মিডো–লুইসের বিয়ের কারণ লকডাউন

কনে মার্কিন মডেল, বর ব্রিটিশ অভিনেতা। পেশাগত কাজে দুজনের দেখা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে। সেখানে বন্ধুত্ব, সেখানেই প্রেম। আর সেই সম্পর্ক ২২ অক্টোবর কাগজে–কলমে স্বীকৃতি পেল—‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস’। বলছি মিডোর কথা।

মার্কিন মডেল মিডো
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

হলিউড তারকা পল ওয়াকারের মেয়ে মিডো ওয়াকার বিয়ে করলেন তাঁর সবচেয়ে কাছের বন্ধু লুইস থর্নটন–অ্যালানকে। হ্যাঁ, কিছুদিন আগেই ইনস্টাগ্রামে অ্যালানের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছিলেন, ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’। এবার ‘ডেস্টিনেশন বিয়ে’তে ডমিনিকান রিপাবলিকে গিয়ে কাছের কয়েকজন বন্ধু আর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বললেন, ‘আই ডু’।

বিয়েতে বাবার দায়িত্ব পালন করেছেন ভিন ডিজেল
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

২০১৯ সালে মিডো গিয়েছিলেন ইউরোপে, কাজে। সেখানেই লকডাউনে আটকা পড়েন তিনি। সেই সময় তিনি লুইসকে ভীষণ মিস করেছেন। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লকডাউন পেরিয়ে যখনই সময় পাবেন, তখনই বিয়েটা সেরে ফেলবেন। তাই তাড়াহুড়ো করে ২২ বছরেই বিয়ের কাজ সেরে ফেলার জন্য মহামারিকালকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারলেন না।

মিডো ও লুইস
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে মিডো ওয়াকার ‘নিউইয়র্ক টাইমস’–এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি প্রায় ছয় মাস আটকে ছিলাম। প্রেমের পর কখনোই আমি এত দিন ওকে না দেখে থাকিনি। আমি ভীষণভাবে ওর শূন্যতা অনুভব করেছি। আর সেই সময়ই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই দিনগুলো পেরোলে সবার আগের আমরা বিয়ে করে ফেলব। বলা যেতে পারে, বিয়ের কারণ লকডাউন।’

বউ বেশে মিডো
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

মিডো আরও জানান, প্রথম সুযোগেই লুইস তাঁর কাছে উড়ে এসেছিলেন। আর এরপর তাঁরা দুজনে একসঙ্গে লকডাউন কাটিয়েছেন। তারপর দুজনে মিলে গেছেন লুইসের মা–বাবার বাসায়। সেখানে লুইস মিডোকে প্রেমিকা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন মা–বাবার সঙ্গে।

বিয়ের পর সমুদ্রপাড়ে মিডো ও লুইস
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

আর সেখানেই  হাঁটু গেড়ে আংটি পরিয়ে জিজ্ঞেস করেন, আমাকে বিয়ে করবে? সেই স্মৃতি ভাগ করে নিয়ে মিডো বলেন, ‘আমি ওকে বলেছিলাম বিয়ের কথা। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি যে এসব ব্যবস্থা করে ফেলবে, ভাবিনি।  আর এর চেয়ে চমৎকারভাবে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া যায় না। আমি খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। সেটা ছিল আমার জীবনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত।’

গুটিকয়েক কাছের মানুষের উপস্থিতিতে বিয়ে সেরেছেন তাঁরা
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

কথায় কথায় মিডো বলেন, লুইসের মা–বাবা তাঁদের বিয়েতে অংশ নিতে পারেননি। অনেক কাছের বন্ধু আর পরিবারের সদস্যরাও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে বিয়েতে যেতে পারেননি। তবে এ রকম আড়ম্বড়হীন বিয়ে দারুণ উপভোগ করেছেন মিডো।

বাবার সঙ্গে ছোট্ট মিডো
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বিয়ের পোশাক নিয়ে বলেছেন, ‘আমার বিয়ের গাউনটা দেখুন। এর চেয়ে সাদাসিধে বিয়ের গাউন আর হয় না। তবে গাউনটা “টাইমলেস”, যেকোনো সময়কে ধারণ করতে পারে। গাউনের ট্রেনটাও ছোট রেখেছি। রাতের পার্টিতে যে পোশাক পরেছি, সেটি একটু চকচকে হলেও নেই কোনো বাড়াবাড়ি। সাজগোজ যেটুকু না করলেই নয়, সেটুকু। আর এতেই আমি সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছি।’  

২২ বছর বয়সী মডেল মিডো
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

মিডোর বিয়ের পোশাক ডিজাইন করেছেন তাঁর বন্ধু, ৩৬ বছর বয়সী মার্কিন ডিজাইনার ম্যাথিউ উইলিয়ামস। মিডো এমনটিই চেয়েছিলেন। লুইসের পোশাক সম্পর্কে বলেন, ‘লুইস ভেতরে আর বাইরে এই বিশ্বের সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষ। আমি কেবল চেয়েছি, কোনো পোশাক বা মেকআপে ওর সৌন্দর্য যেন আড়ালে চলে যায়। যাতে ওর ব্যক্তিত্ব পুরোপুরি ফুটো ওঠে।

এই ছবিটি পোস্ট করেই মিডো জানিয়েছিলেন, লুইস তাঁর বেস্টফ্রেন্ড
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

রাতে কাছের বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে সমুদ্রপাড়ে খালি পায়ে নেচেছেন। আর আগুন জ্বালিয়ে তার চারপাশে বসে আড্ডা দিতে দিতে হয়েছে বিয়ের দিনের রাতের খাওয়া। মিডোর মতে, বিয়ের আয়োজন এ রকমই হওয়া উচিত। দেখানো কোনো ব্যাপার নেই। সাধারণ, গভীর আর অত্যন্ত আন্তরিক।

২০১৩ সালে মিডোর বাবা পল ওয়াকার মাত্র ৪০ বছর বয়সে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তখন মিডোর বয়স মাত্র ১৫। বাবা মারা যাওয়ার পর মিডোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন পলের ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’ সিনেমার সহকর্মী, বন্ধু ভিন ডিজেল। সেই দায়িত্ব বিয়ের আসর পর্যন্ত পালন করেছেন ভিন ডিজেল।
ভিন ডিজেলের মেয়ে পালমোয়া জিমেনেজও মডেল। কিছুদিন আগে মিডো, পালমোয়া আর ডিজেলের সঙ্গে একটা ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘সারা জীবনের পরিবার’। অর্থাৎ মিডোও ভিন ডিজেলকে বাবা আর পালমোয়াকে বোনের মতোই দেখেন।