রাবিতে প্রাক্তন ও বর্তমানদের মিলনমেলায় আনন্দ আয়োজন

রাবির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সেলফি তোলা থেকে শুরু করে গলা ছেড়ে গান গাওয়া, বন্ধুর কাঁধে হাত রাখা আর নেচে-গেয়ে সবই ছিল একাকার। ছবি: লেখক
রাবির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সেলফি তোলা থেকে শুরু করে গলা ছেড়ে গান গাওয়া, বন্ধুর কাঁধে হাত রাখা আর নেচে-গেয়ে সবই ছিল একাকার। ছবি: লেখক

প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় দ্বিবার্ষিক সম্মেলন। আয়োজনে উৎসবে মেতে ছিলেন প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। বয়সের ভেদাভেদ ভুলে সবাই একত্র হয়েছিলেন আনন্দ আয়োজনে।

দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রাক্তনরা বর্তমানদের সঙ্গে বিনিময় করেছেন হাজারো স্মৃতি। আর বর্তমানেরা পুরোনো দিনের গল্প শুনে আবেগে আপ্লুত হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজনে এই মিলনমেলায়।

প্রাণের আকুতির টানেই যেন তাঁরা চলে এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মো. শহীদুল্লাহ একাডেমিক প্রাঙ্গণে। তাঁদের অংশগ্রহণে উৎসবে পরিণত হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গন। কত বছর আগে ফেলে যাওয়া ক্যাম্পাসে আবার তাঁদের পদচারণ! বন্ধুত্বের টানে সাড়া দিতেই পুরোনো ক্লাসরুম, সেই চিরচেনা প্রিয় ক্যাম্পাসে পা রেখেছেন প্রাক্তনরা। চোখে-মুখে মিলনের এক অদ্ভুত আবেশ, হারানোকে ফিরে পাওয়ার উচ্ছ্বাসে বাঁধনহারা তাঁরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় দ্বিবার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে শোভাযাত্রা। ছবি: লেখক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় দ্বিবার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে শোভাযাত্রা। ছবি: লেখক

বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে আড্ডায় বসেছিলেন ১৯৯৪ সালের মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা। তাঁদের মধ্যে একজন শামসুর রহমান শামস বলেন, ‘১৯৯৪ সালের মাস্টার্স ব্যাচ ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরে পরীক্ষা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের শেষ হয়। দীর্ঘ ২৩ বছর পর বিভাগের আয়োজনে ক্যাম্পাসে এসে বন্ধু, বড় ভাই, স্নেহের ছোট ভাই ও পরম শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক এবং অতি প্রিয় বিভাগের কর্মচারীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে আজকের প্রায় প্রৌঢ় বয়সের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠানে যতই সময় শেষ হয়ে আসছিল, ততই মন দুঃখভারাক্রান্ত হয়ে উঠছিল। এ আনন্দ আয়ুষ্কাল বাড়িয়ে দিয়েছে।’

সেলফি তোলা থেকে শুরু করে গলা ছেড়ে গান গাওয়া, বন্ধুর কাঁধে হাত রাখা আর নেচে-গেয়ে একাকার সবাই। প্রাক্তনদের মনে ছিল সেই সোনালি অতীত ফিরে পাওয়ার আকুলতা। কেউ ক্যাম্পাসের স্মৃতিময় জায়গাগুলো ঘুরে ঘুরে দেখছেন। যে যেভাবে পারছেন উপভোগ করছেন বহুদিন বাদে প্রিয় চত্বরে ফেরার প্রতিটি মুহূর্ত।

প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় দ্বিবার্ষিক সম্মেলন। ছবি: লেখক
প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় দ্বিবার্ষিক সম্মেলন। ছবি: লেখক

মাস্টার্স ২০১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাজিউল আমিন বলেন, ‘বিভাগের সবার অংশগ্রহণে খুব ভালো লাগছে। এ রকম অনুষ্ঠান আয়োজন প্রতিনিয়ত হোক। আর আমরা যারা বের হয়ে গেছি, তাদের উচিত ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, যারা অনার্স–মাস্টার্সে অধ্যয়ন করছে, তাদের প্রতি খেয়াল রাখা। আমাদের যাদের ন্যূনতম সুযোগ আছে, তাদের উচিত সেসব জায়গায় ছোট ভাইদের সুযোগ করে দেওয়া। এখানে শুধু আনন্দ করাই উদ্দেশ্য নয়, বিভাগের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা আলোচনাও এমন আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য।’

মাস্টার্স ২০১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী শিরিন জামান বলেন, ‘বিভাগের এবারের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে আসতে পেরে অনেক ভালো লাগছে, অনেক মজা করেছি। এই দিনগুলো বারবার ফিরে আসুক, সে প্রত্যাশা।’

লেখক: শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়