লকডাউনের যা যা দেখেছি

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঠিক যখন সারা পৃথিবী লকডাউনে, তখন আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ ছুটি পেয়ে আল্লার ওপর ভরসা রেখে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণে বেরিয়েছিল লকডাউন পালন করতে।

স্পেনের মতো দেশের নাজেহাল অবস্থা হয়ে গেছে করোনায় আর ইতালিতে এত লাশ আগে কখনো কেউ দেখেনি। আর ঠিক তখনো লকডাউনে চোর-পুলিশ খেলা খেলছিল বাংলাদেশের মানুষ। পুলিশ এলেই যেন আশপাশে কেউ নেই, যে যেদিক পারে লুকায়। আর পুলিশ গেলেই সব আগের মতো। এ দেশের মানুষ বেশ রসিক, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

যখন নেতারা লকডাউনের পক্ষে প্রচারে নামলেন, সে প্রচার পরিণত হলো জনসমাবেশে। এ যেন অন্য রকম লকডাউনে আছে বাংলাদেশ। বিশ্ব অবাক তাকিয়ে রয়। সেখানে বলা হলো আপনারা লকডাউন মেনে চলুন, সামাজিক দূরুত্ব বজায় রাখুন। কিন্তু সেখানেই একজনের ওপর আরেকজন দাঁড়িয়ে থেকে কথা শুনছেন।

শুধু তা–ই নয়, অনেক এলাকায় ওয়াজের আয়োজন করেও লকডাউনের পক্ষে অনুপ্রাণিত করা হয়েছে এমনকি সামাজিক দূরত্বের গুরুত্বও বাদ যায়নি।

এর কিছুদিন পর যখন বাংলাদেশের আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে শুরু করে, তখনই এক ব্যক্তির স্বপ্নে মিলল করোনাভাইরাসের ওষুধ। তা–ও আছে থানকুনি পাতায়। চারদিকে থানকুনি পাতা সংগ্রহের কাজ শুরু হলো। মানুষ গণহারে এই থানকুনি পাতা চিবাল। শুধু থানকুনি পাতা নয়, আরও নানা স্বপ্নে পাওয়া ওষুধের বিজ্ঞাপন ফেসবুকসহ রাস্তার আনাচকানাচে দেখতে পাই এই লকডাউনে।

এই লকডাউনে বাংলাদেশের বড়লোকের এক–একটি ঘর যেন পরিণত হয়েছিল এক–একটি মজুতখানায়। আর গরিবের হয়েছিল মানচিত্র চিবিয়ে খাবার জোগাড়।

এবার বাংলাদেশে শুরু হয়েছে লকডাউনে ঈদ। বিকেল চারটা পর্যন্ত শপিং মল থেকে শুরু করে সব খোলা। চারটার পর কেউ বেরোলে খবর আছে। চারটার পর করোনা নেমে আসে বাংলাদেশে, তাই চারটার পর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর চারটার আগে যত খুশি শপিং করে নেন। দৌড়ঝাঁপ করেন কিন্তু চারটার পর বাইরে গিয়েছেন তো মরেছেন। তাই চারটার পর বাসায় থাকুন, সেফ থাকুন, সুস্থ থাকুন। লকডাউনে পালন করুন।