১০ হাজার কনস্টেবল নেবে পুলিশ

পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নারী ও পুরুষ যে কেউ আবেদন করতে পারেন। ছবি: হাসান রাজা
পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নারী ও পুরুষ যে কেউ আবেদন করতে পারেন। ছবি: হাসান রাজা

সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সারা দেশের মোট ৬৪টি জেলা থেকে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে মোট ১০ হাজার পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে পুরুষ কনস্টেবল পদে মোট ৮ হাজার ৫০০ এবং নারী কনস্টেবল পদে মোট ১ হাজার ৫০০ জন নিয়োগ দেওয়া হবে। জেলা অনুযায়ী শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ৩ ডিসেম্বর থেকে, চলবে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আবেদনকারীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ পরীক্ষার দিন নিজ নিজ জেলার পুলিশ লাইনে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে।

.
.

আবেদনের যোগ্যতা:
ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে আবেদনের জন্য নারী-পুরুষ উভয়েরই এসএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ ২.৫০ থাকতে হবে এবং আগামী ১ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। তবে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের ক্ষেত্রে আগামী ১ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের সন্তানের ক্ষেত্রে বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। নারী-পুরুষ উভয় প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে এবং প্রার্থী যে জেলার স্থায়ী বাসিন্দা সেই জেলাতেই ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য উপস্থিত হতে হবে।
পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে শারীরিক উচ্চতা কমপক্ষে পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি, বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি এবং সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি হতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুধু মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের উচ্চতা হতে হবে কমপক্ষে পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি, বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি এবং সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের সন্তানদের পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সাধারণ ও অন্যান্য কোটার পুরুষ প্রার্থীদের উচ্চতা ও বুকের মাপের শর্ত প্রযোজ্য হবে। উপজাতীয় কোটায় পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা কমপক্ষে পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি, বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি এবং সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি হতে হবে।
সকল কোটার নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা হতে হবে কমপক্ষে পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি। সব প্রার্থীর ওজন বডি ম্যাস ইনডেক্স অনুযায়ী অর্থাৎ বয়স ও উচ্চতার সঙ্গে অনুমোদিত পরিমাণের হতে হবে।

নির্বাচনপদ্ধতি:
প্রার্থীদের নিজ নিজ জেলায় নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ উপস্থিত হয়ে বিধিমোতাবেক শারীরিক মাপ এবং শারীরিক পরীক্ষায় (দৌড়, রোপিং ও জাম্পিং ইত্যাদি) অংশ নিতে হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা নিজ নিজ জেলার পরীক্ষার দিন ও সময় সম্পর্কে অনলাইনে বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইট www.police.gov.bd/recruitment/img009.jpg লিংকে গিয়ে জানতে পারবেন। সেখানে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার পরবর্তী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রবেশপত্র ইস্যুকরণসহ লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের কেন্দ্রের স্থান নির্ধারণ করে প্রার্থীদের অবহিত করবেন।
শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের পরবর্তী সময়ে নির্ধারিত স্থানে ও দিনে দেড় ঘণ্টাব্যাপী ৪০ মিনিটের পরীক্ষা দিতে হবে। সেখানে শতকরা ৪৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা পরে ২০ নম্বরের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হবেন। সেখান থেকেও শতকরা ৪৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হবেন।
এরপর পুলিশ ভেরিফিকেশনে সন্তোষজনক এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যোগ্য বিবেচিত হলে নির্বাচিত প্রার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত করা হবে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে যোগদানের পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত পুনঃ বাছাই কমিটি কর্তৃক শারীরিক যোগ্যতাসহ অন্যান্য তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাওয়া প্রার্থীদের ছয় মাস মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হবে।

বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা:
ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে প্রশিক্ষণের জন্য চূড়ান্তভাবে বাছাইকৃত প্রার্থীরা প্রশিক্ষণকালীন বিনা মূল্যে পোশাকসামগ্রী, থাকা-খাওয়াসহ চিকিৎসাসুবিধা পাবেন। এ ছাড়া প্রশিক্ষণকালীন প্রতি মাসে ৫০০ টাকা হারে প্রশিক্ষণ ভাতা পাবেন। সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেষ করার পর ২০০৯ সালের জাতীয় বেতন স্কেলের ১৭তম গ্রেড: ৪৫০০-২৪০ x ৭-৬১৮০-ইবি ২৬৫ x ১১-৯০৯৫ টাকা এবং বিধিমোতাবেক প্রাপ্য অন্যান্য বেতন-ভাতাসহ পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। দুই বছর শিক্ষানবিশ হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করার পর প্রার্থীদের কনস্টেবল পদে স্থায়ী করা হবে।
চূড়ান্তভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থীরা চাকরির সময়ে বিনা মূল্যে পোশাকসামগ্রী, ঝুঁকি ভাতা, চিকিৎসাসুবিধা এবং নিজ ও পরিবারের নির্ধারিত সংখ্যক সদস্যের প্রাপ্যতা অনুযায়ী পারিবারিক রেশনসামগ্রী স্বল্পমূল্যে ক্রয় করতে পারবেন। এ ছাড়া প্রচলিত নিয়মানুযায়ী উচ্চতর পদে পদোন্নতিসহ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যোগদানেরও সুযোগ পাবেন।