বান্দরবানে ওএলএইচএফ প্রকল্পের উদ্যোগে নারী দিবস পালিত

বান্দরবানে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক পর্ব, পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তি
বান্দরবানে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক পর্ব, পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তি

বান্দরবানে বিভিন্ন আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করেছে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অনন্যা কল্যাণ সংগঠন, গ্রাউস ও তহজিংডং। গতকাল শনিবার সকালে বান্দরবান সদর ইউনিয়নের রেইছা উচ্চবিদ্যালয়ে ‘আমাদের জীবন, আমাদের স্বাস্থ্য, আমাদের ভবিষ্যৎ’ (ওএলএইচএফ) প্রকল্পের উদ্যোগে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক পর্ব, পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।

এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নারীর সম–অধিকার বাস্তবায়নে আমি সমতার প্রজন্ম’।

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের মাস্টার ট্রেইনার সুমিত বণিকের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বান্দরবান সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপির সদস্য মো. নুরুন্নবী। রেইছা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহ্রী মারমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিমাভি বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাহবুবা হক কুমকুম, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আশীষ কুমার দেব, ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী মাধুরী তঞ্চঙ্গ্যা।

বান্দরবানে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আলোচনার সভা, সাংস্কৃতিক পর্ব ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল সদর ইউনিয়নের রেইছা উচ্চবিদ্যালয়ে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
বান্দরবানে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আলোচনার সভা, সাংস্কৃতিক পর্ব ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল সদর ইউনিয়নের রেইছা উচ্চবিদ্যালয়ে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

অতিথিরা বলেন, এই প্রকল্প পার্বত্য অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া কিশোরী ও নারীদের স্বাস্থ্য ও অধিকার বিষয়ে কাজ করছে। মেয়েরা যেন নির্বিঘ্নে, নিশ্চিন্তে বিদ্যালয়ে আসতে পারে, সেই পরিবেশ এবং বিদ্যালয়ে মাসিকবান্ধব টয়লেট স্থাপনের লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারিভাবে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নারীরা এখনো অধিকারবঞ্চিত, তাদের অধিকার সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পুরুষদের এগিয়ে আসতে হবে। নারী-পুরুষ সবার পরিচয় হওয়া উচিত মানুষ। মানুষ হিসেবে নারী-পুরুষের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্যের অবসান ও সম–অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নারীরা চাইলেই তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে, সে জন্য দরকার আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া। আর নারীরা এগিয়ে গেলেই দেশ এগিয়ে যাবে।

সাংস্কৃতিক পর্বে নৃত্য পরিবেশনায় শিক্ষার্থীরা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
সাংস্কৃতিক পর্বে নৃত্য পরিবেশনায় শিক্ষার্থীরা। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

দিবসটি উপলক্ষে রেইছা উচ্চবিদ্যালয়ে ‘নারীবান্ধব বিদ্যালয় ও তোমার ভাবনা’ শীর্ষক বিষয়ের ওপর রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী কবির বিনতে তাহসিন, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে অংমেচিং মারমা এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করে উছাইসিং মারমা। অতিথিরা রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

সাংস্কৃতিক পর্বে নৃত্য পরিবেশন করেন চন্দ্রিমা ও তাঁর দল, ওয়াংনু ও তাঁর দল, শৈ মেও তাঁর দল, ডউসিং ও তাঁর দল। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন তহজিংডংয়ের প্রকল্প সমন্বয়কারী রমেশ কুমার তঞ্চঙ্গ্যাসহ ওএলএইচএফ প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে সিমাভী ও বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের (বিএনপিএস) সহায়তায় প্রকল্পটি পার্বত্য চট্টগ্রামের কিশোরী ও যুবতীদের মর্যাদাপূর্ণ ও বৈষম্যহীন, সহিংসতামুক্ত জীবন গঠনে সহায়তা করার লক্ষ্যে এবং সর্বোপরি তাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। বিজ্ঞপ্তি।