শীতার্তদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টায় 'হ্যালো-পার্বতীপুর'

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে শীতার্ত মানুষকে শীতবস্ত্র দিয়েছে ‘হ্যালো-পার্বতীপুর’। ছবি: লেখক
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে শীতার্ত মানুষকে শীতবস্ত্র দিয়েছে ‘হ্যালো-পার্বতীপুর’। ছবি: লেখক

খ্রিষ্টীয় নববর্ষের প্রথম দিনটি ছিল বুধবার। সবাই যখন নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় নিয়ে ব্যস্ত, তখন শীতার্ত মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন একদল যুবক। নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁরা বাড়িয়ে দিয়েছেন সহযোগিতার হাত। অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে নিরন্তর ছুটে চলেছেন তাঁরা। তাঁরা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘হ্যালো-পার্বতীপুর’–এর সদস্য।

ঘড়ির কাঁটা রাত ১০টা আশপাশে। চারদিকে নিস্তব্ধ। সাদা কুয়াশায় ঢেকে গেছে চারদিক। কনকনে ঠান্ডা চারপাশে। ঘটনাস্থলের দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলা গণকবরের পাশের ছোট্ট একটি বস্তিতে। শীত তাড়ানোর জন্য যে যার মতো করে চেষ্টা করছে। কেউ আগুন জ্বেলেছে। কেউ ছেঁড়া কাঁথা-কাপড়ে গুটিয়ে নিয়েছে নিজেকে। বস্তির পাশের এক কোণে ছেঁড়া একটি পাতলা চাদরে গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছেন এক জীর্ণশীর্ণ বৃদ্ধা। তাঁর শরীর কাঁপছিল শীতের তীব্রতায়। হঠাৎ উষ্ণতার ছোঁয়া। বৃদ্ধা চমকে উঠলেন। চোখ কচলিয়ে তাকিয়ে দেখেন, পাশে একদল যুবক। তাঁরাই গায়ে জড়িয়ে দিয়েছেন কম্বল। কৃতজ্ঞতায় বৃদ্ধার চোখ বেয়ে নেমে আসে পানি। হাত তুলে দোয়া করেন সেই যুবকদের জন্য।

এ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হ্যালো-পার্বতীপুরের সদস্য সিরাজুল ইসলাম। মধ্যরাতে অসহায় অনেক মানুষকে আচমকা আনন্দে ভাসিয়েছেন তাঁরা।

সিরাজুল ইসলাম মনে করেন, ‘আমরা হ্যালো–পার্বতীপুর একটি পরিবারের মতো। আর পার্বতীপুরের মানুষকে আমরা নিজের পরিবারের মতো ভালোবাসি। তাই আমরা চেষ্টা করি বরাবরই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে এবং যথাসাধ্য তাদের সাহায্য করতে।’

সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘অসহায় মানুষগুলোর পাশে তাঁদেরই দাঁড়াতে হবে। তাঁরা এগিয়ে এলে অন্যরাও আসবে। ১ জানুয়ারি তাঁরা ১০০ জন অসহায় মানুষের হাতে তুলে দেন শীতবস্ত্র। ফেসবুক ইভেন্ট, স্বেচ্ছাসেবকদের নিজস্ব অর্থায়নে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন সংগঠনের সদস্যরা।

*আসমাউল মুত্তাকিন, শিক্ষার্থী, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি