শীতে কেন এত বিয়ে

শীতকালের সঙ্গে বিয়ের একটা মধুর সম্পর্ক আছে। যাঁরা বিয়ে করবেন করবেন ভাবছেন, তাঁরা শীতের এক সুন্দর দিনের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় শীত এলেই বিয়ের ধুম পড়ে যায়। কিন্তু শীতকালেই কেন এত মানুষ বিয়ে করেন? অনেকে এর অনেক কারণের কথা বলেন। জেনে নেওয়া যাক শীতে বিয়ের নানা সুবিধাজনক দিক।

সম্প্রতি হয়ে গেল মিমের বাগদান
ছবি: রেমিনিসেন্স ফটোগ্রাফি

শীতকালের সঙ্গে বাঙালির উৎসবের একটা সম্পর্ক আছে। শীতে ধান কাটা হয়। সেই টাটকা চাল ভানিয়ে হয় নানা পিঠাপুলির উৎসব। শীতকালকে বলা হয় বিয়ের মৌসুম। দেশে যত বিয়ে হয়, তার একটা বড় অংশ হয় এই সময়ে। কেননা, এই সময় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রায় সমস্ত প্রতিষ্ঠানের একটা বার্ষিক ছুটি চলে। তাই আত্মীয়স্বজন যে যেখানে আছেন, সবাই মিলিত হতে পারেন। বিয়ের মতো একটা বড় আয়োজনের জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়।

শীতে বিয়ের মতো আয়োজন অনেক সহজ হয়ে যায়। মেকআপ থেকে খাওয়াদাওয়া—সবকিছুই করা যায় স্বস্তিতে। বিয়ের আয়োজনে কনেকে সবচেয়ে সুন্দর দেখানো চাই। তাই সব মেয়েই বউ সাজার জন্য পছন্দ করেন শীতকাল। যত দামি মেকআপই হোক না কেন, গরমে ঘেমে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। শীতকালে সেই ভয় নেই। দিব্যি ইচ্ছেমতো বউ সাজার স্বাধীনতা পাওয়া যায়। এ ছাড়া গরমকালে খাওয়াদাওয়া কিঞ্চিৎ ঝুঁকিপূর্ণ। রয়েসয়ে খেতে হয়। একটু এদিক-সেদিক হলেই নানান ভাষায় বিদ্রোহ করে পেট। বিয়ে মানেই বিশেষ খানাপিনা। তাই বিয়ের জন্য শীতকালই উপযুক্ত সময়।

বিয়ে মানেই খাটাখাটুনি। গরমে একটু পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে উঠতে হয়। শীতে সেই ভয় নেই। বরং বিয়ের উৎসবে উচ্চগ্রামের গান ছেড়ে দিয়ে ছোটাছুটি করে কাজ করলে শীত কম লাগে।

সানসিল্ক-নকশা বিয়ে উৎসব উদ্বোধনের পর নিরব-ঋদ্ধি ও আজমী–ইমি দম্পতি। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

এদিকে শীতকাল হলো ফুলের মৌসুম। আর ফুল বিয়ের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। গায়েহলুদে গাঁদা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা—এগুলো তো লিস্টের একেবারে প্রথম দিকে জায়গা দখল করে থাকে। এ ছাড়া কনের সাজেও থাকতে পারে এই ফুলগুলো। যদিও সব সময়ের ফুলের দিক থেকে গোলাপেরই দাবি বেশি। আর এই ফুলটিও শীতকালে সবচেয়ে বেশি সহজলভ্য। বেলিও ঠিকই নিজের জায়গা করে নেয় এই উৎসবে। এ ছাড়া জারবেরা, গ্ল্যাডিওলাস, অর্কিড, অ্যাস্টার, ডেইজি, কসমস, সিলভিয়া, সূর্যমুখী, ক্যালেন্ডুলারাও দেখা দেয় গোলাপ, গাঁদা, বেলিদের আশপাশেই।

শীতকালে দিন ছোট। ফ্যান বা এসির ঝামেলা নেই। বিদ্যুৎ খরচ কম হয়। অল্প সময়ে স্বল্প আয়োজনে বিয়ের উৎসবের ব্যবস্থা করে ফেলা যায়। আবার বিয়ের যে খাবার থেকে যায়, সেটিও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কম।


বিয়ের পরই আসে হানিমুন। আর হানিমুনের ঘোরাঘুরির জন্যও শীতকাল সেরা। সে হোক সমুদ্র, পাহাড় বা সমতল!

বিয়ে আসরে পত্রলেখা ও রাজকুমার রাও, সম্প্রতি হয়ে গেল এই জুটির বিয়ে
ছবি: ইনস্টাগ্রাম