মুখ দেখে যায় না চেনা!

চেহারায় পৌরুষের ছাপ দেখে মেয়েরা সুদর্শনদের প্রেমে পড়তেই পারেন। ভাবতে পারেন সুন্দর ও মেধাবী সন্তানের সম্ভাব্য পিতা হিসেবে এই মানুষটিকেই তিনি বেছে নিতে চান। কিন্তু গবেষকেরা বলছেন, সুন্দর মুখের মায়ায় ভোলা আর ভবিষ্যৎ সন্তানের পিতা নির্বাচন করা এক কথা নয়। কেউ সুদর্শন হলেই যে তিনি সুপুরুষ বা উর্বর পুরুষ হবেন, তা নাও হতে পারে। ইভালুশনারি বায়োলজি সাময়িকীতে সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে—সব সুন্দর মুখশ্রীর পুরুষদের শুক্র-ধারক বা বীর্যের গুণগত মান ভালো নাও হতে পারে।
গবেষকেরা বলছেন, ‘টেস্টোস্টেরোনের অতিরিক্ত মাত্রা বীর্য উৎপাদনকে দুর্বল করে দিতে পারে বলে দেখা গেছে। ফলে দ্বিতীয় পর্যায়ের যৌনসংকেত বা চেহারার পৌরুষ দেখে উর্বরতা নিয়ে বাজি ধরাটা মুশকিল হয়ে উঠতে পারে।’
‘ফেনোটাইপ লিঙ্কড ফার্টিলিটি হাইপোথিসিস’ নামের নতুন এক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে এই গবেষণায়। ভালো উর্বরতাসম্পন্ন সঙ্গী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে কী কী বিষয় প্রভাবক হিসেবে কাজ করে, তা দেখার চেষ্টা করেছেন স্পেনের এই গবেষকেরা। ভ্যালেন্সিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ৬২ জন ককেশীয় শ্বেতাঙ্গ পুরুষ এই গবেষণায় অংশ নিয়েছেন। এক সপ্তাহের জন্য স্বাভাবিক যৌন সংসর্গ থেকে বিরত রেখে এই পুরুষদের কাছ থেকে বীর্য সংগ্রহ করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া মানদণ্ড অনুসারে প্রত্যেকের বীর্য পরীক্ষা করে দেখা হয়।
গবেষণার দ্বিতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণকারী পুরুষদের ছবি তোলা হয়। সামনে এবং ডান পাশ থেকে তোলা পুরুষদের মুখচ্ছবিগুলো এরপর আলাদাভাবে মূল্যায়ন করা হয়। গবেষকেরা জানিয়েছেন, মুখচ্ছবি মূল্যায়নের প্রক্রিয়ায় তাঁরা দেখেছেন, পুরুষেরা এসব ছবিকে নারীর ছবির চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় হিসেবে দেখেছেন। এ থেকে এটাও বলা যায় যে, পুরুষেরা সাধারণত নারীর কাছে অন্য পুরুষের প্রতি আকর্ষণের বিষয়টি বেশি বড় করে দেখেন।
গবেষণার ফল থেকে বিজ্ঞানীরা বলছেন, পুরুষের চেহারার সংকেত থেকে তাঁর সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার এবং উর্বরতার বিষয়ে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। গবেষকেরা আরও জানিয়েছেন, বেশির ভাগ মানুষই সাধারণত নিজের জনগোষ্ঠীর চেহারার আকর্ষণের প্রতি বেশি সংবেদনশীল হয়ে থাকে।