'কৃষকের অ্যাপে' ধান সংগ্রহের উদ্যোগ, কমবে অভিযোগ

কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান কিনবে সরকার। ছবি: সংগৃহীত
কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান কিনবে সরকার। ছবি: সংগৃহীত

দেশব্যাপী শুরু হয়েছে আমন ধান সংগ্রহ অভিযান। চলতি বছর কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ৬ লাখ টন ধান এবং মিলমালিকদের কাছ থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে সাড়ে তিন লাখ টন চাল সংগ্রহ করবে সরকার।

গত ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে আমন ধান সংগ্রহ। চলবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। 

২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে আমন ধান সংগ্রহ। চলবে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ছবি: সংগৃহীত
২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে আমন ধান সংগ্রহ। চলবে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ছবি: সংগৃহীত

তবে বরাবরই যে অভিযোগ সামনে আসে তা হচ্ছে, সরাসরি কৃষকেরা সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পারেন না। মধ্যস্বত্বভোগী, দালাল কিংবা কর্মকর্তাদের যোগসাজশে কতিপয় অসাধু ব্যক্তির তৎপরতায় কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে এবার বেশ কিছু জেলায় অ্যাপের মাধ্যমে আমন ধান সংগ্রহ কার্যক্রম চালানোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকারের খাদ্য বিভাগ। এই অ্যাপের নাম ‘কৃষকের অ্যাপ’।

কৃষকেরা অ্যাপে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিজেদের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন। ছবি: সংগৃহীত
কৃষকেরা অ্যাপে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিজেদের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন। ছবি: সংগৃহীত

কৃষকেরা এই অ্যাপে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিজেদের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন। নিবন্ধন হয়ে গেলে কৃষক অ্যাপের মাধ্যমেই জানাবেন যে তিনি কোন জাতের ধান উৎপাদন করেছেন এবং কী পরিমাণ ধান তিনি বিক্রি করতে চান। এমনকি তিনি কোথায় ধান বিক্রি করবেন, সেটা অ্যাপ ব্যবহার করে জানাতে পারবেন। সেখানেই তাঁকে মূল্য পরিশোধে একটি চেকের প্রিন্ট কপি দেওয়া হবে। ওই প্রিন্ট কপি ব্যাংকে দেখিয়ে টাকা তুলতে পারবেন কৃষক। গুগল প্লে স্টোর থেকে বিনা মূল্যে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে। কৃষকের অ্যান্ড্রয়েড ফোন না থাকলে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে গিয়েও নিবন্ধন করা যাবে। এটি ব্যবহার করে কোনো ঝামেলা ছাড়াই কৃষক তাঁর উৎপাদিত ধান ও চাল সরকারের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। মিলমালিক ও কৃষক মোবাইল ফোনে ধান-চালের চাহিদা, সরবরাহের তারিখ বার্তার মাধ্যমে জেনে যাবেন। ধান বিক্রির আবেদন ও আবেদনের অবস্থা দেখা যাবে। কেউ হয়রানির শিকার হলে অভিযোগও করতে পারবেন এই অ্যাপে।

কৃষকেরা অ্যাপে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিজেদের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন। ছবি: সংগৃহীত
কৃষকেরা অ্যাপে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিজেদের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন। ছবি: সংগৃহীত

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে দেশের ১৬ জেলায় এই সেবা চালু উপলক্ষে ব্যাপক প্রচার শুরু হয়েছে। কৃষকের অ্যাপে ধান কেনার বিষয়ে উপজেলায় মাইকিং করা হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। এটি প্রচারের জন্য ভিডিও ডকুমেন্টারি করে টেলিভিশনেও প্রচার করা হবে। ইতিমধ্যে প্রায় সব কৃষক এ বিষয়ে জেনে গেছেন।

কৃষক মোবাইল ফোনে ধান-চালের চাহিদা ও সরবরাহের তারিখ বার্তার মাধ্যমে জেনে যাবেন। ছবি: সংগৃহীত
কৃষক মোবাইল ফোনে ধান-চালের চাহিদা ও সরবরাহের তারিখ বার্তার মাধ্যমে জেনে যাবেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রথম পর্যায়ে সাভার, গাজীপুর সদর, ময়মনসিংহ সদর, জামালপুর সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, বরিশাল সদর, ভোলা সদর, নওগাঁ সদর, বগুড়া সদর, রংপুর সদর, দিনাজপুর সদর, ঝিনাইদহ সদর, যশোর সদর, হবিগঞ্জ সদর ও মৌলভীবাজার সদরে এই কার্যক্রম চলবে।

কৃষির সম্প্রসারণে কৃষকের পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। কৃষিতে আধুনিকায়ন করে কৃষকদের বাঁচাতে সরকারের এমন আরও উদ্যোগ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকদের প্রশিক্ষণের হার বাড়াতে হবে।