার করা যাবে। এ ছাড়া প্লাস্টিক, রাবার বা কাপড়ের ব্যাগ ও জুতা করোনাকালে বাইরে ব্যবহারে বেশ নিরাপদ।

অফিসে ব্যাগ নেওয়ার ক্ষেত্রে আরামদায়ক বা একটু বড় ব্যাগ বাছাই করতে পারেন। অফিসে যেহেতু লম্বা একটা সময় থাকতে হবে, তাই ব্যাগে অবশ্যই জীবাণুনাশক, বাড়তি মাস্ক ও অন্যান্য জিনিস নিতে ভুলবেন না।

বাজারের জন্য কাপড় বা পাটের ব্যাগই বেশি আরামদায়ক হবে, যা সহজেই পরিষ্কার করা যাবে। আবার খুব অল্প সময়ের জন্য বাইরে গেলে ছোট ব্যাগ নিতে পারেন, যে ব্যাগে আপনার মোবাইল বা টাকার ব্যাগ নেওয়া যাবে সহজেই।

এ তো গেল জুতা আর ব্যাগের কথা, কিন্তু যে পোশাক পরে বাইরে যাবেন, সেটার কথাও চিন্তা করা প্রয়োজন। ডিজাইনার ও ফ্যাশন হাউস বিবিয়ানার স্বত্বাধিকারী লিপি খন্দকার বলেন, এখন বাইরে গেলে সুতি কাপড়ই ব্যবহার করতে হবে। কারণ, অন্য তন্তুর কাপড়ে বেশি সময় জীবাণু বেঁচে থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে একরঙা বা হালকা রঙের ৮–১০টি কামিজ, কুর্তি বেছে রাখুন। তবে একধরনের পোশাক বারবার পরতে না চাইলে স্কার্ফ ও প্যান্ট বা পালাজো পরিবর্তন করে পোশাকে বৈচিত্র্য আনা যায় সহজেই।

আবার কাপড় যেহেতু ধুয়ে ফেলতে হবে, তাই রং ওঠে না এমন কাপড় পরাই ভালো। তবে কাপড়ে যেন রং না ওঠে, তার সমাধান দিয়েছেন নকশাকার লিপি খন্দকার।

সমাধান

কাপড়ে অন্য রং লেগে গেলে সাবান ব্যবহার করবেন না। ২৪ ঘণ্টা স্বাভাবিক পরিষ্কার পানিতে কাপড়টি ভিজিয়ে রাখুন। ছয় ঘণ্টা পরপর পানি পরিবর্তন করে নতুন পানিতে কাপড় আবারও ভিজিয়ে রাখুন। এতে একরঙা পোশাকে অন্য যে রং লেগেছে, তা চলে যাবে। এ ছাড়া সুতা বা অন্য নকশা থেকেও পরবর্তী আর রং উঠবে না।