বুড়ো আঙুলের বাড়াবাড়ি

বুড়ো আঙুলের এই বাড়াবাড়ি রকমের ব্যস্ততার ফল ‘টেক্সটিং থাম্ব’
প্রথম আলো

আজ আপনাদের বুড়ো আঙুল দেখাব। মানে সে আঙুলের কারসাজি। তার আগে দুটি গবেষণার প্রতিবেদন দিয়ে শুরু করা যাক। প্রথমটি মার্কিন ডেটা অ্যানালাইটিকস প্রতিষ্ঠান নিয়েলসেনের। তারা বলছে, আমেরিকান কিশোর–কিশোরীরা মুঠোফোনে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৩ হাজার ৩৩৯টি বার্তা পাঠায়। আর ব্রিটিশ সংস্থা অফকমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২–১৫ বছরের কিশোরেরা সপ্তাহে প্রায় ১২ ঘণ্টা ভিডিও গেমে ব্যস্ত থাকে। দুটি প্রতিবেদনের কোনোটিই সাম্প্রতিক নয়। বর্তমানে তো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিউজফিড স্ক্রল করে কাটিয়ে দিচ্ছেন অনেকে। এ সবকিছু মিলিয়ে বলা যেতে পারে, দুহাতের বুড়ো আঙুল দুটো খুব চাপে আছে। দিনরাত থাকছে ব্যস্ত।

বুড়ো আঙুলের এই বাড়াবাড়ি রকমের ব্যস্ততার ফল ‘টেক্সটিং থাম্ব’। এটা এক ধরনের চোট। এতে হাতের টেন্ডন টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মারাত্মক ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আঙুল কিংবা কোনো কোনো সময় হাত নাড়ানোই কঠিন হয়ে পড়ে।

চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, এই ক্ষতি স্থায়ী রূপও পেতে পারে। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইন ডটকমকে তিনি জানান, টেক্সটিং থাম্ব থেকে তীব্র ব্যথা, এমনকি স্নায়ুর ক্ষতিও হতে পারে। সমাধানের জন্য ওষুধ সেবন, নিয়মিত থেরাপি নেওয়া, ইনজেকশন দেওয়া এবং প্রয়োজনে অস্ত্রোপচারও করা লাগতে পারে।

ব্যথা শুরু হলে কী করব?

টানা ভিডিও গেম খেলা বা বার্তা আদান–প্রদান না করে নিয়মিত বিরতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রেনি এনরিকেজ। তিনি বলেন, ভেবে দেখুন কত দ্রুত কতবার আপনার আঙুল নাড়িয়েছেন। বিরতি এর সবচেয়ে ভালো সমাধান। নিয়মিত বিরতিতে আঙুল এবং কবজি নাড়াচাড়া করুন।

হাতে বরফ দিলেও উপকার মিলবে। শীতল পানির প্রবাহের নিচে হাত রাখলেও উপকার পাওয়া যেতে পারে। আমাদের পেশি যেহেতু অল্প সময়ে অত্যধিক কাজ করে ফেলছে, তাই এটাকে ‘ঠান্ডা’ করতে হবে। মানে সময় দিতে হবে।

কিন্তু এড়ানোর উপায়?

এনরিকেজের পরামর্শ, স্মার্টফোনের পেছনে কম সময় ব্যয় করতে হবে। এখন বেশির ভাগ স্মার্টফোনে ‘স্ক্রিন টাইম’ বা কতক্ষণ ব্যবহার হলো, তা দেখা যায়। ব্যবহার ক্রমে কমিয়ে আনার চেষ্টা করুন। তা ছাড়া, ফোনে টাইপ করা, স্ক্রল করা বা সেলফি সব সময় এক হাতে না তুলে হাতবদল করা উচিত। আবার নিয়মিত ‘স্ট্রেচিং’ করলেও টেক্সটিং থাম্বের ব্যথা এড়ানো যায়। অর্থাৎ গা ঝাড়া দেওয়ার মতো নিয়মিত হাত ঝাড়া দেওয়া বা নাড়াচাড়া করা জরুরি।