মুট কোর্ট প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ঢাবি ও রানার্সআপ ব্র্যাক

ডিইউএমসিএস-টিআইবি দুর্নীতিবিরোধী মুট কোর্ট প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দল। প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় দল। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ডিইউএমসিএস-টিআইবি দুর্নীতিবিরোধী মুট কোর্ট প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দল। প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় দল। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

দ্বিতীয় ডিইউএমসিএস-টিআইবি দুর্নীতিবিরোধী মুট কোর্ট প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দল। প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় দল।

সারা দেশের ২৬টি বিশ্ব বিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে গতকাল রোববার এ প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

দেশের বিদ্যমান দুর্নীতিবিরোধী আইনসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুট কোর্ট সোসাইটির (ডিইউএমসিএস) যৌথ উদ্যোগে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল।

আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে টিআইবি আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব, পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠান হয়েছে গতকাল শনিবার ঢাবির আইন অনুষদের মিলনায়তনে। দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের মুট কোর্ট প্রতিযোগিতায় ৭৮ জন আইনের শিক্ষার্থী ও তাঁদের ২৬ জন প্রশিক্ষকসহ মোট ১০৪ জন অংশগ্রহণ করেন।

প্রতিযোগিতায় স্পিরিট অব দ্য মুট পুরস্কার অর্জন করেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল এবং বেস্ট মেমোরিয়াল ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অধিকার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দ্বিতীয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও তৃতীয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়া বেস্ট মুটার পুরস্কার অর্জন করেন ঢাবি দল থেকে আলী মাশরাফ, দ্বিতীয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তাহসীন বিন জাফর ও তৃতীয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাল সাবিল চৌধুরী। বেস্ট রিসার্চার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলের মো. আজহার উদ্দিন ভূঁইয়া, দ্বিতীয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহাম্মাদ সাজিদ হাসান ও তৃতীয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাবেয়া দেওয়ান।

প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. আবদুল মতিন, হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামীম হাসনাইন ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মামনুন রহমান।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন ও ডিইউএমসিএসের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, ডিইউএমসিএসের মডারেটর অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের।

সাবেক বিচারপতি মো. আবদুল মতিন বলেন, আইন পেশায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের পাশাপাশি সততা, ন্যায়নিষ্ঠতা, মানবিকতা ও চারিত্রিক দৃঢ়তা অপরিহার্য। পবিত্র ধর্মগ্রন্থে ঘুষ দেওয়া ও নেওয়া উভয়ই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মানুষ যতক্ষণ দুর্নীতির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন না হবে, ততক্ষণ দুর্নীতি থেকে মুক্তি সম্ভব নয়। যে মহান আদর্শ ও লক্ষ্য সামনে রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে আজকের তরুণসমাজকে।

সাবেক বিচারপতি শামীম হাসনাইন বলেন, ‘প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের আইন সম্পর্কে জ্ঞান, যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের কৌশল ও বাগ্মিতায় আমি মুগ্ধ, সত্যিকার অর্থে একটি বিশ্বমানের প্রতিযোগিতা হয়েছে। আমার বিশ্বাস, দেশের দুর্নীতি প্রতিরোধে তাঁরা কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন।’

টিআই চ্যাপ্টারগুলোর মধ্যে টিআইবিই একমাত্র দুর্নীতিবিরোধী মুট কোর্ট প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের আশাবাদী হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হয়েছে যে, তরুণদের হাত ধরে আগামী দিনের আইনব্যবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।’

বিচারক ও টিআইবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘টিআইবির সহযোগিতার ফলে তরুণ শিক্ষার্থীরা দেশের প্রধান চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি সম্পর্কে বিশদ ধারণা লাভ করতে পারছে। প্রতিযোগিতা থেকে অর্জিত জ্ঞান ভবিষ্যতে তাদের আইন চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

২৮ নভেম্বর ঢাবির আইন অনুষদে তিন দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন আইন বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. নাইমা হক। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।