ধান কেটে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিলেন নীলফামারীর শিক্ষার্থীরা

ধান কেটে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: লেখক
ধান কেটে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: লেখক

বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণে স্থবির জনজীবন। দেশের মানুষ যখন গৃহবন্দী, ঠিক তখনই শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার মৌসুম। এমন পরিস্থিতিতে বেশ বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। কৃষকের সহায়তায় এগিয়ে এলেন এলাকার শিক্ষার্থীরা। কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিলেন ধান।

ঘটনাটি নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার গোলনা ইউনিয়নে। পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি তিনি। বাবা আগেই মারা গেছেন। কাজ করেন ঢাকার একটি পোশাক কারখানায়। ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরলে পরীক্ষায় তাঁর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপরই তাঁকে নীলফামারীর আইসোলেশন কেন্দ্রে রাখা হয়।

গত শুক্রবার ওই ব্যক্তি ফেসবুক টাইমলাইনে তাঁর কয়েক শতক জমির পাকা ধান কেটে দেওয়ার জন্য একটি স্ট্যাটাস দেন এবং তাঁর পাকা ধান কাটার জন্য এলাকার সহৃয়বান ব্যক্তিদের অনুরোধ করেন।


স্ট্যাটাস দেখে পাশের গ্রামের আমির হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন স্কুল ও কলেজে অধ্যয়নরত কিছু শিক্ষার্থী ধান কেটে দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসেন। ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দেন। ধান কাটায় অংশ নেন আশরাফুল, লেলিন, নুরুন্নবী, রাসেল, আলমগীর, আহিরুল, মাসুম, আবদুল কাদের, আবদুর রহিম প্রমুখ। এ কার্যক্রমে এলাকায় ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক এই শিক্ষার্থীরা।


ধান কেটে সহায়তা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বুড়িতিস্তা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘করোনায় সৃষ্ট সমস্যায় অনেকে ধান কাটতে পারছেন না। এ জন্য সবাইকে এগিয়ে আসা দরকার। কৃষক বাঁচলেই বাঁচবে দেশ। আসুন আমরা একে অপরের পাশে দাঁড়াই।’


আমির হোসেন বলেন, ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই আমরা এ কার্যক্রম গ্রহণ করি। আমি শিক্ষার্থীদের এভাবে পাশে পাব এটা কল্পনার বাইরে ছিল।’


*লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া