গোলাপগঞ্জে হাতি দিয়ে চলছে চাঁদাবাজি

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের বইটিকর বাজারে এভাবে গাড়ি আটকে হাতি দিয়ে তোলা হচ্ছে টাকা। ছবিটি ১২ ডিসেম্বর দুপুরে তোলা। ছবি: লেখক
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের বইটিকর বাজারে এভাবে গাড়ি আটকে হাতি দিয়ে তোলা হচ্ছে টাকা। ছবিটি ১২ ডিসেম্বর দুপুরে তোলা। ছবি: লেখক

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে হাতি দিয়ে অভিনব কায়দার টাকা তোলা হচ্ছে। প্রথম প্রথম স্বেচ্ছায় টাকা দিলেও প্রায় প্রতিনিয়ত একই ঘটনা ঘটায় অনেকেই বিরক্ত ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দোকানপাট ও রাস্তাঘাটে মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনের গতিরোধ করে টাকা তোলাকে কেউ কেউ বলছেন চাঁদাবাজি।

উপজেলার হাটবাজারগুলোয় কিছুতেই কমছে না হাতি দিয়ে ‘চাঁদাবাজি’। প্রায়ই উপজেলার কোনো না কোনো এলাকায় চোখে পড়ছে হাতি দিয়ে টাকা তোলার দৃশ্য। এ কারণে অতিষ্ঠ হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী ও পথচারীরা।

হাতি দিয়ে টাকা তোলা থেকে নিস্তার নেই পথযাত্রীদের। আবার হাতির কারণে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটও। পথচারীদের কেউ কেউ হাতি–আতঙ্কেও আছেন।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দেখা গেল, উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের বইটিকর বাজারে হাতি দিয়ে টাকা তোলা হচ্ছে। রাস্তার দুই পাশে বাজারের প্রতিটি দোকান থেকে তোলা হচ্ছে টাকা। হাতি দিয়ে গাড়ি আটকেও টাকা আদায় করা হচ্ছে। চাঁদাবাজির এ দৌরাত্ম্য থেকে বাদ পড়ছে না টমটম ও অটোরিকশাচালকেরাও।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ব্যবসায়ী জুনেদ আহমেদ। তিনি বলেন, কয়েক দিন পরপর হাতি দিয়ে চাঁদা নিতে আসে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে। টাকা না দিলে দোকানের সামনে থেকে হাতি সরে না। বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়।

কারচালক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘কিতা খইতাম রে বাবা অখল, কয় দিন বাদে বাদে যে তারা হাতি দিয়া এক মবডং লাগাইন আখতা কিবান ইমারজেন্সি কোনো কাগাত জাইতাম তারার লাগি আর ফারা যায় না।’

নয়ন নামের এক মাইক্রোবাসচালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তায় মাঝেমধ্যেই হাতির চাঁদাবাজির কবলে পড়তে হয়। টাকা না দিতে চাইলে হাতি গাড়ির সামনে থেকে সরে না।

উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজারের দোকানে দোকানে হাতি দিয়ে চাঁদাবাজির এমন দৃশ্য কদিন পরপরই দেখা যায়। অনেকের প্রশ্ন, এটা একধরনের চাঁদাবাজি। কিন্তু দেখার আসলে কেউ নেই। রাস্তা বন্ধ করে এরা তো একধরনের নৈরাজ্য চালাচ্ছে।

এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, হাতি দিয়ে চাঁদা আদায়ের বিষয়ে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।