সময়ের সঙ্গে বদলানো মন

মনের বাক্স

শৈশবের ঈদের দিনগুলো

ঈদের আগে নতুন জামা লুকিয়ে রাখার কত বুদ্ধি করতাম ছেলেবেলায়! কখনো চালের ড্রামে, কখনো আলমারির চিপায়। রোজ নিয়ম করে সবার অলক্ষ্যে চুপিচুপি আলমারি খুলে দেখা, জামা ঠিক আছে তো! চাঁদরাতে বিটিভির গান, ‘রমজানের ঐ রোজার শেষে...’। এই গান শুনতে শুনতেই যেন ঈদ ঢুকে যেত বাড়িতে। ভাইয়া ফিরত ঢাকা থেকে, বাবার অফিস ছুটি, মায়ের নানা রকম রান্নার তোড়জোড়। কী সুন্দর সেই ঈদের স্মৃতি! এখন তো নিজেই বাবার ভূমিকায়। সন্তানদের আনন্দ দেখলে নিজের ছোটবেলাকেই মনে পড়ে।

তানিম হাসান, সিলেট।

সময়ের সঙ্গে বদলানো মন

কথায় আছে, মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়। সকালে বদলায়, বিকেলে বদলায়—কারণে বদলায়, অকারণে বদলায়। এই বদলানোটা দোষের নয়। সময়ের এই বহমান স্রোতোধারা মানুষকে বদলানোর মাধ্যমে পরিণত হতে সাহায্য করে, এর প্রমাণ আমি নিজেই। ২০১২ সালের আমি এবং ২০২১ সালের আমি কি এক? এমন একটা সময় ছিল, যখন তুমিহীন আমাকে কল্পনা করতে পারতাম না। আমি ভাবতাম, সে যদি কোনো কারণে কখনো বদলায়, আমি তো নিজেকে বদলাতে পারব না। এখন তো ভুলেও তোমাকে নিয়ে ভাবি না, আর মনেও পড়ে না। এখন বুঝি, প্রেমের আবেগে মানুষ একসময় অন্ধ হয়ে যায়। বাস্তবতা সে সময় মেনে নিতে কষ্ট হয়। তবে আবেগ থাকলেই কেবল মানুষ ভালোবাসতে পারে। আবেগহীন ভালোবাসা ঠিক ভালোবাসা হয়তো নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আবেগ মূল্যহীন হয়ে যায়। এটা মেনে নিলে দীর্ঘ জীবনে সুখী থাকা যায়।

বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে জীবন অতিবাহিত করতে পারলেই আসলে সুখ পাওয়া যায়। আজ আমি ভালোই আছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আবেগহীন বাস্তবতায় নিজের মনকে বদলাতে পেরেছি। আমি মনে করি, এটাই আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। কাউকে ভালোবেসে নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে ফেলার কোনো মানে নেই। জীবনকে ভালোবাসুন।

মো. আসাদুজ্জামান, ঢাকা কলেজ।

এ আমার মনের কথা

প্রিয়তমা, তোমাকে দেখে সর্বদাই মনে হয় ভালো আছ। তাই কুশল বিনিময় করলাম না। সরাসরি চলে যাই পরসমাচারে। একটা মানুষের মুখের হাসি কতটা সুন্দর ও শৈল্পিক হতে পারে, তা তোমাকে না দেখলে বুঝতাম না। সত্যিই তুমি তাই, ঠিক যে রকম আমি চাই। পত্রের শুরুতে গোলাপের শুভেচ্ছা দিইনি। কারণ, রোমান প্রেমের দেবী ভেনাসের প্রিয় ফুল ছিল গোলাপ, কিন্তু তোমার তা না–ও হতে পারে। আমার হৃদয় আর তুমি মুখোমুখি দাঁড়ানো। তুমি আমার না—ভাবলেই চোখ থেকে জল উপচে পড়ে। তুমি আমার এতটাই প্রিয়, যাকে ভাবতে ভাবতে ঘুমের মধ্যেও খুশিতে নেচে উঠি, যার নৈকট্য আমি প্রার্থনা করি। তুমি চুলে শ্যাম্পু করো, প্রসাধন মাখো। আমার চুল কালো করে বাতাস, আমার মুখ রঙিন করে সূর্য।

চিঠিতে নাকি মানুষের উন্মুক্ত আত্মার পরিচয় পাওয়া যায়, তাই লিখলাম। তোমাকে যে আমার হতেই হবে, এমন নয়। যে জীবনে কোনো আশা নেই, সে জীবনে আবার আশাভঙ্গের বেদনা কিসের! মহৎ মানুষের কাছে হাত পেতেছি, ভুল করিনি। সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, জামালপুর।

কাঁঠালচাঁপাগাছ

বহুদিন পর বন্ধুর সঙ্গে কলেজের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। মনে পড়ে গেল প্রথম দিনের সেই লম্বা লাইনের কথা। এই তো কদিন আগে প্রথম কলেজে এসেছিলাম। সেদিন সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করেছিল ক্লাসের সামনের কাঁঠালচাঁপাগাছটি। কিন্তু আজ সেটা আর দেখা যাচ্ছে না। আমার বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলাম। কিন্তু সেখানে যে একটা গাছ ছিল, সেটা পর্যন্ত তার মনে নেই! ওর কথা শুনে প্রথমে বিরক্ত হলেও হঠাৎ যেন বুক ধক করে উঠল। একদিন আমিও হয়তো সেই কাঁঠালচাঁপাগাছের মতোই পৃথিবী থেকে চলে যাব। তখন আমাকেও কি মনে রাখবে না কেউ! নাকি এই কাঁঠালচাঁপাগাছের মতো...।

স্নেহা সালসাবিল, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা।