রংবেরঙের হেলমেট

প্রয়োজন কিংবা শখ—কারণ যেটাই হোক, মোটরবাইকের জনপ্রিয়তা এখন বেশ। কি শহর, কি গ্রাম—নানা বয়সী মানুষের কাছে পছন্দের বাহন এটি। বাইকের অংশ না হয়েও সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ হচ্ছে হেলমেট। এর মূল কাজই হচ্ছে যেকোনো আঘাত থেকে মাথাকে রক্ষা করা। শুধু চালক নন, চালকের সঙ্গে আরোহী হয়ে যিনি বসবেন, তাঁর মাথাতেও হেলমেট থাকাটা বাধ্যতামূলক। আসলে শুধু নিয়ম বলে নয়, নিজের জীবনের নিরাপত্তার জন্যই হেলমেট জরুরি।

বাজারে নানা রঙের, নানা ডিজাইনের হেলমেট রয়েছে। ইদানীং চাইলে হেলমেটে নকশাও করিয়ে নিতে পারেন। তবে কেনার সময় সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখতে হবে, হেলমেটটি মাথায় ঠিকভাবে বসছে কি না। মান ফিট করছে কি না। আঁটসাঁট হেলমেটে অস্বস্তি হতে পারে, আর অস্বস্তি নিয়ে বাইক না চালানোই ভালো। শুধু সুন্দর বা স্টাইলিশ দেখে হেলমেট কেনা ঠিক নয়। বেশি খরচ হলেও ভালো মানের হেলমেট কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ।
হেলমেট বিক্রেতাদের কাছ থেকে জানা গেল, কেনার সময় অবশ্যই দেখতে হবে, হেলমেট যেন মাথা থেকে চোয়াল পর্যন্ত ঢেকে রাখে। কেনার আগেই দেখে নিতে হবে সামনের প্লাস্টিকের স্বচ্ছ ঢাকনার ভেতর দিয়ে পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে কি না। সব ধরনের হেলমেট আরামের এবং যেকোনো দুর্ঘটনা থেকে মাথা রক্ষা করার কথা ভেবে তৈরি করা হয়। শিশুদের হেলমেট কেনার সময় দেখে নিন সেটা আরামদায়ক কি না। শিশুদের মাথার মাপ অনুযায়ী হেলমেট তৈরি করা হয়।

পুরান ঢাকার মোটরসাইকেলের অনুষঙ্গ বিক্রেতা মো. ফারুক হোসাইন জানান, নানা ধরনের ক্রেতারা নিজের বাইকের সঙ্গে মিল রেখেই হেলমেট কেনেন। ছেলে ও মেয়েদের জন্যও রয়েছে আলাদা হেলমেট। তরুণদের কাছে ‘স্পোর্টি’ হেলমেট বেশি জনপ্রিয়।
তরুণেরা ফ্যাশনেবল হেলমেট পছন্দ করেন। গতানুগতিক গোলাকার হেলমেটের বাইরে একটু ভিন্ন আকৃতির হেলমেট তাঁদের প্রিয়। এসব হেলমেটের সামনের অংশটা একটু চোখা।
টেকসই ভারী হেলমেটও নিচ্ছেন অনেকে। কোনোটির চোখের সামনের অংশ খোলা, আবার কোনোটিতে কাচ বসানো। আছে স্বচ্ছ কাচ ও পোলারাইজড (মার্কারি নামেও পরিচিত) কাচ দেওয়া হেলমেটও।

নকশা করা হেলমেট
বাজারে অনেক দোকানে রয়েছে নকশা করা হেলমেট। আবার কয়েকজন আছেন যাঁরা হেলমেটে রঙিন নকশা করে দেন। তেমনই একজন জাকিয়া উর্মি। ফেসবুকে তাঁর পেজের নাম হিজিবিজি। জানালেন, তিনি সিনেমা বা টিভির জনপ্রিয় চরিত্রের ছবি এঁকে দেন হেলমেটে। একই রকম কাজ করে দেন আবির। বিস্কুট ফ্যাক্টরি নামে আছে তাঁর ফেসবুক পেজ। ক্রেতার চাহিদার সঙ্গে নিজের সৃজনশীলতা মিলিয়ে রঙিন করে তোলেন হেলমেট। বিস্কুট ফ্যাক্টরির বেশির ভাগ নকশা রিকশাচিত্রের ধারায় করা হয়।
নকশা করা এসব হেলমেটের দাম পড়ে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে।

দরদাম
দেশি ও বিদেশি হেলমেট পাওয়া যায় বাজারে। থাইল্যান্ড, হংকং, ভারত, চীন, তাইওয়ানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসে হেলমেট। সুরক্ষা ও ডিজাইনের ওপরই হেলমেটের দাম নানা রকমের হয়ে থাকে। সাধারণত হালকা-পাতলা সামনের কাচ বা প্লাস্টিক হেলমেট কেনা যাবে ২০০ থেকে ১০০০ টাকায়। এ ছাড়া ভালো মানের হেলমেট কিনতে পারবেন ১ হাজার ২০০ থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে। নারীদের হেলমেটগুলোর দাম ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে। কাচহীন হেলমেট ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা।
শিশুদের জন্য বাজারে হেলমেট খুঁজে কিনতে হয়। সবখানে পাওয়া যায় না। পুরান ঢাকা ও বংশাল, বাংলামোটর এলাকায় এগুলো পাওয়া যাবে। দাম ৩০০ থেকে দেড় হাজার টাকা।

যেখানে পাবেন
রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় রয়েছে হেলমেটের অনেক দোকান। এ ছাড়া মালিবাগ, বাসাবো, বনানী, উত্তরা, মিরপুর, বংশাল, পুরান ঢাকা, রামপুরা এলাকার মোটরবাইকের অনুষঙ্গ বিক্রির দোকানগুলো থেকে কিনে নিতে পারেন হেলমেট।